খুলনা

কেশবপুরে সন্ত্রাসীদের পশুহাট দখলের চেষ্টা, প্রতিহত করলো গ্রামবাসী

  প্রতিনিধি ১৮ এপ্রিল ২০২১ , ৫:৫৮:২১ প্রিন্ট সংস্করণ

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি :

যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাতবাড়িয়া পশুহাট দখলের প্রচেষ্টা প্রতিহত করেছে এলাকাবাসী। এ সময় বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ১১টি মোটরসাইকেল ও তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
আটকরা হলো, কেশবপুর পৌরসভার রামচন্দ্রপুর গ্রামের লিটন গাজী (৩৫), সাতবাড়িয়া গ্রামের সাবেক মেম্বর মোহাম্মদ আলী ও মাসুম বিল্লাহ।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, স্থানীয় গরু-ছাগল পালনকারীদের সুবিধার্থে ২০১৮ সালে সাতবাড়িয়া বাজারের পূর্ব প্রান্তে একটি পশুহাট প্রতিষ্ঠা করা হয়। হাট বসানোর সরকারি শর্ত মেনে স্থানীয় বাসিন্দারা সরকারের নামে ২১ শতক জমি দান করেন। পরবর্তীতে আরও দেড় বিঘা জমি বর্গা নিয়ে হাটটি পরিচালিত হয়ে আসছে। সপ্তাহের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার এখানে হাট বসে।

এ হাটে আশপাশের ২৫-৩০ গ্রামের মানুষের গরু-ছাগল বেচাকেনা করেন। প্রতিহাটে শতাধিক গরু ও ৬০ থেকে ৭০টি ছাগল বিক্রি হয়। হাটটি এখনো সরকারি ইজারাভুক্ত না হওয়ায় জমিদাতা-স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্যদের নিয়ে গঠিত হাট কমিটি পশুহাটটি পরিচালনা করে আসছিলেন। এরইমধ্যে ২০১৯ সালে হাটটি সরকারি ইজারাভুক্ত ডাকে আসার জন্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কাছে কাগজপত্র জমা দেয়া হয়। তবে এখনো সরকারি ইজারা দেওয়া হয়নি, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

এরইমধ্যে গত ৮ এপ্রিল কেশবপুর পৌরসভার রামচন্দ্রপুর এলাকার লিটন গাজী ২৮ হাজার ৭০০ টাকায় সাতবাড়িয়া বাজারের পশ্চিম প্রান্তের হাটচান্নির (কাঁচা তরকারি ও মাছ বাজার) ইজারা পান। সাতবাড়িয়া কাঁচা বাজারের সাথে পশু হাটের কোন সম্পর্ক না থাকার পরও গত ১৪ এপ্রিল সকাল ১০টায় লিটন গাজীকে ম্যানেজ করে স্থানীয় একটি কুচক্রি দল ৩০-৩৫ জন যুবক নিয়ে আধা কিলোমিটার দূরের গরুহাট দখলের চেষ্টা করে। সেই থেকে বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিলো।

এরইমধ্যে, শনিবার (১৭ মার্চ) এলাকাবাসী এ ঘটনার পরিত্রাণ পেতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের কর্মসূচির আয়োজন করে। এ খবর পেয়ে সকাল থেকে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা জড়ো হতে শুরু করে সাতবাড়িয়ায়। এতে এলাকাবাসী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী একত্রিত হয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশাংকা তৈরি হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় তিনজনকে আটক করে। এছাড়াও সন্ত্রাসীদের ফেলে যাওয়া ১১টি মোটরসাইকেল জব্দ করে।

সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিয়ার রহমান দফাদার বলেন, স্থানীয় জাহানপুর গ্রামের বিএনপি সমর্থিত সাবেক মেম্বার আশরাফ আলীর ছেলে সাবেক যুবদলের ক্যাডার আমজাদ হোসেন ব্যবসায়ীক সূত্রে আওয়ামী লীগের অনুপ্রবেশ করেছে। ওই অনুপ্রবেশকারীর পরিকল্পনায় স্থানীয় কয়েকজন মিলে বহিরাগত সন্ত্রাসী জড়ো করে হাট দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে, স্থানীয় জনগণ প্রতিরোধ করেছে, আগামীতেও প্রতিরোধ করবে। এই সকল অনুপ্রবেশকারীরা অর্থের লোভে এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ঠ করছে, আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।

সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামছুদ্দীন দফাদার বলেন, ‘বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান, আমি ওই পশুহাটের সভাপতি তারপরও আমাদের উপস্থিতিতে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা অবৈধভাবে দখলবাজি করতে এসেছে এটা হতাশাজনক, এটা মেনে নেওয়া যাইনা। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি।

কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, হাট দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের আশংকা করে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করি। পরে ঘটনাস্থল থেকে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ফেলে রাখা ১১টি রেজিস্ট্রেশন বিহিন মোটরসাইকেল জব্দ করি এবং ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by