প্রতিনিধি ২৫ জানুয়ারি ২০২১ , ৩:৪৭:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ
এস,এম,আশরাফুল হক রুবেল, কুড়িগ্রাম :
মুজিব শতবর্ষে দেশের সবচেয়ে দারিদ্রতম জেলা কুড়িগ্রামে জমিসহ ঘর পেলেন ১ হাজার ৫শ ৪৯ ভূমি ও গৃহহীন পরিবার। ঘর পেয়েছেন রানা প্লাজায় নিহত রুবিনার পরিবারও। যুগের পর যুগ সরকারী খাস জমি ও অন্যের জায়গায় বসবাস করা পরিবারগুলো প্রধানন্ত্রীর এ উপহার পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েছেন। যারা জীবনেও নিজের জমি ও আধাপাকা ঘরে থাকার স্বপ্ন দেখেননি কখনও তারা এখন এসবের মালিক। প্রতিবছর কুড়িগ্রামে বন্যা ও নদী ভাঙনে নি:স্ব হয়ে পড়ছেন প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার পরিবার। বসতভিটা ও ঘর হারানো এসব পরিবারের ঠাঁই হয়েছিল বাঁধ, সরকারী খাস জমি ও অন্যের ভিটার ঝুপড়ী ঘরে। এভাবেই বছরের পর বছর রোদ, বৃষ্টি ও শীত কষ্টে জীবন কাটছিল তাদের। হঠাৎ করেই প্রধানমন্ত্রীর দেয়া পাকা ঘর ও জমির মালিক হয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েছেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর এ উপহার থেকে বাদ যাননি রানা প্লাজায় নিহত কুড়িগ্রামের রাজারহাটের ছিনাই ইউনিয়নের সংসারের একমাত্র কর্মক্ষম নারী রুবিনার অসহায় পরিবারও।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের রানা প্লাজা ধসে নিহত রুবিনা ছেলে হৃদয় জানায়, আমি ছোট থাকতে আমার মা রানা প্লাজায় নিহত হয়েছে। আমার বাবা অন্যত্র বিয়ে করে সেখানে সংসার করছে। আমি আমার নানীর কাছে বড় হয়েছি। আমার এক বড় বোন ছিল তাকেও নানী বড় করে বিয়ে দিয়েছেন। আমাদের কোন জায়গা জমি নেই। প্রধান মন্ত্রী জমিসহ আমাদের ঘর দিয়েছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
রানা প্লাজায় নিহত রুবিনার মা ছাবিজন জানান, দুইটি ছোট বাচ্চা আমার কাছে রেখে আমার মেয়ে রুবিনা রানা প্লাজায় চাকরী করতো। সেখানে এক বছর চাকরী করার পর রানা প্লাজা ধ্বসে তার মৃত্যু হয়। পরে তার লাশ পর্যন্ত আমি পাইনি। এরপর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বারের সহযোগীতা করলে প্রধানমন্ত্রী ৪ লাখ টাকা দেয়। সেই টাকা দিয়ে রুবিনার ছেলে মেয়েদের বড় করে মেয়েটাকে বিয়ে দিয়েছি। ছেলেটাকে লেখাপড়া করাচ্ছি। এখন প্রধানমন্ত্রী জমিসহ ঘর দিল। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করছি।
এদিকে জেলার ৯ উপজেলায় ঘর ও জমি পাওয়া পরিবারগুলো জানান, আমাদের মাথা গোঁজার কোন ঠাই ছিলনা। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ঘর দিয়ে মাথা গোজার ঠাই করে দিয়েছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দেয়াসহ তার দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন।
এব্যাপারে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরে তাসনিন জানান, রাজারহাটে রানা প্লাজায় নিহত রুবিনার পরিবারসহ ৭০ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে আধাপাকা ঘরসহ ২ শতক করে জমি দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এমন উদ্যোগে অংশীদার হতে পেরে প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করছেন তিনি।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর জেলার ৯ উপজেলায় ১ হাজার ৫শ ৪৯ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে নিজ নিজ উপজেলা থেকে আধাপাকা ঘর ও জমি হস্তান্তর করা হয়েছে। যারা বাদ পড়েছেন পরবর্তীতে তারাও ঘর পাবেন বলে জানান তিনি।