দেশজুড়ে

সীতাকুণ্ডে বিশেষ লালবৃত্ত আর টোকেনে চলছে নিষিদ্ধ সিএনজি!

  প্রতিনিধি ১৯ মে ২০২০ , ৩:৪৩:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ

কামরুল ইসলাম দুলু, সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশে সিএনজি চালিত অটোরিক্সার দৌরাত্ম বেড়েই চলছে। কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মহাসড়কে অবাধে চলছে এ বাহনটি। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আইন কানুনের তোয়াক্কা না করেই পুলিশের টোকেন বাণিজ্যের কারণে মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশে অবাধে চলছে তিন চাকার এ বাহনটি।

মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান করলে ও পুলিশের নিদিষ্ট টোকনের মাধ্যমে চলে সিএনজি অটোরিক্সা। এই সড়কে চলা প্রায় সবগুলো সিএনজি অটো রিক্সার সামনের গ্লাসে বিশেষ লালবৃত্ত লাগানো। এ লালবৃত্ত থাকা মানে মহাসড়কে চলার বৈধতা।

জানা যায়, বিশেষ একটি টোকেনের মাধ্যমে মাসে একটি সিএনজি থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা চাঁদার বিনিময়ে গাড়ির গ্লাসে লাগানো বিশেষ লালবৃত্ত লাগিয়ে মহাসড়কে চলছে সিএনজি অটোরিক্সা। সিএনজি অটোরিক্সা ছাড়াও টোকেন বানিজ্যের মাধ্যমে চলাচল করছে অবৈধ ব্যটারী চালিত রিক্সাও। বেশ কয়েকজন চালকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভাটিয়ারী এলাকার লাব্বায়েক নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক নবীউল আলম নামের একজনের মাধ্যমে বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি এই কাজটি করছে।

জানা যায়, মাসিক সাড়ে তিনহাজার টাকা দেয়া চাঁদা থেকে নবী পায় সিএনজি প্রতি পাঁচশত টাকা আর থানায় দিতে হয় তিন হাজার টাকা। অভিযোগ আছে হাইওয়ে থানার ওসির কাছেই পৌছানো হয় এ চাঁদার টাকা। তবে টাকা নেওয়ার কাজে ওসি চালকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রাখেনি। টোকেন ব্যবহার করা হয়েছে নবীর প্রতিষ্ঠান লাব্বায়েকের ভিজিডিং কার্ড। কার্ডের অপর পৃষ্টায় গাড়ির নাম্বার ও একটি সাক্ষর রহিয়েছে। রাস্তায় চলাচল করা অবস্থায় যদি কোন পুলিশ গাড়ি ধরে তখন ঐ ভিজিডিং কার্ডটি চালক দেখালে পুলিশ গাড়ি ছেড়ে দেয়। এর রকম টোকেন দিয়ে উপজেলার বার আউলিয়া মাজারের সামনে থেকে নগরীর সিটি গেইট পর্যন্ত প্রায় ৫০ টা নিষিদ্ধ সিএনজি চলাচল করছে।

পুলিশকে কত টাকা দিতে হয় এমন প্রশ্নে কয়েকজন সিএনজি চালক জানান, আমরা পুলিশকে কোন টাকা দেয়না। তাহলে নিষিদ্ধ সিএনজি মহাসড়কে কিভাবে চলে এমন প্রশ্নে তারা বলেন, আমার মালিকের সাথে নুর নবীর মাধ্যমে থানা পুলিশের আলোচনা হয়েছে, এর বেশি আমরা জানিনা। টোকেন এর ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা জানান, তারা বলেন, কখনও পুলিশে ধরলে মালিক বলেছে সেটি দেখানোর জন্য।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিএনজি চালক বলেন, থানায় মাসে মোটা অংকের বিনিময়ে আমরা রাস্তায় গাড়ি নামিয়েছি। বর্তমানে করোনা চলাকালে আমরা বেকার তাই পেটের দায়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।

এব্যাপারে জানতে চাইলে লাব্বায়েক এর মালিক নবিউল আলম বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার ভিজিডিং কার্ড যে কারো কাছে থাকতে পারে। মহাসড়কে সিএনজি চলাচল অবৈধ, পুলিশের সাথে আমার কোন ধরণের চুক্তি হয়নি। তবে বর্তমানে লকডাউনে অনেক চালক বেকার হয়তো পেটের দায়ে কেউ কেউ মহাসড়কে গাড়ি চালাচ্ছে।

উল্লেখ যে, নবিউল আলম চট্টগ্রাম অটো রিক্সা ও অটো টেম্পু ড্রাইভার্স সহকারী ইউনিয়নের ভাটিয়ারী শাখার সভাপতি। বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি আবদুল আউয়াল বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনে আমাদের জনবল কম, তাছাড়া করোনা ভয়ে আমাদের কোন সদস্য রাস্তায় নামতেও চাইনা। এই সুযোগে কিছু সিএনজি অটো রিক্সা মহাসড়কে চলাচল করছে। যেটা আটক করি সেটা ছয়মাস থানায় আটক থাকবে ৬মাস পর মামলা দেওয়া হবে। মহাসড়কে সিএনজি চলাচলের অনুমতি নেই।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by