ঢাকা

রূপগঞ্জে কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে অবৈধ ইটভাটায়

  প্রতিনিধি ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৬:৩৫:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মাসাবো, তেতলাবো, বরপা, কর্ণগোপ, সাঁওঘাট, গোলাকান্দাইল, আওখাবো, বলাইখা, বেলদি, দেবই, কামালকাঠি, আতলাপুর, ভোলাবো, চারিতাল্লুক, বিরাবো, কাঞ্চন, পিতলগঞ্জসহ আশপাশের এলাকার অবৈধ ইটভাটায় অবাধে কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে। ইটভাটার নির্গত কালো ধোঁয়ায় আশপাশের পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ছে। বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে প্রাণী, গাছপালা ও জীবজন্তু। কৃষি জমির টপসয়েল হারিয়ে কৃষকরা এখন বোবা কান্নায় কাঁদছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কোন কোন ইটভাটায় চলছে কাঠ পোড়ানো। ইটভাটার পার্শ্ববর্তী সড়কের পাশের গাছের পাতায় পাতায় ধূলোবালির স্তুপ। বাতাসে মিশছে ইটভাটার কালো ধোঁয়া। ইট বহনকারী অবৈধ ট্রলি চলাচলে স্থানীয় সড়ক খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। তাতে যানবাহন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আম, জাম, কাঁঠাল ও নারকেল গাছে ফলন কমে গেছে। আম গাছের মুকুল কালো হয়ে ঝরে পড়ছে। সবুজের চাদর মোড়ানো গ্রাম এখন বিবর্র্ণ হয়ে পড়েছে। ফসলে ভরা ছিল মাঠ। চারিদিকে ছিল সবুজের সমারোহ। এখন আর সেই রূপ এখানে নেই। শুধুই স্মৃতি।

আইনকে উপেক্ষা করে জনবসতিতে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে ওঠেছে প্রায় শতাধিক অবৈধ ইটভাটা। স্থানীয় প্রভাবশালীরা রাতের আঁধারে বেকু দিয়ে কৃষি জমি গভীর খনন করে মাটি কেটে ইটভাটাগুলোতে সরবরাহ করছে। নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় হাচিঁ-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। অবৈধ ইটভাটার কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে মানুষ আর সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। অন্যদিকে মারাত্বক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। হুমকির মুখে আগামীর ভবিষ্যৎ।

দাউদপুর ইউনিয়নের রোহিলা এলাকার কৃষক জালাল উদ্দিন বলেন, চার বিঘা জমিতে আমি ধান চাষ করি। কিন্ত এবছর পাশের জমি বেকু দিয়ে গভীর খনন করে মাটি কাটায় আমার জমিসহ পাশের জমি সৃষ্ট গর্তে ভেঙ্গে পড়ছে। এবছর ধান চাষ করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।

ভোলাবো ইউনিয়নের আতলাপুর এলাকার কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, মাটি খেকোরা বেকু দিয়ে কৃষি জমির মাটি কেটে নিচ্ছে। বাধাঁ দিলে ভয়ভীতি ও হামলা মামলা করা হয়। সেচ প্রকল্পের খালে বাধঁ দিয়ে তাদের ব্যবহৃত পরিবহন চলাচল করে। ফলে পানি সংকটে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।

কাঞ্চন পৌরসভার বিরাবো এলাকার সাইদুর রহমান বলেন, ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় এলাকার সবধরণের ফসল ও গাছপালা ঝলসে যাচ্ছে। বৃষ্টি হলে কাদা আর শুকনো মৌসুমে ধুলোবালির জন্য রাস্তায় চলাচল করা যায় না। অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ নুসরাত জাহান বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কয়েক দফা অভিযান চালানো হয়েছে। বেশ কয়েকটি ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পরিবেশ দূষণকারী অবৈধ ইটভাটার সঙ্গে কোন আপোষ নেই।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by