দেশজুড়ে

শরণখোলায় আদুরী আক্তার ১৭ বছর পর নারী থেকে পুরুষ

  প্রতিনিধি ৫ জুন ২০২০ , ৫:৫৩:২৬ প্রিন্ট সংস্করণ

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : ১৯ বছর আগে শরণখোলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের সগির মুন্সি তার স্ত্রীর কোলজুড়ে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। পিতামাতা একমাত্র মেয়ের নাম রাখেন আদুরী আক্তার। আদুরীর শাররিক গঠন বৃদ্ধি পেয়ে একজন যুবতী নারী হিসাবেই বড় হয়। পিতামাতা, আত্মীয়স্বজন পাড়াপ্রতিবেশীরা তাকে মেয়ে হিসাবে দেখেছে।

কিন্তু অবিশাস্ব্য হলেও সত্য সেই আদুরী আক্তারের লিঙ্গ পরিবর্তন হয়ে সে এখন একজন পূর্ণাঙ্গ পুরুষ। তিনি ইসামনি পুতুল (১৭) নামের এক মেয়েকে বিয়ে করে দিব্যি সংসার করছেন। আদুরী নাম পরিবর্তন করে সানি ইসলাম নামে পরিচিত হচ্ছেন। তার স্ত্রী বর্তমানে মাসের অন্তসত্ত্বা। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর থেকে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কথা হয় উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের খেজুর বাড়ীয়া গ্রামের করাতকল শ্রমিক ছগির মুন্সীর সাথে। তিনি বলেন, তার তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে আদুরী মেঝ। ২০১০ সালে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কাজের সন্ধানে চট্রগ্রামে যাই। সেখানে গিয়ে ছোটোখাটো একটি ব্যবসা শুরু করি। এরপর ২০১৭ সালের দিকে দেখি আদুরী ছেলেদের মত আচরণ করতে থাকে। এসব দেখে আমার লজ্জা লাগে। ভাবছি সমাজে মুখ দেখাবো কি করে। এজন্য ওকে সারাক্ষণ ঘরের মধ্যে থাকতে বলতাম। কিন্তু আদুরী আমাদের কোনো কথাই শোনেনা। রাতে পাশের ঘরে বান্ধবীর বাসায় ঘুমতে চায়। এমন আচার  দেখে বিরক্ত হয়ে সবসময় বকাঝকা করতে থাকি।

একপর্যায়ে আমরা আদুরীকে চট্রগ্রামে রেখে পরিবারের অন্য সবাই বাড়িতে চলে আসি। সেখানে থেকে সে গার্মেন্টসে চাকুরী নেয়। গত ১২ মে স্ত্রী পুতুলকে নিয়ে আদুরী বাড়িতে আসলে করোনার কারণে ওদের ১৪ দিন আমার বাবার বাড়িতে আলাদা থাকতে দেই। পরে আমি সবকিছু জেনে দেখলাম আদুরী এখন আর আমাদের মেয়ে নাই পুরাপুরি ছেলে হয়ে গেছে

মেয়ে থেকে পরিবর্তন হয়ে কিভাবে ছেলে হলো তা জানতে চাইলে আদুরী জানান, প্রায় সাড়ে তিনবছর আগে থেকে আমার শরীরের ভেতর মেয়েদের প্রতি আকর্ষন জাগতে শুরু করে। আস্তে আস্তে লিঙ্গ পরিবর্তন হয়ে আমি পুরুষে রূপান্তরিত হই। তবে ডানদিকের অন্ডোকোষে মাঝে মাঝে ব্যাথা করলে ডাক্তার দেখানোর পরে তা ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু আমার পরিবর্তন বাড়ির কেউ বিশ্বাস করতে চায়নি। তাই গত দুই বছর আগে চট্রগামের রাউজানের ইসামনি পুতুল নামে একটি মেয়েকে তার পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করি। এরপর আমার স্ত্রী অন্তসত্ত্বা হলে তাকে নিয়ে বাড়িতে আসি। যাতে সবাই বিশ্বাস করে যে আমি আর তাদের মেয়ে নাই। আমার স্ত্রী এখন মাসের অন্তঃসত্বা।

ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন হরমোন বিশেষজ্ঞ ডা. রফিকুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, আমরা সাধারণত ছেলে থেকে মেয়ে হতে চাওয়া রোগীদে ফ্রি চিকিসা করে থাকি তবে মেয়ে থেকে ছেলে হওয়া জটিল বিষয়। এটা কিভাবে হলো না দেখে বলা যাবেনা। তবে মনে হচ্ছে পরিবার আগে থেকে লুকিয়েছে।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by