ভোরের দর্পণ ডেস্ক :
দুইপক্ষের যুদ্ধে সংঘাত কবলিত উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা দেশে ফেরা শুরু করেছে। প্রথম দফায় নিবন্ধন করা ৭০০ জনের মধ্যে ৬৫০ জন বাংলাদেশি দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। দেশটিতে অবস্থিত প্রায় ১৫০০ বাংলাদেশির সকলকেই দেশের ফেরার জন্য আহ্বান করা হচ্ছে।
সুদানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, সুদানের খার্তুম থেকে ৬৫০ জন বাংলাদেশিকে মঙ্গলবার পোর্ট সুদানের দিকে বাসে করে নেওয়া শুরু হয়েছে। সেখান থেকে তাদেরকে সৌদি আরবের জেদ্দায় নিয়ে যাওয়া হবে। পোর্ট সুদান থেকে জাহাজে করে জেদ্দায় পৌছতে ১২ ঘন্টা লাগবে। জেদ্দায় পৌছতে সৌদি আরব সরকার জাহাজ দিয়ে সহযোগিতা করছে। এছাড়া ইন্দোনেশিয়া সরকারও সুদান থেকে বাংলাদেশিদের দেশে ফেরার যাত্রায় সহযোগিতা করছে। সুদান থেকে বাংলাদেশিদের দেশে ফেরা তদারকি দূতাবাসের দুই কর্মকর্তার সঙ্গে জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তারাও যোগ দিয়েছেন। পোর্ট সুদান থেকে জেদ্দায় পৌছনোর জন্য তাদের থাকার জন্য হোটেলের ব্যবস্থা করেছে সৌদি সরকার। জেদ্দা থেকে নিটকতম ফ্লাইটে তাদেরকে দেশের উদ্দেশ্যে পাঠানো হবে।
সুদানের বাংলাদেশিরা এই প্রতিবেদককে বলেন, দেশে ফেরার প্রক্রিয়াটি দূতাবাস চাইলে অনেক মসৃণভাবে করতে পারত কিন্তু তা না করে দূতাবাস বিষয়টি জটিলভাবে শুরু করেছে। দূতাবাস খার্তুমের যে অঞ্চল থেকে বাংলাদেশিদের বাসে চড়ার জন্য অপেক্ষা করতে বলেছিল বাংলাদেশিরা নিরাপত্তার স্বার্থে সেখান থেকে ৫ কিলো মিটার দূরের একটি আন্তজাতিক হোটেল থেকে বাসে চড়ার জন্য দূতাবাসে আবেদন দিয়েছিল। কিন্তু দূতাবাস থেকে বিষয়টি যথাযথভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি এবং প্রথমে সেই হোটেল থেকে বাংলাদেশিদের বাসে তুলতে আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করা হয়। পরবর্তীতে মঙ্গলবার অনেক তদবিরের পর হোটেল থেকে ২৫০ জন বাংলাদেশিকে কয়েক দফায় বাসে তোলা হয়।
সুদান থেকে দেশে ফিরতে আগ্রহীদের তালিকার বাইরে থাকা প্রবাসীদেরও দেশে ফেরার অনুরোধ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ৭০০ জনের বাইরে যারা এখনও রেজিস্ট্রেশন করেননি, রেজিস্ট্রেশন করে দেশে ফিরে আসতে তাদের অনুরোধ করব। ওখানে অনেকে থাকতে চান তবে সেখানে থাকা এখন নিরাপদ নয়। ওখান থেকে চারপাশে মরুভূমি। তাই অন্যত্র যাওয়া খুব কঠিন ব্যাপার। তাই তারা খার্তুমের নম্বরের পাশাপাশি সৌদি আরব, ইথিওপিয়া ও আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দূতাবাসে যোগাযোগ করলে আমরা তাদের ফিরিয়ে আনব। সুদান থেকে দেশে ফেরাদের কর্মসংস্থানের কথা মাথায় রেখে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ডাটাবেস তৈরি করবে। দেশে ফিরে আসাদের জন্য ডাটাবেস প্রস্তুত করা হবে। তারা যেহেতু অসময়ে ফেরত আসছেন, তাই তাদের কর্মস্থানের ব্যবস্থার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এজন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে। খার্তুমে বাংলাদেশ মিশন রাখার বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, এটা সময়ই বলে দেবে। পরের দফায় ১০০ জনও যদি থাকে, একজন বাংলাদেশি থাকা পর্যন্ত মিশন সেখানে কাজ করবে।