খুলনা

সময়সূচি মানেন না পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তাররা

  প্রতিনিধি ২২ নভেম্বর ২০২৩ , ৪:২৩:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ

সময়সূচি মানেন না পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তাররা

খুলনার পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোধীদের ভোগান্তির শেষ নেই। এখানে কর্তব্যরত ডাক্তাররা সময়সূচী মানেন না। প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে শয়ে শয়ে রোগী আসে সুচিকিৎসার আশায়। কিন্তু চিকিৎসার বদলে ভোগান্তিই বেশি পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ রোগী ও তাদের স্বজনদের। তাদের অভিযোগ, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ডাক্তাররা অফিস করেন তাদের মনমতো। নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী সময়ে তারা হাসপাতালে আসেন। এতে ঘন্টার পর ঘন্টা ডাক্তারের অপেক্ষায় থাকতে হয় রোগীদের। সরকারি নিয়মের কোনো বালাই নেই তাদের কাছে। তারা সরকারের চাকরি করবে কিন্তু সরকারের দেয়া নিয়ম মানতে নারাজ।

জানা যায়, সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার আসার সময়সূচি শুরু হয় সকাল ৮টা থেকে টিকিটের দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে থাকার পর আবারও ডাক্তার রুমের সামনে গিয়ে ডাক্তার আসার অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায় রোগীদের। কখনো কখনো বেলা ১১.০০ বাজলেও ডাক্তারশূন্য থাকে কয়েকটি কক্ষ সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালের বোর্ডে লেখা রয়েছে অফিস সময়সূচি । “সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যতিত সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। জরুরি বিভাগ সার্বক্ষণিক খোলা, ১৬ নভেম্বর সকাল ৮.৪০ মিনিটে পাইকগাছা উপজেলা হাসপাতালে সরজমিনে গেলে দেখা যায়,বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টারে টিকিট বিক্রেতা ও ডাক্তারের দরজার সামনে বেশ কয়েকজন রোগী বসে আছে।

এ সময় একজন ডাক্তারও হাসপাতালে আসেনি। টিকিট কাউন্টারে ডাক্তার আসার সময় জানতে চাইলে, তিনি জানান, ডাক্তার আসবে সকাল ১০টায়। এ সময় সাংবাদিকের উপস্থিতির বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানায় টিকিট কাউন্টারের আইয়ুব আলী। পরে দেখা যায়, সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটে দুজন ডাক্তার তাড়াহুড়া করে হাসপাতালে আসেন। এর পরে আরো ১৫/২০ মিনিট পর আরো ২ জন ডাক্তার হাসপাতালে আসেন। এর পরে ডাক্তার’রা হাসপাতালে ভর্তি থাকা রুগীদের দেখতে রাউন্ডে যান। রাউন্ড শেষে জরুরী রোগী ও ছাড়পাত্র দেওয়ার মতো রোগীদের ফাইল নিয়ে ডাক্তাররা বসেন আলোচনার টেবিলে সেখানে চা নাস্তা ও খোশ গল্প শেষে ডাক্তাররা বহির্বিভাগের স্ব স্ব চেম্বারে যান রুগী দেখার জন্য।

উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের মঠবাড়ি গ্রামের রহিম মালি (৩৫) চিকিৎসা নিতে আসেন। তিনি বলেন, ৮টা ৩০ মিনিট থেকে ডাক্তারের রুমের সামনে এসে বসে আছি। অনেক দূর থেকে এসে এভাবে লাইন ধরে বসে আছি ডাক্তারের জন্য। এখন প্রায় ১১টা বারো কিন্তু এখনো ডাক্তার আসার নাম নেই। চাঁদখালী ইউনিয়ন এর গরেডাঙ্গা গ্রামের রকেয়া বেগম (৬০) বলেন, আমি বুড়ো মানুষ। সকাল ৮টা থেকে বসে আছি। এখনো ডাক্তার আসে নাই। পার্শ্ববর্তী উপজেলা আশাশুনির দুর্গাপুর গ্রাম থেকে থেকে চিকিৎসা নিতে আসা কুলসুম (৭০) বলেন, এত দুর থেকে ২ দিন ধরে আসছি। এসে বসে থাকতে হয় ডাক্তারের জন্য । গতকাল এসেছিলাম দিয়েছে টেস্ট, আজ আবার এসেছি। ২ ঘণ্টা ধরে বসে আছি ডাক্তার আসে না।

এ বিষয়ে পাইকগাছার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নিতিশ কুমার বলেন, আসলে এ বিষয়টি এলাকার প্রভাবে এমন হয়েছে। সকাল ৮ টায় ডাক্তার আসার নিয়ম থাকলেও, এ এলাকার রোগীরাই তো এত সকালে আসে না। তবে ডাক্তারদের সময়মতো না আসাটা ঠিক নয়। নিয়ম মেনেই চলা উচিত। বিষয়টি নিয়ে আমি ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করব।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by