আন্তর্জাতিক

সৌদির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দূরত্ব কেন

  প্রতিনিধি ১০ ডিসেম্বর ২০২২ , ৬:৪০:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক :

দীর্ঘ সাত বছর পর তিন দিনের সফরে সৌদি আরব গেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সফর নিয়ে আরব বিশ্বের নেতাদের মধ্যে যে মাত্রার আগ্রহ-উচ্ছ্বাস দেখা গেছে, তার নজির বিরল।

অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, বেশ কিছুদিন ধরেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বিশেষ করে সৌদি আরব বা ইউএইর মধ্যে, নিরাপত্তা, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের জন্য আমেরিকার ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর তাগিদ দেখা যাচ্ছে।

২০১৭ সালে সৌদি আরবের ক্ষমতা হাতে পাওয়ার পর দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আধুনিক ও স্বাবলম্বী একটি দেশে পরিণত করতে উঠেপড়ে লেগেছেন।

এজন্য গুপ্তচরবৃত্তিতে সংশ্লিষ্টতার যুক্তিতে চীনা যে টেলিকম কোম্পানিকে যুক্তরাষ্ট্র নিষিদ্ধ করেছে সেই হুয়াওয়ে সৌদি আরব এবং ইউএইসহ বেশ কয়েকটি উপসাগরীয় দেশে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক বসিয়েছে। স্পর্শকাতর তথ্য চুরির ঝুঁকি নিয়ে আমেরিকার কথা এসব দেশ কান দেয়নি।

এমনকি গত বুধবার সৌদি আরব ও চীনের মধ্যে যেসব চুক্তি হয়েছে তার মধ্যে একটি চুক্তির আওতায় হুয়াওয়ে সৌদি আরবে বেশ কতগুলো ডেটা সেন্টার প্রতিষ্ঠিত করবে। যেখানে ক্লাউডে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডেটা সংরক্ষিত থাকবে।

তবে আমেরিকার সঙ্গে সৌদি প্রশাসনের সম্পর্ক শীতল হওয়ার পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে যুবরাজ সালমানের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সম্পর্কের টানাপড়েন।

ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকেই খোলাখুলি যুবরাজ সালমানকে দায়ী করে অনেক বক্তব্য দিয়েছেন। তাকে একঘরে করে ফেলার হুমকিও দেন।

খাসোগি হত্যাকাণ্ডের জন্য যেন যুবরাজ সালমানকে কখনো যুক্তরাষ্ট্রে মামলায় না পড়তে হয় তার নিশ্চয়তা চেয়ে সৌদি রাজপ্রসাদের পক্ষ থেকে হোয়াইট হাউজের কাছে অনুরোধ করা হলেও এখনও কোনো নিশ্চয়তা বাইডেন দেননি।

লন্ডনে মধ্যপ্রাচ্য রাজনীতির বিশ্লেষক সামি হামদি বলেছেন, যুবরাজ সালমান অপমানিত বোধ করছেন। শি জিনপিংকে নিয়ে তিনি যে মাতামাতি করলেন তার পেছনে আমেরিকাকে দেখানোর বিষয়টিও রয়েছে বলে আমি নিশ্চিত।

তিনি আরও বলেছেন, বাইডেন যখন জেদ্দায় আসেন তাদের দুই জনের মধ্যে করমর্দন পর্যন্ত হয়নি। এখন মোহামেদ সালমান শিকে আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসে আমেরিকানদের দেখাতে চেয়েছেন তিনি নতুন এক আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পথ নিয়েছেন। শুধু তিনি নিজে নয় অন্যান্য আরব নেতাদেরও তিনি এই পথে আনছেন।

সামি হামদি বলেন, গত তিনদিনে রিয়াদে যে আড়ম্বর হলো তার প্রতীকী মূল্য অনেক। মোহামেদ সালমান আমেরিকানদের বলতে চেয়েছেন আমাকে তোমরা একঘরে করে দেবে বলেছিলে। এখন দেখ তা হয়নি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by