ঢাকা

গোপালগঞ্জে আগামী পৌর নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগে অনিশ্চিয়তায় রয়েছেন বর্ধিত এলাকার ২০ হাজার ভোটার

  প্রতিনিধি ২ নভেম্বর ২০২০ , ৩:৫৪:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:

গোপালগঞ্জ পৌরসভার বর্ধিত এলাকার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার ভোটার নতুন গেজেট অনুযায়ী আগামী পৌর নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চান। চলতি বছরের গত ৬ জানুয়ারি ২০২০ খ্রি. গোপালগঞ্জ পৌরসভার সীমানা সম্প্রসারণ করে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় শহরের পার্শ্ববর্তী লতিফপুর, গোবরা, বোড়াশী, হরিদাশপুর, দূর্গাপুর ও রঘুনাথপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু অংশ। সম্প্রসারিত এলাকার ওয়ার্ড বিভক্তি করার জন্য গত ১৯ জানুয়ারি ২০২০ খ্রি. গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)-কে সহকারী ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়। বর্তমানে এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।

পৌর এলাকা বর্ধিত করায় বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের বার বার নির্বাচিত মাননীয় সংসদ সদস্য ড. শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি-কে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন গোপালগঞ্জের সাধারণ মানুষ ও পৌর পরিষদ। প্রকাশিত গেজেটে জানা যায়, পৌরসভার পূর্বের আয়তন ছিলো ১৩.৮২ বর্গকিলোমিটার, পরে নতুন করে এলাকা সম্প্রসারণ করায় বর্তমানে এ পৌরসভার আয়তন দাঁড়ায় ৩০.৭০ বর্গকিলোমিটার। আগে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড থাকলেও এখন তা বর্ধিত হয়ে ১৫টি ওয়ার্ডে রূপান্তরিত হয়েছে।

পূর্বে পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ছিলো প্রায় ৩৮ হাজার, বর্তমানে নতুন গেজেট অনুযায়ী ভোটার সংখ্যা প্রায় ৫৮ হাজার। পৌর এলাকা সম্প্রসারিত হওয়ায় উন্নত নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাবেন পৌরবাসী এটাই স্বাভাবিক। ইতোমধ্যে বর্ধিত এলাকার লোকজন পৌর সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে শুরু করেছেন। পৌরসভা কর্তৃক ধার্যকৃত বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স, ভ্যাট, পানির বিল পরিশোধ করে আসছেন তারা। কিন্তু সাধারণ মানুষের অভিযোগ, পৌর এলাকার ট্যাক্স, ভ্যাট, পানির বিল নিয়মিত পরিশোধ করলেও এখন পর্যন্ত তারা পৌরসভার কাঙ্খিত ভোটার হতে পারছেন না। এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিস ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন অনেকে। এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জ পৌরসভার সীমানা ঘেঁষে গড়ে ওঠা হেমাঙ্গন আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মোঃ সিরাজ কাজী, চর মানিকদাহ গ্রামের বাসুমিয়া, বেদগ্রামের মীর মোসারেফ হোসেন সহ বর্ধিত বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, আমাদের ইউনিয়নের যে অংশ নতুন গেজেট অনুযায়ী পৌর এলাকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, সেখানকার মানুষ পৌর ট্যাক্স দিলেও ভোটার হতে পারছেন না। আগামী পৌর নির্বাচনে আমরা যেন নতুন ভোটার হিসেবে আমাদের মূল্যবান ভোট প্রদান করতে পারি এটাই আমাদের দাবি।

এ বিষয়ে পৌর মেয়র কাজী লিয়াকত আলী বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই গোপালগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে। ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত গোপালগঞ্জ পৌরসভাকে আধুনিক ও মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে আমি ও আমার কাউন্সিলরগণ নিরলসভাবে কাজ করে চলেছি।

আধুনিক পৌরসভা গড়তে কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য গোপালগঞ্জ নিউমার্কেট, অত্যাধুনিক কমিউনিটি সেন্টার, পৌর সুপার মার্কেট, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান সম্প্রসারণ, পৌর কার্যালয়ে নবনির্মিত ভবনে নতুন সম্মেলন কক্ষের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন যা মাননীয় সংসদ সদস্য কর্তৃক উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে, পৌরবাসীকে সুপেয় ও নিরাপদ পানি সরবরাহ করতে কাজুলিয়া থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহের কাজ ও জেলা শহরের বড় বাজারকে আধুনিকায়ন করার প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে।

এছাড়াও প্রতিটি পাড়া মহল্লায় ড্রেন ও রাস্তাঘাটের উন্নয়নের জন্য আমরা কাজ করেছি। তিনি আরো বলেন, সময়ের সাথে সাথে গোপালগঞ্জে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন গেজেটে গোপালগঞ্জ পৌর এলাকা বর্ধিত করা হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ গোপালগঞ্জ পৌরসভায় হোল্ডিং ট্যাক্স, ভ্যাট ও পানির বিল দিয়ে আসছে। এলাকার জনগণ আগামী পৌর নির্বাচনে তাদের পছন্দের মেয়র প্রার্থীকে ভোট দিয়ে চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছি।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by