আন্তর্জাতিক

পাক সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে আফগানদের সংঘর্ষ

  প্রতিনিধি ১৩ আগস্ট ২০২১ , ৬:৫৯:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

পাকিস্তান-আফগানিস্তানের সীমান্ত শহর চামান-স্পিন বলদাকে আফগান শরণার্থীদের সঙ্গে সংঘাত হয়েছে পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী রেঞ্জার্স কর্মীদের। স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোরের দিকে এই সংঘর্ষ হয় বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

রেঞ্জার্সের কর্মকর্তা আরিফ কাকার বলেছেন, ৫৬ বছর বয়সী এক আফগান শরণার্থী চোরাপথে আফগানিস্তানে ঢোকার জন্য শুক্রবার সকালের দিকে এসেছিলেন। অতিরিক্ত গরমের কারণে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান।

মৃত্যুর পর তার লাশ নিয়ে একদল আফগান শরণার্থী রেঞ্জার্স দফতরে আসেন এবং সীমান্ত গেট খুলে দেওয়ার দাবি জানান। কর্মকর্তারা সেই দাবিতে সাড়া না দেওয়ায় দফতরের সামনেই বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এ সময় তারা দফতর ও কর্মীদের লক্ষ্য করে পাথর, ইট পাটকেল ছুড়তে থাকেন।

পরিস্থিতি শান্ত করতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জ শুরু করার পর অবশ্য পিছু হটেন বিক্ষোভকারীরা। এ ঘটনায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন কাকার।

চামান স্পিন বালদাক সীমান্তের এক পাশে রয়েছে আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের রাজধানী কান্দাহার এবং অপর পাশে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের শহর চামান ও পেশোয়ার প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা।

এই সীমান্তপথকে আফগান অর্থনীতি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান ধমনী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ একদিকে এর মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক যেমন চালু রাখা হয়, তেমনি এই পথ ব্যবহার করেই বেলুচিস্তানের সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে বহির্বিশ্বের সঙ্গে নৌপথে পণ্য আমদানি-রফতানি করে থাকে আফগানিস্তান।

পাকিস্তানের যে কয়েকটি এলাকায় আফগান শরণার্থীরা আশ্রয় নিয়েছেন, সেসবের মধ্যে অন্যতম এই চামান স্পিন বালদাক সীমান্ত এলাকা। সম্প্রতি এই সীমান্তপথের দখল নিয়েছে তালেবানগোষ্ঠী।

দখল নেওয়ার পর পাকিস্তান সরকারের কাছে তারা দাবি করেছিল- দেশটির সরকার যেন আফগান নাগরিকদের জন্য এই সীমান্তপথে ভিসামুক্ত চলাচলের অনুমতি দেয়। পাকিস্তান সরকার সেই দাবি নাকচ করে দেওয়ায় গত ৬ আগস্ট থেকে তালেবানগোষ্ঠী এই সীমান্ত পথ বন্ধ করে দেয়।

১৯৯৬ সালে তালেবান যখন প্রথমবার আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছিল, সে সময় ইসলামাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল তৎকালীন তালেবান সরকারের। তবে ২০০১ সালে টুইন টাওয়ারে হামলার পর থেকে সেই সম্পর্কে শীতলতা আসতে থাকে।

পশ্চিমের অনেক দেশ যদিও অভিযোগ করে আসছে, পাকিস্তান তালেবানগোষ্ঠীকে মদত দেওয়া অব্যাহত রেখেছে। তবে ইসলামাবাদ বরাবরই এই অভিযোগ নাকচ করে আসছে।

সূত্র : আল জাজিরা

Powered by