প্রতিনিধি ৬ জুলাই ২০২১ , ৭:৪১:০১ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ছোট বড় খামারে প্রায় ১৩ হাজার গবাদি পশু পালন করা হয়েছে। মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে উপজেলার পশুর হাটগুলোতে ইতিমধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পশুর হাটগুলো খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
স্বল্প পরিসরে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কোরবানীর পশু বিক্রির অনুমোদনে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন খামারিরা। আসন্ন ঈদে পশুগুলো বিক্রি করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের। খামারিদের দাবি গত ১ জুলাই বৃহস্পতিবার উপজেলার বৃহৎ পশুর হাট উলিপুর বাজারের গো-হাটিতে মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে আইন-শৃঙ্খলার উপর গুরুত্ব দিতে গিয়ে দু’চারটিও গবাদি পশু বিক্রি করতে পারেনি। এ অবস্থা উপজেলার অন্যান্য হাটেও। ফলে গবাদি পশুগুলো বিক্রি করা নিয়ে চিন্তিত আছেন খামারিরা। ঈদে পশুগুলো বিক্রি করতে না পারলে ব্যয়ভার বাড়তে থাকবে।
এতে গবাদি পশু পালনকারীরা চরম লোকসানের মুখে পড়বেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৮০-৯০ জন খামারি গবাদি পশু যার মধ্যে ষাঁড়, বলদ, গাভি, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া লালন-পালন করছেন। এদের সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। এছাড়াও ঈদকে সামনে রেখে তালিকার বাইরেও কেউ কেউ বাড়িতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গবাদি পশু পালন করেছেন।
পরিবেশ প্রতিকূল হওয়ায় বেচা-কেনা সহজ করতে চালু করা হয়েছে অনলাইন ব্যবস্থা। সূত্রটি আরও জানায়, উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে ‘অনলাইন কোরবানির পশুর হাট উলিপুর কুড়িগ্রাম’ নামে একটি প্লাটফর্ম চালু করা হয়েছে। সেখানে বিক্রেতারা বিক্রয়যোগ্য পশুর ছবি ও নাম, ঠিকানা আপলোড করতে পারবেন। অনলাইন সাইট থেকে বেচা-কেনার সাথে ক্রেতা-বিক্রেতারা লেনদেনও করতে পারবেন।
গুনাইগাছ ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়ী গ্রামের স্কুল শিক্ষক খামারী নাজমুল হোসাইন জানান, বেশ কিছুদিন থেকেই বিভিন্ন জাতের গরু লালন-পালন করে আসছি। কিছুদিন আগেও উপযুক্ত দামে ৬টি গরু বিক্রি করেছি। ঈদকে সামনে রেখে যে গরুগুলো লালন-পালন করছি ভালো দাম পেলে তা বিক্রি করবো। থেতরাই ইউনিয়নের দড়ি কিশোরপুর গ্রামের বাসিন্দা মিন্টু মিয়া জানান, আমার মৌমিতা খামারে বিক্রিযোগ্য ১১টি গরু রয়েছে যার প্রতিটির মূল্য প্রায় ২ দুই লক্ষ টাকার উপরে।
পৌরসভাস্থ ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাসুদ রানা জানান, ঈদকে সামনে রেখে পারিবারিকভাবে ২টি গরু লালন-পালন করেছি যার বর্তমান বাজার মূল্য ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। ঈদে বিক্রি করতে না পারলে ব্যয়ভার বেড়ে যাবে। এতে করে লোকসান গুনতে হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল আজিজ প্রধান বলেন, অন্যান্য বছরের তুলানায় এ বছর পশু লালন পালনের সংখ্যা বেড়েছে। খামারীদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, অনলাইন যে প্লাটফর্ম চালু করা হয়েছে সেখানে ইতিমধ্যে প্রায় ৫০-৬০ জন গবাদি পশু বিক্রেতা তাদের পশুর তথ্য আপলোড করেছেন।