প্রতিনিধি ৬ ডিসেম্বর ২০২১ , ৮:০৮:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ
নিরাপদ সড়ক ও সারাদেশে শিক্ষার্থীদের জন্য ‘শর্তহীন’ হাফ পাসের প্রজ্ঞাপন জারিসহ ৯ দফা দাবিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও প্রতিবাদী গানে বিক্ষোভ করেছেন একদল শিক্ষার্থী।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এ সময় তারা ‘জ্বালো রে জ্বালো আগুন জ্বালো’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘বিচার বিচার চাই, সড়কে হত্যার বিচার চাই,’ ‘জাস্টিস জাস্টিস উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আইন করে হাফ পাস, দিতে হবে দিয়ে দাও’, ‘প্রজ্ঞাপন করে হাফ পাস দিতে হবে দিয়ে দাও’, ‘নয় দফার সংগ্রাম চলছে চলবে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ইনজামুল হক রামিম বলেন, গত ৮ নভেম্বর থেকে যে হাফ পাসের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে, ২৩ তারিখে তা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে দানা বাঁধে। আমরা নয় দফা দাবি জানিয়েছি। সরকারের কেউ আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো আশ্বাস দেয়নি। বরং আমাদের আন্দোলন নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছে। আমরা তাদের কাছে এটা আশা করিনি।
দাবি আদায়ে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়ে রামিম বলেন, নয় দফা বাস্তবায়ন না করলে আমরা প্রয়োজনে অনশনে যেতে বাধ্য হব। আজকে বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে আমাদের শিক্ষার্থী বন্ধুরা ঢাকায় রামপুরা, বরিশাল ও চট্টগ্রামে আন্দোলন করেছে। বৈরী আবহাওয়ায় আমরা মোমবাতি জ্বালাতে পারি, কিন্তু সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
আন্দোলনকারীদের আরেক সমন্বয়ক মহিদুল হাসান দাউদ বলেন, শর্ত সাপেক্ষে শুধু মহানগরে হাফ পাস নয়, সারাদেশে নিঃশর্ত হাফ পাসের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। নয় দফা দাবির বিষয়ে সরকারের স্পষ্ট অবস্থান জানাতে হবে। অন্যথায় আমাদের আন্দোলন চলবে।
কর্মসূচি থেকে আগামী শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পরিবারগুলো নিয়ে সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়। নয় দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রতিদিন ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি হলো-
১. বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই বিধান সংবিধানে সংযোজন করতে হবে।
২. নৌপরিবহন মন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
৩. ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না।
৪. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।
৫. শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভারব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৬. প্রত্যেক সড়কে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিডব্রেকার দিতে হবে।
৭. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্রছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।
৮. শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের নিতে হবে।
৯. শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।