খুলনা

মহম্মদপুরে নিমিষেই মধুমতী গর্ভে বিলিন হচ্ছে বাড়ি ঘর, ঝুঁকিতে কয়েকটি গ্রাম

  প্রতিনিধি ১০ আগস্ট ২০২০ , ৭:৪১:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ

রাসেল মিয়া, মহম্মদপুর (মাগুরা) : মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা কয়েকটি গ্রামে মধুমতী নদীতে বড় ধরণের ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। নিমিষেই সর্বস্ব কেড়ে নিচ্ছে সর্বনাশা মধুমতীর ভাঙ্গন। নদী ভাঙ্গনের তিব্রতা এতটাই বেশি হয়েছে যে প্রতি ঘন্টার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সমতল ভুমি। নদী কুলে বসবাসরত দিনমুজুর মানুষের বুক ফাটা আর্তচিৎকারে মাঝে মধ্যেই বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। সহায় সম্বল হারিয়ে ভুমিহীন এসব মানুষ হতাশাগ্রস্থ হয়ে খোলা আকাশের নিচে ঠাই নিয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে এসব চিত্র। উপজেলা সদরের চরপাচুড়িয়া গ্রামে নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে কয়েকটি পরিবার রাস্তার পাশে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। উপজেলার কাশিপুর, ধুলজুড়ি গোপালনগর চরপাচুড়িয়া হরেকৃষ্ণপুর সহ কয়েকটি গ্রামেও ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। অতিমাত্রায় পানি বৃদ্ধির কারণে আপতত একটু কম ভাঙ্গন দেখা দিলেও পানি কমে যাবার সাথে সাথেই ভাঙ্গনের তিব্রতা বাড়বে বলে অনেকে ধারণা করেছেন। চর-পাচুড়িয়া গ্রামের সহায় সম্বল হারানো দিন মুজুর নেপুর শেখ (৫৫) বলেন, এই নদী আমাদের সহায় সম্বল সব কেড়ে নিয়েছে শুধু ঘর দুইটা বাঁচাতে পেরেছি। কোথায় যাবো কোথায় থাকবো সে হিসেব জানা নেই। ক্ষতিগ্রস্থ সামাদ শেখ (৭০) ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন নদী ভাঙ্গন সহ আগত এলাকার মানুষের দিকে। অন্য ক্ষতি গ্রস্থ বয়বৃদ্ধ মুজিবার মোল্যা (৬৫) বলেন, “ গাংগের কুলি জন্ম আমাগের। এই গাং আমার একবার না, কয়েকবার বাড়ি ঘর ওর পেটে ঢুহোইছে, এহন তো আমি আর পারিনেরে বাপ! ঘরখান সরানুর মতন কাইদাও তো আমার নাই”। মাথা কাপাতে কাপাতে আবেগাপ্লুত হয়ে মুজিবার মোল্যা অশ্রæ দুটি সিক্ত হয়ে পড়ে। কাশিপুর গ্রামের বাসিন্দা কুতুব উদ্দিন জানান, নদীর মধ্যে বাড়ির অর্ধেক জমি বিলিন হয়েছে বাকিটুকু যে কোনও সময় ভেঙ্গে যেতে পারে। হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের অনেকেই বলেছেন, গত বছর অনেকে সর্বস্ব হারিয়ে রাস্তায় নেমে গেছে। কিছু অংশে জিও ব্যাগ দিয়ে বাধ রক্ষার চেষ্টা করলেও এটা প্রয়োজনের তুলনায় খুব কম। এবছর যদি এখনই জিও ব্যাগ না দেওয়া হয় তাহলে অনেক পরিবারকে ভিটে মাটি হারিয়ে রাস্তায় দাড়াতে হবে। মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় আমরা খুব দ্রæত পরিদর্শনে যাবো এবং ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে সহায়তা প্রদান করা হবে। এছাড়া যারা ভুমিহীন হয়ে পড়বে তাদেরকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। মহম্মদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু আব্দুল্লাহেল কাফি বলেন, ভাঙ্গন কবলিত এলাকার সকলকে সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে। বিশেষ করে রাতে যদি ভাঙ্গন সৃষ্টি হয় তাহলে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। যত দ্রæত পারি ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাড়াবো এবং স্থায়ী সমাধানের জন্য মাগুরা-২ আসনের এমপি মহোদয়ের সাথে কথা বলে ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ও বøক দিয়ে বাধ নির্মান করা যায় কিনা সে ব্যপারে কথা বলবো।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by