ঢাকা

কাপাসিয়ায় মানবেতর জীবন কাটছে আড়াই হাজার কেজি স্কুল শিক্ষক-কর্মচারির

  প্রতিনিধি ২ ডিসেম্বর ২০২০ , ৩:০৭:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ

কাপাসিয়ায় মানবেতর জীবন কাটছে আড়াই হাজার কেজি স্কুল শিক্ষক-কর্মচারির

তপন বিশ্বাস, কাপাসিয়া (গাজীপুর): করোনা ভাইরাস জনিত সংকটকালে স্কুল বন্ধ থাকায় বেতনভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটছে কাপাসিয়ায় কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষক কর্মচারির। দীর্ঘ কয়েক মাস যাবৎ ধার দেনা ও দোকানে বাকি করতে করতে এখন সে রাস্তাও বন্ধ হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে অনেকে জন প্রতিনিধিদের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোনো সরকারি সাহায্য সহযোগিতা না পেয়ে চরম দুর্ভোগে জীবন কাটাচ্ছেন।

কাপাসিয়া কিন্ডারগার্টেন স্কুল এসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৩৪ টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে প্রায় দুই হাজার শিক্ষক ও পাঁচশত কর্মচারি রয়েছেন। শিক্ষকদের বেশিরভাগই স্কুলের স্বল্প বেতন ভাতায় সংসার চালাতে না পেরে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে বাড়তি উপার্জনের মাধ্যমে পরিবার পরিজনের চাহিদা মিটাতেন। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের কারণে গত মার্চ মাস থেকে এ সব স্কুল বন্ধ থাকায় তাদের বেতনভাতাসহ বাড়তি উপার্জনের পথও বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি অধিকাংশ স্কুলের শিক্ষক কর্মচারিদের জানুয়ারি ও ফেব্রæয়ারি মাসের বেতনভাতাও স্কুলের কাছে পাওনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশিদের কাছ থেকে ধার দেনা করে ও দোকানে বাকি বাজার সদাই করে সংসার চালাতে গিয়ে তারা নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, উচ্চ শিক্ষা শেষে কোনো চাকরী না পেয়ে বাধ্য হয়ে তার মতো অনেকেই কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষকতার পেশা বেছে নেন। সম্মানজনক এ পেশায় থাকার কারণে বর্তমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে কষ্টে সংসার চালাচ্ছেন তারা। চাইলেই তারা এখন যে কোনো কাজ করতে পারছেন না এবং কারো কাছে হাত পাততেও পারছেন না। এমনকি পরিচিত জনদের কাছ থেকে এখন ধার কর্জও পাচ্ছেন না। তারা চাকরি করেন এই অজুহাতে সরকারি সাহায্য সহযোগিতার তালিকায় জন প্রতিনিধিরা তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করছেন না। অথচ স্ত্রী ও ছেলে মেয়েরা যখন তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় নানা চাহিদার কথা বলে, তখন তা পূরণ করতে পারছেন না। এতটা দুঃসময় জীবনে আর কখনো আসেনি বলেও জানান তিনি ।

এ বিষযে কাপাসিয়া কিন্ডারগার্টেন স্কুল এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাহাবউদ্দিন জানান, বর্তমান সংকটকালীন সময়ে কেজি স্কুল শিক্ষক কর্মচারিদের দুর্দশা লাঘবে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে তারা লিখিত আবেদন জানিয়ে আসছেন। এ সংকট মোকাবেলায় সরকার যেহেতু নানা ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিচ্ছে, তাই দেশের সাধারণ নাগরিক হিসেবে তারাও প্রণোদনার দাবি করছেন। একান্তই যদি প্রণোদনা দেওয়া সম্ভব না হয়, তবে অন্তত স্বল্প মেয়াদী সুদমুক্ত ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

Powered by