আন্তর্জাতিক

করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্স ভেঙে দিচ্ছে হোয়াইট হাউস

  প্রতিনিধি ৬ মে ২০২০ , ১২:৫২:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণঘাতী নতুন করোনাভাইরাস মোকাবেলার রূপরেখা ঠিক করতে গঠিত হোয়াইট হাউসের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

মঙ্গলবার আরিজোনায় একটি মাস্ক উৎপাদন কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি একথা জানান।

অর্থনীতি সচলে লকডাউন শিথিলের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ এ প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে, ট্রাম্প এ আশঙ্কার কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্স ভেঙে দেয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও।

বিভিন্ন মেডিকেল ইনস্টিটিউট, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নরদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করা এ টাস্ক ফোর্সের নেতৃত্বেও ছিলেন পেন্স। মে’র শেষে বা জুনের শুরুতে টাস্ক ফোর্স ভেঙে দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে, বলেছেন তিনি। 

আরিজোনার কারখানা পরিদর্শনে যাওয়া ট্রাম্পকে সাংবাদিকরা করোনাভাইরাস মোকাবেলায় তার প্রশাসনের ‘মিশন সম্পন্ন’ কিনা এমন প্রশ্ন করলে রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্ট বলেন, “না, সম্পন্ন হয়নি। মিশন সম্পন্ন হবে, যখন এটা (ভাইরাস) শেষ হবে।”

সমালোচকরা বলছেন, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতার তাগিদে ট্রাম্প মার্কিন নাগরিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকিকে উপেক্ষা করেই অর্থনীতি ফের সচলের পথে হাঁটছেন।

“মাইক পেন্স ও টাস্ক ফোর্স অসাধারণ কাজ করেছে। কিন্তু আমরা এখন খানিকটা ভিন্নভাবে ব্যাপারটা দেখছি। সম্ভবত আমরা এর জন্য নতুন কোনো কাঠামো গঠন করবো,” বলেছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রে এখন গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার মানুষের শরীরে কোভিড-১৯ শনাক্ত হচ্ছে; প্রতি ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে গড়ে দুই হাজারের বেশি মানুষ।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যবসা বাণিজ্য খুলে দেওয়া হলে সংক্রমণ আরও বাড়বে বলেই তারা আশঙ্কা করছেন।

দেশটিতে এরই মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে বলে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হালনাগাদ তথ্যে জানানো হয়েছে; মৃতের সংখ্যা পেরিয়ে গেছে ৭২ হাজার।

“(লকডাউন শিথিলের কারণে) কিছু মানুষ কী বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে? হ্যাঁ হবে। কিন্তু আমাদেরকে দেশকে ফের খুলে দিতে হবে, এবং তা শিগগিরই করতে হবে,” বলেছেন ট্রাম্প। 

বিবিসি বলছে, নতুন করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহর নিউ ইয়র্ক, নিউ অরলেন্স ও ডেট্রয়েটে আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও লস এঞ্জেলস, ওয়াশিংটন ডিসি ও শিকাগোতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।

টেক্সাস, আইওয়া, মিনেসোটা, টেনেসি, কানসাস, নেব্রাস্কা ও ইন্ডিয়ানার মতো যেসব অঙ্গরাজ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের উপর বিধিনিষেধ শিথিল হয়েছে সেখানেও আক্রান্ত-মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে দেখা যাচ্ছে।

জুনের শুরুতে কোভিড-১৯ এ যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে দেশটির ফেডারেল ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি’র (ফেমা) এক প্রতিবেদনে ধারণা দেওয়া হয়েছে।

হোয়াইট হাউস এ প্রতিবেদনকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ অ্যাখ্যা দিলেও রোববার ট্রাম্প তার পূর্বাভাসে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। দুই সপ্তাহ আগেও তার মূল্যায়নে এ সংখ্যা ৬০ হাজারের নিচে ছিল।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by