দেশজুড়ে

রাজশাহীতে ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে পুড়লো কৃষকের স্বপ্ন

  প্রতিনিধি ২৯ মে ২০২০ , ৮:২৯:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ

রাজশাহী প্রতিনিধি:  রাজশাহীর মোহনপুরের বিশালপুর গ্রামের কৃষক এনামুল হক আড়াই লক্ষ টাকা খরচ করে পান বরজ করেছিল। আশা ছিল- পান বরজ থেকেই কেটে যাবে তার অভাব-অনাটন। কিন্তু ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে তার সেই বরজের পান ঝলছে যওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে শেষ হতে বসেছে তার স্বপ্নও।

শুধু এনামুল হক নয়, মোহনপুর উপজেলার বিশালপুর, গোছা, ঘাসিগ্রামসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের তার মতো অনেক কৃষকের স্বপ্নই পুড়েছে ইটের ভাটা থেকে নির্গত ওই বিষাক্ত গ্যাসে। প্রায় দুইশত বিঘা জমির বোরো ধান, কচু, পান বরজ, বিভিন্ন প্রকার সবজি ওই গ্যাসের প্রভাবে ঝলছে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর প্রভাব ওই এলাকার সব ধরনের গাছের ওপরও পড়েছে। ঝরে পড়ছে গাছের কাঁচা পাতা। গত বৃহস্পতিবার ক্ষতিপূরণ চেয়ে নিবাহী অফিসার (ইউএনও) এবং কৃষি অফিসারের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় কৃষকেরা জানান, গত বুধবার রাতে ইট পোড়ানোর কাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ওই ভাটার কিলিনে জমে থাকা বিষাক্ত গ্যাস ছেড়ে দেন। এর পর পরই এলাকার বাতাস উত্তপ্ত হয়ে যায়। ওই বাতাস যে দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সেই অংশেরই ধান, পান বরজ, কচু, বিভিন্ন সবজিসহ গাছের পাতা ঝলছে গেছে।
কৃষকরা জানান, তাদের প্রায় দুইশত বিঘা জমির ফসল বিষাক্ত গ্যাসে ঝলছে গেছে। বিষয়টি ভাটার মালিকদের জানালে তারা ক্ষতিপূরণ দেবেন বলে তাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন। গোছা গ্রামের কৃষক আব্দুস সাত্তার বলেন, লাউ খেতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভাটার ইট পোড়ানো এক মিস্ত্রি বলেন, ‘কয়লা দিয়ে ইট পোড়ালে কিলিনে (চি¤িœ) গ্যাসের সৃষ্টি হয়। সব ইট পোড়ানো যখন শেষ হয় তখন ওই গ্যাস তিন থেকে চার দিন ধরে ধীরে ধীরে ছেড়ে দিতে হয়। কিন্তু এক সাথে বেশি করে ছেড়ে দেয়ায় কারণে ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার বিদ্রিকা গ্রামের এ,এম এম ইটভাটা মালিকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, তারা কৃষকের ক্ষতিপূরণ দিবেন। তবে ইটভাটা থেকে বিষাক্ত গ্যাস ছাড়ার কথা অস্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রহিমা খাতুন বলেন, ইটের ভাটার গ্যাসে ফসল ঝলছে যাওয়ার বিষয়টি এলাকার কৃষকেরা বৃহস্পতিবার সন্ধার সময় জানিয়েছে। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ওই এলাকায় গিয়ে কৃষকের সাথে কথা বলবো। ফসলের খোজ-খবর নেব। যদি ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাস ফসলের ক্ষতি হয়ে থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানওয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি । যদি ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে কৃষকের ক্ষতি হয়ে থাকে তবে তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by