আইন-আদালত

মামলায় ‘তথ্যগত ভুল’, রন ও দিপু সিকদারকে অব্যাহতি

  প্রতিনিধি ১৩ আগস্ট ২০২১ , ৫:৪৩:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ

মামলায় ‘তথ্যগত ভুল’, রন ও দিপু সিকদারকে অব্যাহতি। ফাইল ছবি

নির্যাতন ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার ও তাঁর ভাই দিপু হক সিকদারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী তদন্ত কর্মকর্তার দাখিলকৃত চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে দুই আসামিকে অব্যাহতি দেন।

তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক মো. রিপন উদ্দিন গত ২৯ জুলাই ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। সেখানে বলা হয়, উভয় পক্ষই আদালতের বাইরে বিষয়টি নিষ্পত্তি করেছেন। এ ছাড়া এই মামলা দায়েরে তথ্য গত ভুল রয়েছে।

অব্যাহতির আবেদন শুনানির সময় মামলার বাদী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেছেন আসামিদের অব্যাহতি দেওয়া হলে তাদের কোন আপত্তি নেই।

প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত উভয়ই গত ৮ জুলাই একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে যে, তারা আদালতের বাইরে বিষয়টি নিষ্পত্তি করেছেন। এই চুক্তির একটি অনুলিপি তদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, মামলাটিতে ‘তথ্যগত ভুল’ আছে। কারণ, আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যালিস্টিক রিপোর্টে দেখা যায়, যে অস্ত্র থেকে গুলি ছোড়ার কথা বলা হয়েছিল সেটির সঙ্গে মিলছে না।

চুক্তির অনুলিপি ও ব্যালিস্টিক রিপোর্ট পাওয়ার পর তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের সামনে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে মামলার অভিযোগ থেকে দুই ভাইকে মুক্তি দেওয়ার আবেদন করেন।

এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর রন হককে গ্রেপ্তার করা হয়। বাবার মৃত্যুর পর সেদিন তিনি দুবাই থেকে ফিরে আসেন। একই দিন সিএমএম আদালতে হাজির করা হলে তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়।

গত বছরের ১ মে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া ও অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনকে নির্যাতন, হত্যা চেষ্টার অভিযোগে ব্যাংকের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সিরাজুল ইসলাম সিকদার গ্রুপের রন ও দিপুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় বলা হয়, ৫০০ কোটি টাকার ঋণের জন্য বন্ধক রাখা দুই ভাইয়ের সম্পত্তির মূল্য বাড়িয়ে দিতে অস্বীকার করায় ওই ব্যাংকের দুই শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর হামলা চালানো হয়।

এতে আরও বলা হয়েছে, ব্যাংক কর্মকর্তাদের বনানীর একটি বাড়িতে আটকে রেখে দুই ভাই নির্যাতন করেন এবং অস্ত্রের মুখে তাদের সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন।

মামলা নথিভুক্ত হওয়ার ছয় দিন পর গত বছরের ২৫ মে দুই ভাই সরকারি অনুমতি নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ব্যাংককে পালিয়ে যান।

একই বছরের ২০ জুলাই এই মামলায় বিদেশ থেকে আগাম জামিনের জন্য আবেদন করায় হাইকোর্ট রন ও তাঁর ভাইকে জরিমানা করেন।

তাদের জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করে হাইকোর্টের একটি ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ দুই সপ্তাহের মধ্যে জরিমানা হিসেবে কোভিড-১৯ মহামারি রোধে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

তহবিলে পিপিই দেওয়ার পর দুই ভাইকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান বলেন, হত্যাচেষ্টার মামলা আপসযোগ্য নয়। আপসমূলে এই মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া যায় না। কিন্তু তথ্যগত ভুলের বিষয়টি প্রমাণ হলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়া যায়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by