চট্টগ্রাম

মোবাইল উদ্ধারে এস আই খালেক অনন্য

  প্রতিনিধি ৫ অক্টোবর ২০২৩ , ৪:২৩:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ

মোবাইল উদ্ধারে এস আই খালেক অনন্য

এএসআই আব্দুল খালেক। হারানো বা চুরি হওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধারে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। অনেকে তাকে মোবাইল খালেক বলেও জানেন। কেউ কেউ তাকে মোবাইলের যাদুকরও বলেন। হারানো মোবাইল খুঁজে বের করাই তার নেশা। গত আড়াই বছরে ছিনতাই অথবা হারিয়ে যাওয়া প্রায় ১শ’র বেশি মোবাইল ফোন খুঁজে দিয়েছেন তিনি। হারানো মোবাইল উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে তৃপ্তি পায় সে। মোবাইল ফোন হারানোর বিষয়ে জিডি হলেই থানায় ডাক পড়ে তার। এরপর তা উদ্ধারে নানা কৌশলে, প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাঠে নেমে পড়েন তিনি।

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের বটতলী মাদ্রাসা পাড়ার ফরিদুল আলমের পুত্র আব্দুল খালেক। ২০০৮ সালে তিনি বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। বর্তমানে চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানায় কর্মরত রয়েছেন। ২০২১ সালে তিনি এ থানায় যোগদান করেন। প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোবাইল হারানোর অভিযোগ আসে খালেকের কাছে। নিজের থানা তো বটেই, অন্য যেকোনো স্থানে মোবাইল হারালেও ভুক্তভোগীরা আসেন তার কাছে। এরই মধ্যে কর্ম মূল্যায়ণে শ্রেষ্ঠ অফিসার ও হারানো মোবাইলফোন উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তর ও ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এবং শ্রেষ্ঠ সাজা ওয়ারেন্ট তামিলকারী অফিসার হিসেবে টানা ৮ বারের মতো চট্টগ্রাম জেলায় সেরা এএসআই নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি।

এএসআই আব্দুল খালেক বলেন, ‘বাঁশখালী থানায় ২০২১ সালে যোগদান করার পর থেকেই এই আড়াই বছরে এখন পর্যন্ত ১শ’র অধিক হারানো, চুরি, চিন্তাই হওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছি। বিভিন্ন থানা এলাকা হতে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশেষ করে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে হারানো জিডির মাধ্যমে মোবাইল উদ্ধার করে দিতে সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। হারানো মোবাইলটি উদ্ধার করে দিতে পারলে এবং প্রকৃত মালিকের মুখে হাসি দেখলে অনেক ভালো লাগে। এখানেই আমার বড় প্রাপ্তি ও তৃপ্তি।’

মোবাইল ফোন উদ্ধারের যাদুকর এএসআই আব্দুল খালেক মোবাইল ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে বলেন, ‘শখের বশে অনেক সময় পারসোনাল কিংবা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও সংরক্ষণ করেন অনেকে। কিন্তু মোবাইল ফোন যখন হারিয়ে যায়, তখন ওই ভুক্তভোগী মোবাইলের চেয়ে বেশি চিন্তা করেন ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও নিয়ে। এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হলো কখনো পারসোনাল কিংবা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ করা উচিত নয়। মানুষের বিশ্বাস, আমার কাছে ফোন দিলেই তার হারানো মোবাইলটি ফিরে পাবে। আমিও শতভাগ চেষ্টা করি প্রিয় মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের।’

তিনি আরও বলেন, হারানো মোবাইল ফোন উদ্ধারের পর অনেকেই তাদের নিজস্ব ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। খুশি হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ পুলিশের একজন সদস্য হিসেবে তখন নিজে গর্ববোধ করি। থানায় নিয়মিত মামলার তদন্ত, টহল ডিউটিসহ দৈনন্দিন সব কাজ করারর পরও মানবিক কারণে আমি মোবাইল ফোন উদ্ধারের কাজটি করে থাকি।

বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে থানার কাজগুলো সম্পন্ন করছে এএসআই আব্দুল খালেক। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের মোবাইল ফোন উদ্ধারে কাজ করেন। আমরা তাকে এসব কাজে উৎসাহ দেই। কারণ একটি মোবাইল ফোন একজন ভুক্তভোগীর কাছে অনেক গুরুত্ব বহন করেন। আর সেই ফোনটা উদ্ধার করে দিলে ভুক্তভোগীর খুশির অন্ত থাকে না। এভাবেই অসংখ্য মানুষের মুখে হাসি ফোঁটাতে আমরা তৎপর।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by