রংপুর

৪ দফা দাবিতে কর্মবিরতিতে বড়পুকুরিয়ার খনি শ্রমিকরা

  প্রতিনিধি ৮ মার্চ ২০২১ , ৬:৫৭:২৬ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

করোনাকালীন দীর্ঘ প্রায় ৭ মাস বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এলাকায় অবরুদ্ধ থাকার পর প্রধান ফটক খুলে কর্মস্থল ত্যাগ করেছেন ৬০৪ জন বাংলাদেশি শ্রমিক। খনি এলাকায় অবরুদ্ধ রাখায় ক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা প্রোফিট-বোনাস, বকেয়া বেতন-ভাতাসহ ৪ দফা দাবিতে কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে। ফলে তিন শিফটের পরিবর্তে চীনা শ্রমিকদের দিয়ে এক শিফটে চলছে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা উত্তোলনের কাজ। 

জানা যায়, রোববার (৭ মার্চ) রাত সোয়া ৮টায় কর্মরত ৬০৪ জন শ্রমিক একযোগে খনি এলাকা থেকে বের হয়ে আসেন। খনি থেকে বের হয়ে এসে সোমবার (৮ মার্চ) দুপুরে পাশ্ববর্তী ফুলবাড়ীতে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে খনি শ্রমিকরা।

বৈশ্বিক করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে গত বছরের (২০২০ সাল) ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা উৎপাদন। এরপর একই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে কোভিড-১৯ পরীক্ষার মাধ্যমে শ্রমিকদের ভেতরে নেয়া হয় এবং প্রায় এক হাজার খনি শ্রমিকের মধ্যে ৬০৪ জন শ্রমিককে ভেতরে নিয়ে খনির কয়লা উত্তোলন কাজ শুরু হয়।

শ্রমিকদের অভিযোগ, খনির অভ্যন্তরে নেয়ার পর বিধি নিষেধ আরোপ করে বাইরে বের হওয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে ভেতরে আটকা পড়ে শ্রমিকরা। এই অবস্থায় খনির প্রধান গেট উন্মুক্ত করার দাবীতে শুক্রবার দুপুর থেকেই খনির প্রধান গেটে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা।  কিন্তু তিন দিনেও খনির প্রধান ফটক উম্মুক্ত না করা এবং শ্রমিকদের বের হওয়ার ব্যাপারে ফলপ্রসু কোন আলোচনা না হওয়ায় শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বাধ্য হয়েই রোববার রাত সোয়া ৮ টায় খনির প্রধান ফটকের পকেট গেট খুলে বের হয়ে আসে শ্রমিকরা। ফলে খনিতে শুধুমাত্র চীনা শ্রমিকদের দিয়ে তিন শিফটের পরিবর্তে এক শিফটে চলছে কয়লা উত্তোলন।

এদিকে দুপুরে ফুলবাড়ীতে শ্রমিকদের খনিতে অবাধ যাতায়াতের সুযোগ করে দিয়ে সকল শ্রমিককে কাজে যোগদান, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ ৪ দফা দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করেছে বড়পুকুরিয়া কয়লা শ্রমিক-কর্মচারি ইউনিয়ন।

সংবাদ সম্মেলনে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা নুর ইসলাম বলেন,পার্শ্ববর্তী মধ্যপাড়া পাথর খনিসহ দেশের সব প্রতিষ্ঠান উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজকর্ম চলছে। কিন্তু বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির শ্রমিকদের দীর্ঘদিন থেকে ভেতরে বন্দি অবস্থায় রাখা হয়েছিলো, খনি কর্তৃপক্ষ কালক্ষেপণ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নেয়ায় বাধ্য হয়েই শ্রমিকরা খনি থেকে বের হয়ে এসেছেন।

তিনি বলেন, খনির লকডাউন প্রত্যাহার করে সকল শ্রমিকদেরকে ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমে স্ব-স্ব কর্মস্থলে যোগদান করাতে হবে এবং খনির প্রধান ফটক উন্মুক্ত রাখতে হবে। সকল শ্রমিকের প্রোফিট বোনাসসহ বকেয়া বেতন ভাতা ও উৎসব ভাতা প্রদান করাসহ শ্রমিকদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

তিনি জানান, তাদের এই দাবী না মানা পর্যন্ত তারা কাজে যোগদান করবেন না। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা শামিম, মোস্তাফিজুর, মতিনুরসহ অন্যান্য শ্রমিকগণ।

এ ব্যাপারে সোমবার (৮ মার্চ) বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামানের সঙ্গে তার অফিসিয়াল মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by