দেশজুড়ে

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ভীড় শুরু করেছে পর্যটকরা

  প্রতিনিধি ৩ নভেম্বর ২০২৪ , ৭:১৫:১২ প্রিন্ট সংস্করণ

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ভীড় শুরু করেছে পর্যটকরা

পঞ্চগড়ের ‘তেঁতুলিয়া উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে মাঝে মাঝে উঁকি দিচ্ছে আকাশচুম্বী অপরুপ সৌন্দর্যের মায়াবী কাঞ্চনজঙ্ঘা। লাখো মানুষের ঘুম থেকে জেগে উঠে এক মায়াময় আনন্দ অনুভব। ভোরের চায়ে চুমুক দিতে দিতে সীমাহীন সুখানুভূতি ছড়িয়ে দিচ্ছে। আকাশ পরিস্কার থাকলে নীলাকাশে এমনই রূপের সৌন্দর্য ছড়িয়ে উদয় হয় কাঞ্চনজঙ্ঘা।

তেঁতুলিয়ায় কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পর্যটকের সমাগম ঘটেছে প্রতিনিয়ত। পর্যটকরা এ অঞ্চলের পর্যটন স্পট ডাকবাংলোর পিকনিক কর্ণার ও মহানন্দা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে দেখছেন রূপ সৌন্দর্য পর্বতমালা কাঞ্চনজঙ্ঘা। তারা দেখছেন, ছবি তুলছেন ও ভিডিও করে ছড়িয়ে দিচ্ছেন ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

তবে গত কয়েকদিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় তেমন দেখা মিলছে না কাঞ্চনজঙ্ঘার। এ জন্য অনেকেই হতাশ হয়ে ফিরছে। স্থানীয়রা জানায়, আকাশ পরিস্কার হলেও দেখা মিলবে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ সৌন্দর্য্য।

স্থানীয়রা জানায়, শরৎ, হেমন্ত আর শীতকালেই দেখা মেলে শে^তশুভ্র এই মহানায়কের। ভোরের আলো মেঘে জাগতে শুরু করে সে। তারপর ক্ষণে ক্ষণে রং পাল্টাতে থাকে। মাঝেমাঝে ভোর বেলা থেকে দুপুর পর্যন্ত দেখা যায় তাকে। জেগে ওঠার সাথে সাথে নানা রংয়ের খেলা শুরু হয়। ভোরের সূর্যেও আভা ছড়িয়ে পড়লে কাঞ্চন জংঘা হয়ে ওঠে লাল টকটকে। দিন পেরুনোর সাথে রং বদলাতে থাকে তার। কমলা, তার পর হলুদ, তারপর সাদা। অপার সৌন্দর্য্যওে বিস্তৃতি ঘটিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। মনে হয় হাসছে পাহাড় । তার শরীর ঘেষে চলে গেছে বিস্তৃত হিমালয়। সবুজ আর কালো রং মেখে হিমালয়ও হয়ে ওঠে অপরুপ ।

কাঞ্চনজঙ্ঘা পৃথিবীর তৃতীয় এবং হিমালয় পর্বতমালায় ২য় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ। কাঞ্চনজঙ্ঘার উচ্চতা প্রায় ২৮১৬৯ ফুট বা ৮৫৮৬ মিটার। এটি ভারতের সিকিম রাজ্যের সঙ্গে নেপালের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে অবস্থিত। কাঞ্চনজঙ্ঘা থেকে চারটি নদীর উৎপত্তি ঘটেছে। নদীগুলি বাংলাদেশেও প্রবাহিত হয়।

এখান থেকে এভারেস্ট শৃঙ্গের দূরত্ব কাছে থাকায় খুব কাছ থেকে দেখা মেলে অপরুপ সৌন্দর্যের মায়াবী কাঞ্চনজঙ্ঘা। প্রতিবছর অক্টোবরের ২য় সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে খালি চোখে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ সৌন্দর্য দেখা যায়। ছবির মতো ভেসে উঠা শে^তশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য ছাড়াও দেখা মেলে প্রতিবেশী দেশ ভারতের দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চল।

গত কয়েকদিন আগে তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো পিকনিক কর্নারে ঘুরতে আসা ঢাকা, সিরাজগঞ্জ থেকে নাহিদ ইসলামসহ ৬ জন জানায় কয়েক দিন ধরে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছিলনা দেখছিলাম অনলাইনের মাধ্যমে। আজকে আমরা একটু দেখতে পেয়েছি, এটাই আমাদের কাছে অনেক আনন্দের। খুব ভালো লাগলো এই এলাকায় এসে। ভালোলাগার অনুভূতিটাই অন্যরকম।

রাজশাহী থেকে পরিবার নিয়ে আসা নাসিম জানান, খুব আনন্দিত হয়েছি সমতলের চা বাগান দেখতে পেয়ে। কয়েকদিন ধরেই ফেসবুকে চোখ রাখছিলাম ও খোঁজ খবর রাখছিলাম দেখা যায় কীনা। আজ সকালে এসেই দেখতে দেখতে না পেয়ে মনটা ভীষন খারাপ হয়ে গেল। একই কথা জানান, পায়রা বেগম ও আব্দুল্লাহ আলমামুন।

এদিকে হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ ও পর্যটন ঘিরে গড়ে উঠেছে সরকারি-বেসরকারিভাবে আবাসন ব্যবস্থা। ফলে কাজের ক্ষেত্র বেড়েছে। কাঞ্চনজঙ্ঘা ঘিরে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। নাট্যদল ভূমিজ প্রতি বছর আয়োজন করছে কাঞ্চনজংঘা পালাটিয়া উৎসব।
ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে পর্যটকদের জন্য আমরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছি।

আমারা আমাদেরও কন্টাক্ট নম্বর গুলি বিভিন্ন জায়গায় বিল বোর্ডেও মাধ্যমে প্রদর্শন করেছি। জরুরী ফোন আসলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নিবো।

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি জানান, পর্যটকদের জন্য সকল ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারা যাতে স্বাচ্ছন্দে ভ্রমণ করে আনন্দ উপভোগ করতে পারে এ জন্য আমরা সার্বক্ষণিক সচেষ্ট আছি।

আরও খবর

Sponsered content