দেশজুড়ে

কেএনএফ আতঙ্কে বন্ধ রুমা থানচি উপজেলার গণপরিবহন

  প্রতিনিধি ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৩:৪৭:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

কেএনএফ আতঙ্কে বন্ধ রুমা থানচি উপজেলার গণপরিবহন

আবারো পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ এর কারণে নতুন করে সংকট শুরু হয়েছে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে।গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি রুমা উপজেলায় কেএনএফ সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যদের গুলিতে ২নং রুমা সদর ইউপির ৯নং ওয়ার্ড রিঝুক পাড়া এলাকায় এক যুবক আহত হয় এর প্রেক্ষিতে গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি নাগরিক সমাজের ব্যানারে কেএনএফ এর বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয় এসময় কয়েকটি ঘরবাড়ি সহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।

এদিকে উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট(কেএনএফ) তাদের ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংগঠনের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন ফ্লেমিং অনির্দিষ্টকালের জন্য রুমা,থানচি, রোয়াংছড়ি উপজেলায় চলাচলকারী গণপরিবহন ধর্মঘট পালনের নির্দেশ দেয়।

এদিকে আজ সকালে রুমা উপজেলায় বাসের লাইনম্যানের দায়িত্বে থাকা লুপ্রু মার্মা সকাল ৭টার দিকে সদরঘাট থেকে বাজারে যাচ্ছিলেন । এসময় পলি পাড়া কবরস্থান এলাকা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় কেএনএফ সশস্ত্র সদস্যরা।এসময় তাকে মারধর করে ছেড়ে দেয় পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নিয়ে আশা হয়।বান্দরবান বাস মালিক সমিতির অফিস সহকারী মিলন দাস জানান সকালে আমাদের একজন লাইনম্যান কে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে।

বান্দরবান স্টেশন হতে সকালে যথারীতি বাসের টিকেট বিক্রি করলেও রুমায় যাতায়াতের নিরাপত্তার কারণে আবার যাত্রীদের সব টিকেট ফেরত দেয়া হয় তিনি জানান এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনকে অবগত করেছি।রুমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান শৈবং মার্মা জানান আজ সকালে বম অধ্যুষিত সদরঘাট, কলেজ এলাকা, পলি পাড়া, কবর স্থান, বেথেল ঘাট এলাকায় কেএনএফ সন্ত্রাসীরা জনসাধারণ কে আতঙ্কগ্রস্ত করার জন্য ফাঁকা গুলিবর্ষণ করেছে বলে শুনেছি।

তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে,অনেকে ভয়ে দোকানপাট খুলে নি।ইউপি চেয়ারম্যান আরো বলেন দীর্ঘদিন ধরে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন পাড়ায় এসে অস্ত্রের মুখে গবাদি পশু নিয়ে যাওয়া,চাঁদা আদায়,ক্যাং এর ভান্তেদের হুমকি প্রদান সহ সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে।

ইতিমধ্যে সচেতন মহল তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করছে।তিনি জানান তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কারণে আজকে তারা বান্দরবান থেকে রুমা,থানচি আশা সকল গণপরিবহনের উপর ধর্মঘটের নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে।এদিকে সাম্প্রতিক কেএনএফ এর কর্মকাণ্ডের বিষয়ে রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৌয়দ মাহবুবুল হক জানান আজকে সকালে একদল সন্ত্রাসী বাসের লাইনম্যান কে তুলে নিয়ে গিয়ে আহত করার ঘটনা শুনেছি এতে বান্দরবান ও রুমা উপজেলায় বাস চলাচল করেনি বলে শুনেছি সন্ত্রাসীরা কয়েকটি এলাকায় তজনসাধারণ কে আতঙ্কগ্রস্ত করার মতো কর্মকাণ্ড চালিয়েছে।

তিনি বলেন ইতিমধ্যে জননিরাপত্তার জন্য উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বিজিবি,সেনাবাহিনী, এবং পর্যাপ্ত পুলিশের টহল টিম কাজ করছে।বম স্যোশাল কাউন্সিল এর নেতৃবৃন্দসহ বিষয়টি উর্ধতনদের জানানো হয়েছে।এদিকে হঠাৎ করে আজ সকাল থেকে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় বিপাকে পড়েছে পর্যটক সহ সাধারণ যাত্রীরা,বেশি ভাড়া দিয়ে মোটর সাইকেল, ল্যাগুনা দিয়ে গন্তব্যে ফিরছেন জেলা সদরে আশা অনেক স্থানীয় জনসাধারণ।

স্থানীয়দের দেয়া তথ্য মতে সকালে বান্দরবান জেলা সদর হতে ছেড়ে যাওয়া পর্যটকবাহী কয়েকটি চাঁদের গাড়ি আটকে দিয়েছে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যরা,এসময় রুমা ও থানচি উপজেলা হতেও কোন গণপরিবহন ও পর্যটকবাহী গাড়ি আসতে দেয়া হয়নি।

প্রসঙ্গত পার্বত্য জেলা বান্দরবানে দীর্ঘদিনের সহিংসতার গত বছরের ৫ই নভেম্বর বান্দরবানের রুমায় নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির প্রথম মুখোমুখি বৈঠকের অনুষ্ঠিত হয়। পার্বত্য বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা কে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সাথে আলোচনা ও সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের পর ওই এলাকাগুলোতে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।

তবে সাম্প্রতিক আবারো কয়েকটি ঘটনায় নতুন করে কেএনএফ এর কর্মকাণ্ডে শঙ্কা তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে।

Powered by