ঢাকা

কালিয়াকৈরে চিকিৎসকদের অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগ

  প্রতিনিধি ৬ জুলাই ২০২০ , ৮:২১:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের অবহেলায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে এক মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার দুপুরে উপজেলার রশিদপুর এলাকায় তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। নিহত হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার রশিদপুর এলাকার জাকির হোসেনের স্ত্রী লাইজু আক্তার (৪০)। তিনি তিন সন্তানের জননী ছিলেন।
এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, লাইজু আক্তারের প্রসব ব্যথা শুরু হলে পরিবারের লোকজন গত শনিবার বেলা ১২টার দিকে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে নিয়ে যায়। পরে দুপুর ১টার দিকে ওই হাসপাতালেই তার সিজার করা হয়। ওই হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. কুহু মুৎসদ্দী, অজ্ঞান করার ডা. অঞ্জনাসহ কয়েকজনে তার অপারেশন করেন। এ সময় তার এক ছেলে সন্তান হয়। সব ঠিকঠাক থাকলে তাকে ওই হাসপাতালের বেডে পাঠান চিকিৎসকরা। এর পর পরই ওই চিকিৎসকরা হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। কিন্তু তার রক্তক্ষরণ হয়ে বিকেলে ওই মায়ের অবস্থার অবনতি হয়। পরিবারের অভিযোগ, অতিরিক্তি রক্ত বের হচ্ছে, জরুরি চিকিৎসক বলছেন পেশারও লো। কিন্তু ওই ডাক্তাররাও নেই। এ অবস্থায় চলতে থাকে কয়েক ঘন্টা। নানা গড়িমসি শেষে জরুরি চিকিৎসক রাত সাড়ে ৮টার দিকে রেফার্ড করে। হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্সও দেয়নি। গাড়ি যোগাড় করতেও বেশ সময় লেগেছে। অনেক কষ্টে ভালো হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। রাত ১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। কোনো পরিক্ষা-নিরিক্ষা ছাড়াই অপারেশন করা হয়। চিকিৎসকদের অবহেলা ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ওই মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলেও তাদের অভিযোগ।
অভিযুক্ত গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কুহু মুৎসদ্দী জানান, তার অবস্থা খুব খারাপ ছিল। অন্য কোথায় নেওয়ার মতো অবস্থা ছিল না। তাই ইমার্জেন্সি অপারেশন করেছি। ছেলে সন্তান জন্ম হয়। মা-সন্তান দুজনই ভালো ছিল। এরপর ডিউটি শেষে আমি চলে যাই। পরে তার অবস্থা খারাপ হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রেফার্ড করা হয়। অজ্ঞান করার চিকিৎসক ডা. অঞ্জনা জানান, মা ও বাচ্চাকে বাঁচানোর জন্য জরুরি অপারেশান করা হয়েছিল। বিকেল পর্যন্ত তো মা-বাচ্চা দুজনই ভালো ছিল। এরপর প্রসারের নল দিয়ে রক্ত আসে ও পেশারও লো হলে তাকে রেফার্ড করা হয়। পরে শুনেছি তিনি মারা গেছেন।
অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. প্রবীর কুমার সরকার জানান, ওই রোগীর আগেও নরমালে আরো দুটি সন্তান হয়েছে। এটি ছিল তিন নাম্বার। কিন্তু তিনি কোনো ডাক্তার দেখাননি। খুব খারাপ অবস্থায় এখানে এলে গাইনি বিশেষজ্ঞ অপারেশন করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রেফার্ড করা হয়। আর চালক করোনায় পজেটিভ থাকায় এ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করা যায়নি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by