বাংলাদেশ

পাপিয়াকে কাশিমপুর থেকে কুমিল্লা কারাগারে স্থানান্তর

  প্রতিনিধি ৪ জুলাই ২০২৩ , ১:২৩:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক :

গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে এ নারী হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগে যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার স্থানান্তর করা হয়েছে।

সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে একটি প্রিজন ভ্যানে তাকে কুমিল্লা পাঠানো হয়।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) ওবায়দুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার কারণে কারাগার অভ্যন্তরে শৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ কারাগারে বন্দি শামীমা নুর পাপিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।

কারাসূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৪০ মাস ধরে বন্দি আছেন পাপিয়া। ২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে জেলবিধি অনুযায়ী পাপিয়াকে ‘রাইটার’ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তিনি রুনা লায়লা নামে এক হাজতিকে সম্প্রতি নির্যাতন করে তার কাছ থেকে টাকা-পয়সা লুট করে নেন। এমন অভিযোগে রুনার ছোট ভাই জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন। পরে দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিকেলে একটি প্রিজন ভ্যানে করে পাপিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার রুনা লায়লা গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার কড়িহাতা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ে এবং মৃত একেএম মাহমুদুল হকের স্ত্রী। তিনি গত ১৬ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। জামিনে মুক্তি পেয়ে বর্তমানে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

জানা গেছে, নথি চুরির একটি মামলায় শিক্ষানবিশ আইনজীবী রুনা লায়লাকে ১৬ জুন কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আনা হয়। কারাগারের সাধারণ ওয়ার্ডে নেয়ার পর রুনার দেহ তল্লাশি করে কর্তব্যরত মেট্রন সাত হাজার চার শ’ টাকা পান। ওই টাকা ছিনিয়ে নেয়ার জন্য পাপিয়া ও তার সহযোগী কয়েদিরা ১৯ জুন রুনার ওপর অমানবিক নির্যাতন করেন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন রুনা।

নির্যাতনের শিকার এই নারী অভিযোগ করেন, ‘কারগারের ভেতরে রাতে তারা লাঠি ও কম্বল চাপা দিয়ে আমাকে মারতে চেয়েছিল। পরে তারা জেলহাজতের আসামিদের দিয়ে গণপিটুনি দেয়। একপর্যায়ে আমি প্রস্রাব-পায়খানা করে দিই। পরে পাপিয়া এসে আমাকে মারতে মারতে উলঙ্গ করে দেয়। আমার প্রস্রাব-পায়খানার দুর্গন্ধ বের হলে পাপিয়া ধুপখানায় নিয়ে সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মারধর করে। কিছুক্ষণ পর আবার কিছু জামা-কাপড় দেয়। এরপর ফাতেমা ও পাপিয়া আমার হাত-পা বেঁধে লাঠিচার্জ করে। পানি খেতে চাইলে আমাকে নর্দমার পানি খেতে দেয়। আমাকে মহিলা পুলিশও মারধর করে। মহিলা পুলিশের মুখে মুখোশ ছিল।’

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম বলেন, রুনার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by