রংপুর

খানসামায় সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে

  প্রতিনিধি ১৫ মার্চ ২০২১ , ৭:১৭:৩১ প্রিন্ট সংস্করণ

খানসামা (দিনাজপুর) :

দিনাজপুরের খানসামায় সবধরনের সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এবার রবিশষ্যের চাষাবাদে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সূর্যমুখী চাষ।

এ অঞ্চলের মাটির গুনাগুন, আবহাওয়া ও জলবায়ু সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য উপযোগী হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে উপজেলায় এর পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় ১২০ জন কৃষক ১২০ বিঘা জমিতে এই ফুলের চাষ করছে। এতে সূর্যমুখী ফুল চাষ অপার সম্ভাবনা থাকায় কৃৃৃৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। সরেজমিনে উপজেলার দুহশুহ, নেউলা, হোসেনপুর, ভান্ডারদহ গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, ধান, ভুট্টা, গমের আবাদের সাথে এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে সূর্যমুখী চাষ।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সূর্যমুখীর আবাদ বাড়াতে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ১২০ বিঘা জমিতে ১২০ জন কৃষককে বীজ ও প্রযুক্তিসহ কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় এর আবাদ শুরু করেছেন।

 

উপজেলার নেউলা গ্রামের কৃষক সাফিয়ার রহমান জানান, টেলিভিশনে দেখে এ ফুল চাষে আগ্রহ সৃষ্টি হয়। পরে কৃষি অফিসের সহায়তায় বীজ পেয়ে ১ বিঘা জমিতে চাষ শুরু করেছি। সার, সেচ ও কীটনাশক মিলিয়ে বিঘাপ্রতি জমিতে সূর্যমুখী চাষে খরচ হবে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। যদি প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হয় তাহলে খরচ বাদে বিঘা প্রতি আয় হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের মধ্যেই এর ফলন পাওয়া যাবে।

ভান্ডারদহ গ্রামের নুরল ইসলাম জানান, ধান-পাট চাষে প্রচুর পরিশ্রম এবং খরচ হয় কিন্তু সূর্যমুখী চাষে খরচ কম লাভ বেশি। যে কারণে আগামীতে অনেক কৃষকই সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকবে।

সূর্যমুখীর কান্ড জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার ও বিক্রি করা যাবে। যা থেকে বাড়তি একটা লাভ মিলবে। তাছাড়া এটি চাষে তেমন কোন ঝামেলা নেই। শুধুমাত্র দুটি সেচ দিলে এবং ফুলগুলো একটু পর্যবেক্ষণ করলেই হলো।

সূর্যমুখী চাষি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সফিউল আযম চৌধুরী লায়ন জানান, উপজেলায় প্রথমবারের মত সূর্যমুখীর চাষ হচ্ছে। এর আগে কখনও বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ হয়নি। অনেকেই সৌন্দর্যবর্ধনকারী ফুল হিসেবে বাড়ির আঙিনায় এটা লাগিয়ে থাকতো। কৃষি বিভাগের প্রদর্শণী এই প্লটের মাধ্যমে স্থানীয়দের মাঝে এটি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। অনেক কৃষকই এটার প্রতি প্রবল আগ্রহ দেখাচ্ছে। আগামীতে স্থানীয়ভাবে এর ব্যাপকতা অনেক বাড়বে এবং কৃষকরাও সূর্যমুখী চাষে লাভবান হবেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ.ম. জাহেদুল ইসলাম ও কেরামত আলী জানান, বাংলাদেশে ভোজ্য তেলের প্রচুর ঘাটতি রয়েছে। প্রতি বছর ১৪ থেকে ২০ লক্ষ মেট্রিক টন ভোজ্য তেল দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। যে কারণে আমাদের দেশের প্রচুর পরিমাণ মুদ্রা বিদেশে চলে যায়।

বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার সেটি নিরসনে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে এর চাষ শুরু করেছে। আরডিএস-২৭৫ জাতের সূর্যমুখী ফুল এখানে চাষ হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়তই প্লটগুলো পর্যবেক্ষণ করছি ও বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় বলেন, কৃষকদের কাছ থেকে কোম্পানি সরাসরি এর বীজ কিনে নিবেন। কৃষকদের সঙ্গে কোম্পানির প্রতিনিধিদের আন্ত:সম্পর্ক তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।

যে কারণে কৃষকরা এটি কোথায় বিক্রি করবে সেটি নিয়ে চিন্তার কোন কারণ থাকবে না। আগামী বছরই এই এলাকায় হাজার বিঘা জমিতে এর চাষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by