ঢাকা

আশুলিয়ায় স্ত্রী-সন্তান হত্যার পর স্বামীর আত্মাহত্যা

  প্রতিনিধি ৭ নভেম্বর ২০২১ , ৫:৩৫:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ

মশিউর রহমান, আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি:

ঢাকার আশুলিয়ায় পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী রোজিনা আক্তার (২৫) ও ৯ বছরের মেয়ে সুমাইয়া আক্তারকে শ্বাসরোধে হত্যার পর সবুর আলী (২৮) নামের এক রিকশা চালক আত্মহত্যা করেছেন। জমি বন্ধক ও স্ত্রীর আয়ের টাকায় কিনে দেওয়া অটোরিকশা চুরি যাওয়ার কারণে স্বামীর সাথে ঝগড়ার ফলে মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবী নিহতদের স্বজনদের।

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আশুলিয়ার পূর্ব জামগড়ার রূপায়ন ১নাম্বার গেট এলাকার ফজর আলীর মালিকানাধীন আধাপাকা বাড়ির একটি কক্ষ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করেন পুলিশ।

নিহত সবুর আলী কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি থানাধীন চরগরক ফুলবাগি মন্ডল গ্রামের মুজাম মিয়ার ছেলে। সে আশুলিয়ার ওই বাড়িতে ভাড়া থেকে অটোরিকশা চালাতেন। তার স্ত্রী রোজিনা আক্তার একটি পোশাক কারখানা চাতুরি করতো ও শিশু সুমাইয়া স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল।

নিহতের স্বজনরা জানায়, বৃহস্পতিবার রাতের কোন এক সময় এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। দুইদিন ধরে তাদের কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে সন্দেহ হয় ওই বাড়ির অন্যান্য ভাড়াটিয়াদের। পরে তাদের পাশের কক্ষের বাঁশের ছিলিংকের ফাঁক দিয়ে সবুরকে ঝুঁলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে বিষয়টি আশুলিয়া থানায় জানানো হয়।

নিহতের বোন রাশেদা বেগম জানান, জমি বন্ধকের এবং স্ত্রীর টাকা দিয়ে একটি অটোরিকশা কিনে সবুর। গেল বুধবার নতুন রিকশা নিয়ে প্রথম কাজের উদ্দেশ্যে বের হয়। কিন্তু অটোরিকশাটি ওই দিনই চুরি হয়ে যায়। চুরির বিষয়টা ভয়ে স্ত্রীকে জানায়নি সবুর। তবে পরদিন বৃহস্পতিবার বিষয়টি তার স্ত্রী টের পেয়ে গেলে এনিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়।
মনে হচ্ছে রিকশা চুরি যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এই ঘটনা ঘটেছে।

নিহতের ভাই শহীদ জানান, তার ভাই সবুর রিকশা চালাতেন। জমি বন্ধক রেখে গেল ৩ই নভেম্বর একটি রিকশা কিনেন। কিন্তু ওই রিকশা চুরি হয়ে যায়। তবে তার ভাই রিকশা চুরি যাওয়ার বিষয়টি তাকে ফোনে জানিয়েছিলেন এবং তার ভাবী বিষয়টি যাতে জানতে না পারেন এটাও বলে দিয়েছিলেন। এরপর শুক্রবার থেকে বারবার তার ফোনে চেষ্টা করেও না পেয়ে শনিবার রাতে বোন রাশেদাকে নিয়ে তার বাসায় আসেন। কিন্তু ভেতর থেকে দড়জা বন্ধ থাকায় অনেক ডাকাডাকি করেও ভেতর থেকে কোন সারাশব্দ না পেয়ে দড়জার নিচ দিয়ে উঁকি দেন শহীদ। পরে তার ভাইকে ঝুঁলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশে খবর দেন। রিকশা চুরি যাওয়ার ঘটনা নিয়েই সম্ভবত তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল আর তার জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে।

এবিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল মামুন কবির জানান, ‘৯৯৯’ এ কল পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। পরে ঘরের দড়জা ভেঙ্গে ভেতর থেকে মরদেহ উদ্ধার করেন। কি কারণে এঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা। তবে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জের ধরেই স্ত্রী ও মেয়েকে প্রথমে শ্বাসরোধে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেছে সবুর। ঘটনাটি দুইদিন আগের হতে পারে। মরদেহগুলো ময়ণা তদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি আরো নিশ্চিত হওয়া যাবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by