সিলেট

তীব্র তাপদাহে অতিষ্ট সিলেটের জনজীবন

  প্রতিনিধি ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৭:০১:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

বাপ্পা মৈত্র, সিলেট : শরতের তাপদাহ আর তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সিলেট নগরের জনজীবন। সূর্যের খর তাপে সাধারণ মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। কয়েক দিন বৃষ্টি না হওয়া আর প্রচন্ড রোদে ঘর থেকে বের হতে পারছে না শ্রমিক, দিন মজুরসহ খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষগুলো। কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সিলেটের আকাশ বাতাস। সামান্য স্বস্তির ও একটু শীতল পরিবেশের জন্য ছুটছে ছায়াতলে। আর অতিরিক্ত গরমে একটু স্বস্তির জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকির শঙ্কা সত্তে¡ও বিভিন্ন শরবত ও পানীয়ের দোকানে ভিড় করছেন তারা। সকালের ঝলমলে রোদ ঘড়ির কাটার সাথে পাল্লা দিয়ে ঝড়াতে থাকে প্রখর তাপ। সময় বাড়ার সাথে সাথেই বাড়তে থাকে অসহ্য গরমের তীব্রতা। তবে নাগরিক জীবনে মানুষকে এই অসহ্য গরম উপেক্ষা করেই ছুটতে হচ্ছে নিজ নিজ কর্মস্থলে। আর কাজের উদ্দেশ্যে বাইরে বের হলেই তীব্র দাবদাহে শরীর থেকে পানির পরিমাণ কমতে থাকে। খানিক হাটাচলাতেই যেন তৃষ্ণায় বুক ফেটে যায়। তাই তীব্র গরমেসৃষ্ট পিপাসায় কর্মব্যস্ত নগরবাসীর তৃষ্ণা মেটানোর সুযোগে রাস্তাার পাশে ভাসমান অবস্থায় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরণের শরবত, কোমল পানীয় ও মৌসুমি ফলের ভাসমান দোকান। লোক সমাগম বেশি এমন জায়গায় আনারস, ডাব, শসা, গাজর ইত্যাদি নানান ফল নিয়ে ভীড় করছেন বিক্রেতারা। আর পথচারীরাও ভাপসা গরমে একটু শান্তি ও প্রশান্তির আশায় ভিড় করছেন এইসব ভ্রাম্যমাণ শরবতের দোকানগুলোতে। পাঁচ থেকে দশ টাকা দিয়ে এক গøাস শরবত পান করে আবার ছুটছেন নিজ নিজ গন্তব্যে। আর এই সুযোগে মৌসুমী ব্যাবসায়ীরা অল্প পুঁজি খাটিয়ে কামিয়ে নিচ্ছেন দ্বিগুণ টাকা। তবে এ ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়েই ময়লা ও দূষিত উপাদান দিয়েই শরবত তৈরি করছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে ফুটপাতের এই সব কোমলপানীয় পানে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। তবে দূষিত উপাদান দিয়ে এই সব কোমল পানীয় তৈরির অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করলেন বিক্রেতারা। সিলেট নগরের মদিনামার্কেট, ওসমানী মেডিকেল রোড, রিকাবিবাজার, লামারাজার পয়েন্ট, বন্দরবাজার,জিন্দাবাজার, জিতুমিয়ার পয়েন্ট, শেখঘাট, তালতলা পয়েন্টে দেখা যায় ভাসমান শরবত বিক্রেতারা খুব ব্যস্ত সময় পার করছেন ।এ সময় লেবুর শরবত পানরত আবস্থায় প্রাইভেট কোম্পানিতে মার্কেটিং এ কাজ করা যুবক শামীম হোসেন বলেন, এই দুই দিনের প্রচন্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছি, কিন্তু কি করবো চাকরি করতে হয় বলে অসুস্থতা ও অসহ্য গরম উপেক্ষা করেও মার্কেটে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। তাই শরীরটা একটু ঠান্ডা রাখতেই রাস্তার পাশের খোলা দোকান থেকে শরবত খাচ্ছি। বিশ্বনাথ থেকে সিলেটে কাজে আসা নাবিল আহমদ কাজিরবাজার ব্রীজের মুখে দাঁড়িয়ে শরবত পান শেষে বলেন, তীব্র গরমের হাত থেকে বাঁচতে ঝুঁকি জানার পরও এসব খাচ্ছি। মহামারি করোনার আতঙ্ক মনে রয়েছে। তিনি আরও জানান, সচারাচর তিনি এইসব খোলা শরবত খান না। কিন্তু এবার গরমের যে অবস্থা তাতে করে রাস্তায় বের হয়ে তৃষ্ণা মেটাতে বাধ্য হয়ে এসব খাচ্ছি। আজকের তাপ বাতাসে আপেক্ষায় জলীয়বাষ্প ও আর্দ্রতার মাত্রা বেশি থাকার কারণে মানুষ অতিরিক্ত পরিমানে ঘামছে, অসহনীয় গরমের কারণে সিলেট বিভিন্ন স্থানে ছায়ায় অনেকেই বসে বিশ্রাম দেখা গেছে। এক নগরের জিন্দারাজরে এক রিকশা চালক জানান, তীব্র গরম তার উপর আবার রাস্তায় জ্যাম দুটো মিলে খুব খারাপ অবস্থা। বাহিরে বের হলেই ঘামে কাপড় ভিজে যাচ্ছে, অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। আর প্রচুর পরিমাণ পানির পিপাসা লাগছে। ফলে কাজে মনোযোগ দিতে পারছি না। আবহাওয়া অফিস জানায়, রোববার পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়তির দিকে থাকলেও সোমবার রাত থেকে সিলেটে বৃষ্টিপাত বাড়বে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সোমবার থেকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, সিলেটে আজ বিকাল ৩টা পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by