বাংলাদেশ

ইজি বাইকে চট্টগ্রামের মুজাহিদের সফলতার গল্প

  প্রতিনিধি ৫ ডিসেম্বর ২০২১ , ৬:০১:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

মো: মুজাহিদ, চট্রগ্রামের বাশখালী উপজেলার বাসিন্দা। বিগত প্রায় ৩ বছর যাবত ব্যাটারি চালিত ইজি বাইক চালায়। ইজি বাইক চালিয়েই সে তার সংসার জীবন অতিবাহিত করে কিন্তু বাস্তবতা হলো মানসিক ও সংসারিক ভাবে তিনি খুবই কস্টে ও অবহেলিত ছিলো। অল্প গতির গাড়ী কত টুকুইবা তার ইনকামের ও চাহিদা পূরনে সক্ষম হবে। প্রায় সময় যাত্রীদের দুর্ব্যবহার ও ভাড়া নিয়ে হট্রগোল হয়।

রাতে জরুরী প্রয়োজনে রোগী হাসপাতালে নেওয়ার বিরম্বনা, ছাত্র ছাত্রীদের দ্রুত পরীক্ষার হলে পৌছাতে না পারার মত অনেক গুরুত্বপুর্ন মুহুর্তে ইজি বাইক কোন সফল ভুমিকা রাখতে পারে না। তাছাড়া কয়েক মাস পর পর ব্যাটারি সমস্যা, টায়ার নষ্ট, একটু জোরে চালাতে গেলে গাড়ী উল্টে গিয়ে সামনের গ্লাস ভেঙে যায়।

এমনি ভাবেই নানামূখী সমস্যার মধ্যে দিয়ে দিন কাটছিল মুজাহিদের। এমনি একদিন রাতে তার প্রতিবেশি এক চাচী হটাত অসুস্থ হলে প্রতিবেশিরা তার কাছে আসে রুগিকে হাসপাতালে নেবার জন্য। মুজাহিদ তার গাড়ীতে করে রুগিকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার জন্য বের হয় কিন্তু গাড়ীতে পর্যাপ্ত চার্য না থাকায় গাড়ী ধীর গতিতে চলছে, যেখানে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়ার জন্য প্রতিবেশিরা তাড়া দিচ্ছে।

 

সেই মূহুর্তে তার মানসিক অবস্থা এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়ায় যা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। এক পর্যায়ে তার গাড়ী বন্ধ হয়ে যায় ও জোর করে গাড়ী চালনায় ব্যাটারিও নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিবেশিরা তাড়াতাড়ি দৌরে গিয়ে স্টান্ড থেকে থ্রীহুইলার গাড়ী নিয়ে আসে এবং রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি সেখানে বেকার ও তাচ্ছিল্য ভরে থেকে যায়। এমন বিড়ম্বনার পরে তার ইজি বাইক থেকে মন উঠে যায়, পাশাপাশি সংসারের অশান্তি তো আছেই। মনে মনে সে স্বপ্ন দেখে ইজি বাইক বাদ দিয়ে গ্যাস চালিত থ্রীহুইলার গাড়ীর, কিন্তু দামের কথা চিন্তা করে থ্রীহুইলার গাড়ী কেনার স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যায়।

একদিন মুজাহিদ বাশখালীতে গাড়ী চালাবার সময় সেখানে সেলস মার্কেটিং এর কাজে আসা বাজাজ কোম্পানীর প্রতিনিধীর সাথে পরিচয় হয়। মিয়া বাজার থেকে জলদি স্টান্ড অল্প রাস্তা, তাই সেখানে যাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে মুজাহিদের ইজি বাইকে উঠে কোম্পানীর প্রতিনিধী। পথিমধ্যে তার সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে মুজাহিদ ইজি বাইক নিয়ে তার ভোগান্তির কথা বলে। তার এই দুঃখের কথা শুনে কোম্পানীর প্রতিনিধী তাকে বাজাজ আর ই এলপিজি কেনার পরামর্শ দেয়। কেন বাজাজ আর ই এলপিজি ইজি বাইক থেকে গুনে ও মানে সেরা সেটার বৃতান্ত বুঝিয়ে বলে।

 

তার কথা শুনে মুজাহিদের থ্রীহুইলার গাড়ী কেনার স্বপ্ন এবং অসামর্থের কথা বলে। বাজাজ প্রতিনীধি মুজাহিদের থ্রীহুইলার গাড়ী কেনার আগ্রহের কথা শুনে, তাকে বানার যে তাদের মত মানুষের কথা চিন্তা করে বাজাজ আর ই এলপিজি গাড়ী কিস্তিতে দিচ্ছে সে বিষয়ে বলে। বাজাজ গাড়ীর সুবিধা, সাধ্যের মধ্যে কিস্তি, সার্ভিস, দ্রুত গতি, বেশি ট্রিপ, বেশি ইনকাম সব কিছু বিস্তারিত বলে। মুজাহিদের এত দিনের লালিত স্বপ্ন সত্যি হবার কথা শুনে, খুশিতে তার চোখে পানি চলে আসে।

 

মুজাহিদের থ্রীহুইলার গাড়ী

মুজাহিদ আর দেরি না করে, তার ইজি বাইক টি বিক্রি করে দিয়ে আর জমানো টাকা নিয়ে, বাজাজ কোম্পানির প্রতিনীধির সাথে তার শোরুমে যোগাযোগ করে। কিস্তিতে গাড়ী কেনার সব নিয়ম কানুন মেনে একটি বাজাজ আর ই এলপিজি গাড়ী তার স্বপ্নের গাড়ী নিয়ে বাড়ী ফিরে।

 

এখন মুজাহিদ তার গাড়ী চালিয়ে, ইনাকাম নিয়ে অনেক খুশি। তিনি বাশখালী থেকে অনেক সময় কক্সবাজারেও ট্রিপ মারে এবং দ্রুত গতিতে বেশি ট্রিপ এ বেশি ইনকামে তার সংসার সচ্ছলতার মুখ দেখতে শুরু করেছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by