চট্টগ্রাম

লক্ষ্মীপুরে স্কুল ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

  প্রতিনিধি ২৯ আগস্ট ২০২১ , ৫:৪৮:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ

মোহাম্মদ হাছান, চন্দ্রগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি:

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন চন্দ্রগঞ্জে স্কুল ভবনের কাজে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

চন্দ্রগঞ্জ বাজারে অবস্থিত আলহাজ্ব ইব্রাহিম মিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪তলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের কাজে গুরুতর অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। কাজের শুরুতেই নানা অভিযোগ আর দূর্নীতি থাকলেও এখন পর্যন্ত ধীর গতিতে হলেওে থেমে থেমে কাজ চলছে। অভিযোগ পাওয়া যায় নতুন ভবনের ভিতরের এসএস ও থাই অ্যালুমিনিয়ামের কাজে প্রচুর অনিয়ম হচ্ছে।

নির্মাণাধীণ স্কুল ভবনের ভেতরের এসএস এবং অ্যালুমিনিয়াম থাইয়ের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স হাফিজ উল্যা ভূইয়া এন্ড সন্স। বর্তমানে ঠিকাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন ও কাজ করছে মোঃ বেল্লাল হোসেন । যদিও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিডিউলে ছিল প্রতিটি অ্যালুমিনিয়ামের কাজ কাজ করা হবে ১.২ গগ থিকনেছ এর উপকরণ দিয়ে এবং এসএসের কাজ করা হবে ২.০০ গগ – ২.৫ গগ থিকনেছ দিয়ে, অথচ সেখানে করা হচ্ছে অতি নিম্নমানের ০.৮০ গগ বা তার চেয়ে নামমাত্র কিছু বেশি থিকনেছের উপকরণ দিয়ে।

ভবনে দায়িত্বরত মেস্তুরী জানান আমার মনে হয় এগুলো ১.০০ গগ এর উপকরণ দিয়ে করা হয়েছে, কিন্তু আমি এত বেশি বুঝিনা।

এখানে আরো উল্লেখ্য যে, ভবনের কাজে ১.৭৫ বক্স উপরে ১.২ গগ প্রোডাক্টার দিয়ে কাজ করার কথা ছিল, কিন্তু সেখানে প্রোডাক্টার না দিয়ে মাত্র ০.৮ গগ আধা ইঞ্চির এ্যাংগেল ব্যবহার করা হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের কাজের অনিয়ম সম্পর্কে প্রধান শিক্ষক মোঃ মহি উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গত ২২/১২/২০২০ ইং তারিখে এসএস ও অ্যালুমিনিয়ামের কাজের নিম্নমানের উপকরণ, অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশল বরাবর একটি আবেদন করি।

আবেদন করলে আমাকে জানানো হয় শিক্ষা প্রকৌশল অফিস থেকে পরিদর্শনে আসবে, কিন্তু দুঃখের বিষয় এখনো পরিদর্শনে আসেনি। গত কিছু দিন থেকে দেখছি ঠিকাদারের লোকজন আবার কাজ আরম্ভ করছে। জানতে চাইলে তারা জানায় ইঞ্জিনিয়ার এসে দেখে গেছে, সব ঠিক আছে।

এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার মোঃ বেল্লাল হোসেনের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি। তিনি প্রতিবেদককে লক্ষ্মীপুরে তার সাথে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করার জন্য বলেন।
লক্ষ্মীপুর জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী প্রসেনজিত বিশ্বাস জানান, আলহাজ্ব ইব্রাহিম মিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসের কাজের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি এবং সত্যতাও পেয়েছি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে সঠিক মানের উপকরণ দিয়ে কাজ পুনরায় করার জন্য।

 

কিন্তু অ্যালুমিনিয়াম এর কাজের ব্যাপারে আমার জানামতে সবকিছু ঠিক আছে। প্রতিবেদকের প্রশ্নের চাপে তিনি সহকারী প্রকৌশলী এনামুল হকের দিকে দোষের ভার অর্পণ করেন। এখানে উল্লেখ্য সিডিউল অনুযায়ী এসএসের কাজ ২.০০ গগ – ২.৫ গগ থিকনেছ দিয়ে করার কথা থাকলেও সেখানে মাত্র ০.৮০ গগ থিকনেছ দিয়ে কাজ করা হয়েছে যা সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়।

পরবর্তীতে কাজের অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাই সহকারী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের কাছে, তিনি এ বিষয়ে বলেন, অ্যালুমিনিয়াম তো ঠিক আছে। আমরা গিয়ে দেখে এসেছি। কিন্তু প্রতিবেদক যখন সিডিউল, পরিমাপসহ বলেন, তখন সহকারী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক থতোমতো খেয়ে যান এবং বিভিন্ন ভাবে কথা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এছাড়াও একেক কোম্পানীর উপকরণ একেক রকম হয় বলে মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য যে, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে আলহাজ্ব ইব্রাহিম মিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় ৩ কোটি (বর্ধিতসহ) টাকার ৪তলা ভবনের প্রকল্পের কাজ গত ২০১৯ সালে ফেব্রুয়ারীর দিকে আরম্ভ হয়, করোনা সংক্রমনের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় ও অনিয়ম, দূর্নীতির অভিযোগ হওয়ায় কাজের গতিতে বিলম্ব হয়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by