চট্টগ্রাম

আশ্রয়ণের ঘরে নারীর অর্ধগলিত মৃতদেহ

  প্রতিনিধি ২০ আগস্ট ২০২২ , ৭:৫৫:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের সরকারী আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি তালাবদ্ধ ঘরে আসমা আক্তার (৩০) নামের এক গৃহবধুর অর্ধগলিত মৃতদেহ পাওয়া গেছে।

শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে পুলিশ উপজেলার হাজিমারা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।

আসমা তার স্বামী খোকন গাজীর (৪০) সাথে ওই ঘরে বসবাস করতো। তবে খোকনের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। পারিবারিক বিরোধের জের ধরে আসমাকে হত্যা করে খোকন মৃতদেহ রেখে ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়ে গেছে বলে ধারণা পুলিশ ও স্থানীয়দের।

মৃত আসমা উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাচিয়া গ্রামের ওসমান দর্জির মেয়ে। সে খোকন গাজীর দ্বিতীয় স্ত্রী।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, শনিবার সকালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালাবদ্ধ একটি ঘর থেকে পঁচা দুর্গন্ধ পায় পাশের বাসিন্দারা। পরে তারা স্থানীয় হাজিমারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ দরজা খুলে একটি মৃতদেহ দেখতে পায়। দুপুরের দিকে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়৷

তারা আরও জানায়, সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত ঘরটি স্থানীয় জাকির নামে এক ব্যক্তির। তার ঘরে মাসিক ৫০০ টাকায় ভাড়া থাকতো আসমা-খোকন দম্পতি। তাদের মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে প্রায় ঝগড়া হতো। সর্বশেষ গত ১৭ আগস্ট আসমা বেগম ও তার স্বামী খোকন গাজীর মধ্যে ঝগড়া লাগে। পরে খোকন ঘরের দরজা তালাবদ্ধ করে চলে যায়।

আসমার মা অজুফা বেগম ও বোন পেয়ারা বেগম বলেন, আসমার স্বামী খোকন গাজীর বাড়ি বরিশাল জেলায়। কিন্তু সে নারায়ণগঞ্জে বসবাস করতো। খোকন গাজির সাথে আসমার পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রায় দুই বছর আগে বিয়ে হয়। আসমা খোকনের দ্বিতীয় স্ত্রী এবং খোকনের সাথে বিয়ের আগে আসমার আরেকটি বিয়ে হয়। ওই সংসারে তার এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। পরিবারের অমতে আগের সংসারের স্বামী-সন্তানদের রেখে সে খোকনকে বিয়ে করে।

তারা আরও জানায়, প্রায় দুই মাস আগে খোকনকে নিয়ে আসমা নারায়ণগঞ্জ থেকে তার পৈত্রিক বাড়িতে আসে। পরে মাস খানেক আগে জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে হাজিমারা আশ্রয়ণ প্রকল্পে থাকা একটি কক্ষ ভাড়া নেয় তারা। সে ঘরে তারা থাকতো এবং খোকন এ এলাকায় শ্রমিকের কাজ করতো। শনিবার ভাড়া বাসায় আসমার পঁচা মৃতদেহ পাওয়া যায়। তার স্বামী খোকন পালিয়ে যায়।

হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শওকত বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘরে ঢুকে আসমার পঁচা মৃতদেহ পাওয়া গেছে। মৃতদেহটি খাটে শোয়ানো ছিলো। তার স্বামী পলাতক রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি একটি হত্যাকান্ড বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

তিনি জানান, মৃতদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এদিকে, গত ১৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) দুপুরে একই উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দেবিপুর গ্রামের একটি সুপারী বাগান থেকে লায়লা নুর নিপু (২৫) নামে এক গৃহবধূর অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের। দুইদিনের ব্যবধানে পুলিশ দুই নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে। তারা দুইজন হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by