চট্টগ্রাম

মিরসরাইয়ে নারীর শরীরে ভুল রক্ত পুষ করার অভিযোগ হাসপাতালের বিরুদ্ধে 

  প্রতিনিধি ১৪ মে ২০২৩ , ৬:৪৬:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ

আশরাফ উদ্দিন, মিরসরাই:
মিরসরাইয়ের বারৈয়ারহাট জেনারেল হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে।  সিজারিয়ান এক রোগীর রক্তের গ্রুপ নির্ণয় না করেই রক্ত দেয়া হয়েছে। এতে ভুল রক্ত শরীরে প্রবেশের সাথে সাথে রোগীর অবস্থা অবনতি হতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে চট্রগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী রোগীর নাম সোনিয়া আক্তার। তিনি পূর্ব হিংগুলীর খালেদ মাহমুদের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছেন। রবিবার ( ১৪ মে) দুপুরে  সোনিয়া আক্তারের স্বামী খালেদ মাহমুদ এই অভিযোগ করেন।
 খালেদ মাহমুদ বলেন, তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তারের প্রসববেদনা উঠলে গত বৃহস্পতিবার বারৈয়ারহাট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তার নাছিমা আক্তার রাতেই সিজার করেন। এতে তার অত্যাধিক রক্তক্ষরণ হয় ও রক্তের হিমোগ্লোবিন (৭.৮) কম হওয়ায় রক্ত দেয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়। সোনিয়া আক্তারকে রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে নাইটেঙ্গেল ডায়াগনস্টিক ল্যাব এর পূর্বের রিপোর্ট অনুযায়ী রক্তের গ্রুপ এ পজেটিভ (A+) বলে জানান ডাক্তার নাছিমা আক্তারকে। কিন্তু নাছিমা আক্তার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে নিশ্চিত না হয়ে ক্রস চেক না করে মুখের কথার উপর নির্ভর করে রোগীর শরীরে রক্ত দিয়ে দেন। রক্ত দেয়ার পর রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রক্ত পরীক্ষা করে দেখা যায় রোগীর রক্তের গ্রুপ (O+) ও পজেটিভ। রোগীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় কোন সমস্যা হবেনা দুটাই পজেটিভ ব্লাড। সাময়িক সমস্যা হলেও আস্তেধীরে ঠিক হয়ে হয়ে যাবে। এভাবে কালক্ষেপণ করা ১ দিন পর রোগীর অবস্থা আরো সংকটাপন্ন হলে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
খালেদ মাহমুদ জানান, ডাক্তার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় তাকে বিপদে পড়তে হয়েছে। একদিকে নাইটেঙ্গেল ডায়াগনস্টিক ল্যাব এর ভুল রিপোর্ট অন্যদিকে বারৈয়ারহাট জেনারেল হাসপাতালের খামখেয়ালি। রোগীকে এখন আইসিইউতে রাখতে হচ্ছে, রক্ত ডায়ালাইসিস করে আবার নতুন রক্ত দিতে হবে। এতে প্রায় বাড়তি খরচ আসবে দেড় থেকে ২লাখ টাকা। এতো টাকা এখন আমি কোথায় পাবো?
বারৈয়ারহাট জেনারেল হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডাক্তার শাহজাহান ও পরিচালক আলিহাদার টিপু জানান, রোগী সোনিয়া আক্তার একজন ইউনিভার্সেল ডোনার। উনি যে কাওকে রক্ত দিতে পারবেন কিন্তু নিতে পারবেন না।  উনাকে রক্ত দেয়ার পূর্বে ক্রস ম্যাচিং করা হয়েছে তখন কোন অসঙ্গতি ধরা পড়ে নাই। কারন তার ক্ষেত্রে ক্রস ম্যাচিং নয় বরং গ্রুপিং টা গুরুত্বপূর্ণ। নাইটেঙ্গেল ডায়াগনস্টিক ল্যাব এর রিপোর্ট ভুল থাকায় এই ভুল হয়েছে তাই এটা বারৈয়ারহাট জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তারের কোন দোষ নেই।
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মিনহাজুর রহমান জানান, যে কোন রোগীকে রক্ত দেয়ার পূর্বে রক্তের গ্রুপ ও ক্রস ম্যাচিং করে নিশ্চিত হতে হবে। অন্যথায় কেউ এর দায় এড়াতে পারে না। এতে রোগীর পরিবার ইচ্ছে করলে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by