বাংলাদেশ

‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিক্ষায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে’

  প্রতিনিধি ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৮:৫২:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিক্ষায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে’

সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিক্ষায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ক্লাস ওয়ান থেকে ফাইভ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষার মাধ্যমে শিক্ষা খাতকে আরও উন্নত করা হবে।’

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রেডিসন ব্লুতে শিশু অধিকার-ভিত্তিক সংস্থা এডুকো বাংলাদেশের দিনব্যাপী আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আশরাফ আলী খান খসরু। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন এডুকো কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুল হামিদ।

বাংলাদেশে শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষা বলয় তৈরি করতে গত ২৫ বছর ধরে কাজ করছে এডুকো বাংলাদেশ। দীর্ঘ এ ২৫ বছরের সাফল্যের নানা গল্প তুলে ধরতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তারা এডুকোর ২৫ বছরের অর্জিত মাইলফলকগুলো তুলে ধরে বলেন, ‘এডুকো বাংলাদেশে ১৯৯৯ সাল থেকে শিশুদের সামগ্রিক বিকাশের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে এডুকো বাংলাদেশ ১০টি জেলায় ১৫টি সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে, যা সরকারের ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনেও সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।’

অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শিশু শিক্ষা, সুরক্ষা ও শিশুশ্রম নিরসনে সরকারি সহযোগিতা সংস্থা হিসেবে বেসরকারি সংস্থা এডুকো বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে শিশুদের উন্নয়নে আরও জোরালো ভূমিকা রাখার জন্য এডুকো বাংলাদেশকে আহ্বান জানান তিনি।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই বর্তমানে যদি শিশুদের পেছনে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করা হয়, তাহলে এর চারগুণের বেশি ফলাফল আমরা পেতে পারি। এছাড়া শিশুকাল থেকেই তাদের সঠিক শিক্ষা ও যথাযথ গাইডলাইন দিতে হবে। নয়তো তারা আমাদের দেশের জন্য বারডেন হয়ে দাঁড়াবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন। শেখ হাসিনা শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলাদা করে ভাবেন। জাতির জনকও শিশুদের জন্য কাজ করে গেছেন। তবে তিনি তার কাজ পূর্ণ করতে পারেননি, এর আগেই তাকে ঘাতকের বুলেটে প্রাণ হারাতে হয়। এডুকো যখন এদেশে কাজ শুরু করে (১৯৯৯ সাল), তখন ৫৪ শতাংশ নারী শিশুরা স্কুলে যেত না, পড়াশোনা করত না। বর্তমানে ৯৮.০২ শতাংশ শিশু স্কুলে যাচ্ছে। এডুকো বাংলাদেশ শিশুদের শিক্ষা, সুরক্ষা, মানসিক ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য যে কাজগুলো করছে, তা সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় সরকারের যে অঙ্গীকার, তা বাস্তবায়নে বেসরকারি সংস্থাগুলোর সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রয়োজন।’

এসময় গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘শিশুদের উন্নয়নে শিক্ষার বিকল্প নেই। তিনি শিশুদের মানসম্মত শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপসহ এডুকো বাংলাদেশের বর্তমান কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার জন্য উৎসাহিত করেন।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এডুকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুল হামিদ। তিনি তার বক্তব্যে বিগত ২৫ বছরে বাংলাদেশের শিশুদের সুরক্ষা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে এডুকো বাংলাদেশের অর্জন ও সফলতার উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো তুলে ধরে আগামী দিনগুলোতে আরও নিবিড়ভাবে সরকারের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে ১৯৯২ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি এক হাজার শিশুর মধ্যে মৃত্যু হতো ১২১ জনের। ২০১৯ সালে এ সংখ্যা ৪০ জনে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ, ২৭ বছরে শিশু মৃত্যুহার প্রায় ৬৭ শতাংশ কমেছে। ১৯৯২ সালে প্রতি সাতজন শিশুর মধ্যে একজন তাদের জন্মের পাঁচ বছরের মধ্যে মারা যাচ্ছিল। ২০১৯ সালে এ পরিমাণ কমে প্রতি দশজনে শূন্য দশমিক চারজন হয়েছে। যা একটি বিশাল অর্জন।

আলোচনাসভা শেষে ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে উপস্থিত অতিথিদের নিয়ে কেক কাটা হয় এবং পরিশেষে একটি মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনে মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ করা হয়।

Powered by