রংপুর

গাইবান্ধায় সুদের টাকা ফেরত দিতে না পারায় ব্যবসায়ীর নির্যাতনে বাস চালকের আত্মহত্যা

  প্রতিনিধি ২৭ এপ্রিল ২০২১ , ৫:৩৮:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

গাইবান্ধায় সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে এক বাস চালক আত্নহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে সদরের খোলাহাটি ইউনিয়নের রথেরবাজার এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে বাসচালক কোব্বাছ আলীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহতের স্ত্রী ও সন্তানদের অভিযোগ, তাদের অজান্তে রথেরবাজার এলাকার চিহ্নিত দাদন ব্যবসায়ী সরোয়ার খান সোনা একই এলাকার বাস চালক কোব্বাছকে ত্রিশ হাজার টাকা দেয়। টাকা পরিশোধ করতে না পারায় গত ২১ এপ্রিল কোব্বাছকে মারপিট করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন দাদন ব্যবসায়ী সরোয়ার খান সোনা। এব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বিচার দিয়ে নিরাশ হয়ে সোমবার লজ্জায়-অপমানে কোব্বাছ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

এঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজার রহমান জানান, এর আগে সদরের নারায়নপুরে নিজ বাড়িতে দাদনের টাকার জন্য ব্যবসায়ী হাসান আলী নামে একজনকে টানা একমাস আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানার বিরুদ্ধে। গত ১০ এপ্রিল মাসুদের বাড়ি থেকে হাসানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানার বাড়ি থেকে হাসান আলীর মরদেহ উদ্ধারের পর অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য, দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানা ও তার সহযোগীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে গাইবান্ধা।

হাসানের স্ত্রী বিথী বেগম অভিযোগ করেন, গত ৫ মার্চ পাওনা টাকার জন্য হাসান আলীকে উঠিয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায় মাসুদ রানা। এরপর তারা থানায় অভিযোগ করলে সদর থানা পুলিশ হাসান আলীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে পুলিশের উপস্থিতিতে হাসানের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামা লিখে নেয় মাসুদ রানা। এরপর হাসানকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর না করে হাসানকে আবারও অভিযুক্ত মাসুদ রানার জিম্মায় দেয় পুলিশ।

শেষ পর্যন্ত গত ১০ এপ্রিল মাসুদ রানার বাড়ি থেকে হাসানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় বিথী বেগম বাদী হয়ে মাসুদ রানা, তার সহযোগী রুমেন হক ও খলিলুর রহমান বাবুকে আসামি করে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে গাফেলতির অভিযোগ এনে থানায় মামলা দেন। ঘটনার দিনই মাসুদ রানা গ্রেফতার হয়।

এদিকে, হাসানকে মাসুদ রানার জিম্মায় ছেড়ে দেয়ার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাফুজার রহমান জড়িত দাবি করে তার প্রত্যাহার ও বিচার দাবি করে লাগাতার কর্মসূচি পালন করছে হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চ।

মঞ্চের সংগঠক, জেলা বারের সাধারণ সম্পাদক ও গাইবান্ধা নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, গাইবান্ধায় ক্রমেই দাদনব্যবসায়ীদের অত্যাচার বাড়ছে।

এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি বৃদ্ধি করে সাধারণ মানুষকে দাদন ব্যবসায়ীদের কবল থেকে বাঁচানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যবসায়ী হাসানকে দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানার জিম্মায় ছেড়ে দেয়ার ঘটনা প্রমাণ করে পুলিশ ও দাদন ব্যবসায়ীর মধ্যে যোগসাজশ আছে।

তিনি বলেন, হাসান হত্যার পর পুলিশের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে দায়িত্বহীনতা প্রমাণের পরও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার ঘটনা দুঃখজনক।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by