দেশজুড়ে

আশুলিয়ায় কারখানার ভেতর নারী ধর্ষণের অভিযোগে আটক-১

  প্রতিনিধি ২৯ ডিসেম্বর ২০২১ , ৬:১৯:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ

মশিউর রহমান, আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধিঃ

ঢাকার আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানায় এক নারী শ্রমিককে রক্ত নেওয়ার কথা বলে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ওই কারখানার এ্যাডমিন অফিসার জাহাঙ্গীর আলমকে (৩২) আটক করেছেন পুলিশ।

বুধবার দুপুরে আশুলিয়া থানার ওসি ইন্টিলিজেন্স জামাল সিকদার ঘটনায় মামলা এবং একজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এরআগে মঙ্গলবার রাতে ভোক্তভোগী নারী পোশাক শ্রমিক আটককৃত জাহাঙ্গীর আলম ও অজ্ঞাতনামা আরো দুই জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।

আটককৃত মোঃ জাহাঙ্গীর আলম কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানাধীন সাকতলা গ্রামের ইয়াকুব আলী পাটোয়ারীর ছেলে। সে আশুলিয়ার বেরন ছয়তলা এলাকার নুরুজ্জামানের ভাড়া বাড়িতে থেকে স্থানীয় ইয়াগি বাংলাদেশ গার্মেন্টস লিমিটেডে এ্যাডমিন অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলো।

ভোক্তভোগীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১৮ ডিসেম্বর জিবীকার তাগিদে ভোক্তভোগী ওই নারী আশুলিয়ার উত্তর বেরন এলাকাস্থিত ইয়াগি বাংলাদেশ গার্মেন্টস লিমিটেড নামের ওই কারখানায় হেলপার হিসেবে চাকুরী নেন। গত ২১শে ডিসেম্বর রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করার জন্য ওই কারখানায় কর্মরত এক নারী রক্ত নেয়। এরপর ২৩শে ডিসেম্বর দুপুরের খাবারের জন্য বিরতি দিলে অন্যান্য শ্রমিকের ন্যায় ভোক্তভোগী নিজেও খেতে যাচ্ছিল। এসময় কারখানার এক নারী এসে আবার রক্ত লাগবে এমন কথা বলে নীচ তলার একটি কক্ষে নিয়ে যায়। কক্ষে আগে থেকেই এ্যাডমিন অফিসার জাহাঙ্গীর আলমসহ আরো দুই জন পুরুষ ছিল। রক্ত নেওয়ার নাম করে এসময় ইনজেকশনের সিরিঞ্জের মাধ্যমে কৌঁশলে অজ্ঞান করার ইনজেকশন পুষ করে ওই নারী। পরে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে সেখানে অবস্থান নেওয়া এ্যাডমিন অফিসার জাহাঙ্গীর আলমসহ অজ্ঞাতনামা আরো এক পুরুষ তাকে ধর্ষণ করে কাটুনের উপর ফেলে রেখে চলে যায়। প্রায় দুই ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরে আসলে ভোক্তভোগী বাসা চলে যান এবং তার বাবা মাকে বিষয়টি খুলে বলেন। পরে তার বাবা-মাকে নিয়ে কারখানায় গেলে নিরাপত্তাকর্মী ও জাহাঙ্গীর আলম তাদের কারখানার ভেতর ঢুকতে না দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে তাড়িয়ে দেয়।
এদিকে, মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি কারখানার অন্যান্য শ্রমিকদের মধ্যে জানাজানি হলে তারা কাজ বন্ধ করে দিয়ে কর্মবিরতির মাধ্যমে বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে কারখানা ছু্টি ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। পরে বুধবার সকালে ভোক্তভোগী নারী আশুলিয়া থানায় এ্যাডমিন অফিসার জাহাঙ্গীর আলমের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরো দুই জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।

এব্যাপারে বক্তব্য নিতে ইয়াগি বাংলাদেশ গার্মেন্টস লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বাবর এর মোঠোফোনে বারবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি খুদে বার্তা পাঠিয়েও তার কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এবিষয়ে আশুলিয়ার থানার ওসি ইন্টিলিজেন্স জামাল সিকদার জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাতে ভোক্তভোগীর অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা নথিভোক্ত করা হয়েছে। এঘটনায় আটক জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ভোক্তভোগী ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিক্যালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ভর্তি করা হয়েছে।

 

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by