দেশজুড়ে

মোরেলগঞ্জের ইউএনও যখন শিক্ষক

  প্রতিনিধি ২১ অক্টোবর ২০২৩ , ৩:৪৪:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ

মোরেলগঞ্জের ইউএনও যখন শিক্ষক

মোরেলগঞ্জে নির্বাহী কর্মকর্তার আকর্ষিক ভাবে বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে এসে ক্লাস নেওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলো নড়েচড়ে বসছেন। গতি ফিরেছে শিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষকদের সাথে নিয়ে মানসম্মত শিক্ষা ব্যাবস্থা গ্রহন করতে বদ্ধপরিকর। মোরেলগঞ্জ উপজেলায় রয়েছে ৩০৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এই বিদ্যালয়গুলোতে উপজেলা প্রশাসনের নিবিড় পরিচর্যা এবং উদ্ভাবনী কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রাণবন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে প্রাথমিক শিক্ষা একটি প্রাতিষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষায় রুপ দিতে চেস্টা করে যাচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম তারেক সুলতান। প্রশাসনিক কাজের ব্যাস্ততার ফাকে প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নিয়মিত আয়োজন, কাব কার্যক্রম গতিশীল করার পাশাপাশি প্রত্যেক বিদ্যালয়ে ল্যাংগুয়েজ ক্লাব ও ডিবেটিং ক্লাব প্রচলনের মাধ্যমে আনন্দ-বৈচিত্রময় হয়ে উঠেছে পাঠদান কার্যক্রম। বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষার উৎকর্ষতা সাধনে অনন্য ভূমিকা পালন করায় মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী এস এম তারেক সুলতান বাগেরহাট জেলা এবং খুলনা বিভাগীয় শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নির্বাচিত হয়েছেন।

আনন্দ-বৈচিত্রের মাধ্যমে গুণগতমানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে মোরেলগঞ্জ উপজেলার ৩০৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস এবং কাব কার্যক্রমকে নিয়মিত করার পাশাপাশি প্রত্যেক বিদ্যালয়ে ল্যাংগুয়েজ ক্লাব কার্যক্রম চালু করছেন তিনি।
নিয়মিত পরিদর্শন ও মনিটরিং এর মাধ্যমে বিদ্যালয়গুলোর ওয়াশ ব্লকের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ব্যবহার, বিদ্যালয়ে খেলাধূলা আর সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপরও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতায় শুধু ল্যাংগুয়েজ আর ডিবেটিং ক্লাব কার্যক্রমই নয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম তারেক সুলতান বিদ্যালয়ে প্রতিটি ছুটির নোটিশে ঐ দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে শিক্ষক ক্লাসে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করার উপরও জোর দিয়েছেন। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এখন সংশ্লিষ্ট দিবস সম্পর্কে জানতে পারবে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে।সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগন বলছেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আকস্মিক পরিদর্শন আমাদেরকে আরো দায়িত্বশীল হতে শিখিয়েছে।

সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সজল মহলী জানান, এলাকাভিত্তিক বিদ্যালয়সমূহের সমন্বিত ক্লাষ্টার সভার আলোচ্যসূচীতে ইউএনও স্যারের দিক নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি আলোচনা করা হচ্ছে,স্যারের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসানীয়।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা অসিত কুমার বর্মন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ইএলসি কার্যক্রম মোরেলগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষায় আমুল পরিবর্তন আনবে, ইউএনও স্যার প্রতিটি বিদ্যালয়ে শেখ রাসেল পুষ্প কর্নার করার নির্দেশ দিয়েছেন,তিনি শিক্ষকদের বেশি করে বই পড়ার প্রতি মনোযোগী হতে বলেছেন।

সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এই উদ্যোগ ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমানে অগ্রনী ভুমিকা রাখবে,এ লক্ষে আমরা প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন করে দক্ষ ইংরেজি শিক্ষক তৈরি করবো।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিদের্শনায় উপজেলার ৩০৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইএলসি কার্যক্রম নিয়মিত করার জন্য ইতিমধ্যে আমরা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছি। এটি বাস্তবায়ন হলে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা ইংরেজি শিক্ষায় পারদর্শী হয়ে উঠবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম তারেক সুলতান বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমে সম্পৃক্ততা মূল্যায়ন করে জেলা এবং বিভাগে শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনোনীত হতে পারা অনেক গৌরবের। মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে এই উপজেলায় যোগদানের পরে জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে আমি প্রাথমিক শিক্ষার উপর একটি সার্ভে করি,সার্ভের মাধ্যমে আমরা একটা রেশিও পেয়েছি যে মোরেলগঞ্জে নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি,পরবর্তীতে আমরা সিদ্ধান্ত নেই যে প্রথম শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ইংরেজিতে গল্প বলা এবং ৪র্থ থেকে ৫ম শ্রেণির ক্লাসে ইংরেজিতে নিউজপেপার পড়া শেখানে হবে,শিক্ষা কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে আমি সেটা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি,আশা করি আমার এ উদ্যোগ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমানে সহায়ক ভুমিকা রাখবে।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি এ্যাড: মো: .শাহ-ই আলম বাচ্চু জানান, প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উদ্ভাবনী কার্যক্রম প্রশংসিত হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষার আলো ছড়াতে তিনি শত ব্যস্ততার মধ্যেও অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালিদ হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, সরকারি নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করে মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে যে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন তা সকলের কাছে সমাদৃত হয়েছে। আমি মোরেলগঞ্জের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে অনুরোধ রাখবো তারা যেন ইএলসি কার্যক্রমের উপর জোর দেন এবং বাস্তবায়ন করেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by