রংপুর

উলিপুরে বাড়ছে ঠান্ডা জনিত রুগীর সংখ্যা 

  প্রতিনিধি ১১ জানুয়ারি ২০২৪ , ৩:১২:০১ প্রিন্ট সংস্করণ

উলিপুরে বাড়ছে ঠান্ডা জনিত রুগীর সংখ্যা

কুড়িগ্রামের উলিপুরে শীত ও কনকনে ঠান্ডায় শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডায়রিয়া ও ঠান্ডাজনিত রোগ। এতে শিশু ও বয়ষ্করা বেশী আকান্ত হচ্ছেন। ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ১০ দিনে ১’শ ১০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে আরো ৩’শ ২৭ জন। এছাড়া অনেকে বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বেসরকারি হাসপাতাল ও পল্লী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

উপজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া রোগীর চাপ সামলাতে হিমশীম খাচ্ছে কতৃপক্ষ। ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ড না থাকায় রোগীদের মেঝে ও বারান্দায় বিছানা পেতে থাকতে হচ্ছে।

হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে গত ০১ জানুয়ারি থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ দিনে ৩১০ জন ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রতিদিন হাসপাতাল ছাড়ছেন ২৫ থেকে ৩০ জন রোগী। আবার প্রতিদিন ঠান্ডাজনিত আক্রান্ত রুগী ভর্তি হচ্ছেন ২৫ থেকে ৩০ জন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডায়রিয়া রোগীর মধ্যে বেশীর ভাগই শিশু। এদের মধ্যে তীব্র ডায়রিয়ায় আব্দুল্লাহ (১৫ মাস), রোহান (১৪ মাস), মাসরাফি (১৫ মাস) রেদোয়ান (১৫ মাস) ও হুমায়ুন ইসলাম (৫ মাস) সহ আরও অনেক শিশু চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় বিছানা পেতেছেন অভিভাাবকরা। আবার কিছু শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে রোগী ও স্বজনদের দূর্ভোগের চিত্র দেখা গেছে। কতৃপক্ষ জানায় ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শাসকষ্ঠ ও সর্দিজরে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন গড়ে শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। শয্য সংকটের কারণে অনেককে মেঝে ও বারান্দায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শয্য সংকটেও তারা চকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

উপজেলার পৌরসভাধীন কাশিরখার এলাকার এলাকার বাসিন্দা বিপুল মিয়া ও তার স্তী ১৫ মাস বয়সী আব্দুল্লাহকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তারা জানান, ৫ দিন থেকে হাসপাতালে আছেন। তাদের ছেলে কযেকবার পাতলা পায়খানা ও বমি করলে তারা হাসপাতালে ভর্তি করান। এখন আব্দুল্লাহ অনেকটা সুস্থ আছে। 

এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শিশু রুগীর সাথে আসা ফুলতি বেগম তবকপুর রেলগেট একাকার, রওশনারা বেগম ও ফাতেমা বেগম তবকপুর বিজয়রাম এলাকা থেকে আসা বলেন, আমরা দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত হাসপাতালে আছি। ভিতরে শিশু ওয়ার্ড না থাকায় বাহিরে বিছানা পেতে অবস্থান করছি। 

হাসপাতালের ওয়ার্ড ইনচার্য মাহবুবা বেগম বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় শয্যা কম থাকায় ডায়রিয়া আকান্ত অনেক রোগীকে বারান্দায চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। তবে সেখানেও তাদের চিকিৎসার কোন ত্রুটি হচ্ছে না।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেশকাতুল আবেদ বলেন, গত কয়েকদিনের শীত বাড়ার সাথে সাথে ঠান্ডার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে শিশুদের ডায়রিয়া এবং বয়স্কদের শ্বাসকষ্টজনিত রোগ বেড়েছে। দিনে দিনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। তবে শিশু ওয়ার্ডের জন্য উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও কোন প্রতিকার পাইনি। সীমিত জনবল দিয়ে আমরা তাদের যথাসাধ্য চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি বলে জানান তিনি।

এদিকে কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, তাপমাত্রা আরও কয়েকদিন এমন থাকবে। তবে এ মাসে আরও একটি শৈত্যপ্রবাহ এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে। এতে করে শিশু ও বয়স্কদের একটু সমস্যা হতে পারে বলে জানান তিনি। 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by