দেশজুড়ে

বান্দরবানে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনী

  প্রতিনিধি ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৪:১৫:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ

বান্দরবানে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনী

সেনাবাহিনী আছে বলে আমরা নিরাপদে আছি,এতোদিন আমরা একটা আতংকের মধ্যে দিন পার করেছি,অনেক পরিবার ভয়ে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে,গৃহপালিত পশু রেখে পালিয়েগেছে। সেনাবাহিনী আমাদের গ্রামে অবস্থান করার কারনে এখন নিশ্চিতে রাতে ঘুমাতে পারি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোয়াংছড়ি উপজেলার খানতাম পাড়া এলাকার স্থানীয় বসবাসকারী ষাটোর্ধ একজন মহিলা এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন। 

এছাড়াও একই এলাকায় বসবাসকারী একজন স্কুল শিক্ষিকা জানালেন কেএনএফ আতংকে অনেকদিন বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ,ছাত্র,ছাত্রী দের লেখাপড়ায় অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।তিনি জানালেন অনেক গ্রামবাসী নিজ এলাকার বসত ভিটা ছেড়ে এখনো নিজেদের জুমের ফসল বিক্রি করে রোয়াংছড়ি সদরে বাসা ভাড়া করে থাকছেন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা গ্রামে থাকার কারনে অনেক পরিবার ফিরতে শুরু করেছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে রোয়াংছড়ি উপজেলার পরিস্থিতির বিষয়ে রোয়াংছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মেহ্লা অং জানান পূর্বের চেয়ে এখন এলাকার নিরাপত্তা অনেকটা উন্নত হয়েছে,সেনাবাহিনীর সদস্য গন গ্রামের মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আছে,তবে দীর্ঘদিন স্কুলগুলো বন্ধ থাকাতে শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেকটা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে গ্রামের শিক্ষার্থীরা।

সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ স্বজাতি বম,সহ তাদের বিরোধী সংগঠন,সাধারণ গ্রামবাসীদের হত্যা,চাঁদাবাজি,গুম,অপহরণ সহ বেশ কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে আতংকে গ্রাম ছেড়েছেন অনেক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবার।

পাহাড়ী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ এর আতঙ্কে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ বান্দরবানের রোয়াংছড়িসহ দূর্গম বিভিন্ন পাড়ার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এতে শিক্ষাবঞ্চিত হচ্ছে দূর্গম বিভিন্ন পাড়ার ৫ শতাধিক শিশু। শুধু তাই নয় অপহরন আর চাঁদাবাজির আতঙ্কে ব্যাহত হচ্ছে সড়ক সংস্কারসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড। তবে সেনাবাহিনীর তৎপরতায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে পাড়ার মানুষের মাঝে। 

বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন দূর্গম এলাকা এখন অনেকটা জনশূন্য। কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ এর অত্যাচার নির্যাতনের ভয়ে ঘরবাড়ী ছেড়ে অনত্র অবস্থান করছে বিভিন্ন পাড়ার মানুষ। এছাড়াও কেএনএফ এর আতঙ্কে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ক্যপ্লাং পাড়া, খামতাংপাড়া, পাইক্ষ্যং পাড়াসহ বেশ কয়েকটি পাড়ার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। 

এরফলে শিক্ষা বঞ্চিত হচ্ছে দূর্গম এলাকার ৫ শতাধিক শিশু। শুধু তাই নয় অপহরন আর চাঁদাবাজির কারনে রুমা ও রোয়াংছড়ি সড়কে ব্যাহত হচ্ছে পরিবহন চলাচল সড়ক সংস্কারসহ সরকারী বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড। 

এরপ্রভাব পড়েছে জেলার পর্যটন খাতেও। কেএনএফ এর ভয়ে এদিকে যেমন আতঙ্কে আছে গ্রামবাসী অন্যদিকে ব্যঘাত ঘটছে শিক্ষা কার্যক্রমসহ স্থানীয় বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে।

তবে দূর্গম এলাকায় সেনা সদস্যদের নিরাপত্তা জোরদার করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে এলাকাবাসীর মাঝে।

তবে দূর্গম এলাকায় মানুষের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন কর্মকান্ড চলমান রাখতে এবং পার্বত্য বান্দরবানে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী সবসময়ই কাজ করে যাচ্ছে বলে জানায় সেনাবাহিনীর বান্দরবান জোন কমান্ডার লেফট্যানেন্ট কর্ণেল মাহামুদুল হাসান পিএসসি।

উল্লেখ্য ২০২২ সালে নাথান বমের নেতৃত্বে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে আত্মপ্রকাশ করে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by