রাজশাহী

উল্লাপাড়ায় সড়কের বেহাল দশা

  প্রতিনিধি ৯ জুন ২০২১ , ৭:০৪:১০ প্রিন্ট সংস্করণ

জয়নাল আবেদীন জয়, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) :

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার উধুনিয়া ইউনিয়নে চয়ড়া-উধুনিয়া বাজার আঞ্চলিক সড়কটির এখন বেহাল অবস্থা। রাস্তার মাঝে ভায়ড়া গ্রামের মধ্যে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার অংশে এখন এক হাঁটু কাদা। ভায়ড়া গ্রামের পাশেও বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হলেই জমে যায় পানি। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে প্রায় ৫ মাস এই রাস্তাটি পানি কাদায় পূর্ণ হয়ে থাকে।

ফলে এখানে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা স্থানীয় বাসিন্দারা পায়ে হেঁটেও এই রাস্তায় চলাচল করতে পারেন না। রাস্তাটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট উধুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বহুবার আবেদন জানিয়েছেন এলাকাবাসী। উধুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলছেন, এই রাস্তার পার্শ্ববর্তী ভায়ড়া গ্রামের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি বেশ কয়েকবছর ধরে সরকারি রাস্তার বেশ কিছু অংশ দখল করে মাটি ফেলে তাদের বাড়ির সীমানা বর্ধিত ও সংরক্ষণ করায় রাস্তাটির এই বেহাল দশা হয়েছে।

রাস্তা বেদখলের কারণেই তিনি এটি সংস্কারের উদ্যোগ নিতে পারছেন না। স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে আব্দুল মজিদ, আজিজুল হক, আব্দুস সামাদ ও ছাবেদ আলী অভিযোগ করেন, চয়ড়া থেকে উধুনিয়া বাজার পর্যন্ত এই কাঁচা রাস্তাটির দৈর্ঘ্য ৪ কিলোমিটার। রাস্তাটি ভায়ড়া গ্রামের মধ্য দিয়ে চলে গেছে। এই গ্রামের প্রভাবশালী আব্দুর রাজ্জাক, উজ্জল হোসেন, ইকবাল হোসেন, আলতাফ হোসেন ও শুকুর আলীর বাড়ি রাস্তার পাশে।

এরা জোরপূর্বক ওই রাস্তার বেশ কিছু অংশ দখল করে তাদের বাড়ির পরিধি বাড়ানো এবং সীমানা সংরক্ষণ করে ঘর নির্মাণ করেছেন। এতে রাস্তাটির প্রশস্থতাও অর্ধেক কমে গেছে। তার উপর রাস্তা থেকে মাটি নেওয়ায় গ্রামের মধ্যে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার অংশ ১ ফুটেরও বেশি গর্ত হয়ে গেছে। আর এই কারণে প্রতিবছর মে মাস থেকে নুন্যতম সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সময় রাস্তাটি পানি ও কাদায় পরিপূর্ণ হয়ে থাকে। পার্শ্ববর্তী বাড়িগুলোর ব্যবহৃত পানিও রাস্তার মধ্যে ফেলা হয়। আর এতে এই পথে মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

বিশেষ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এই পথে চলতে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ বিষয়টি নিয়ে তারা উল্লাপাড়া উপজেলা ভূমি অফিস ও উধুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একাধিকবার গণ আবেদনপত্র দাখিল করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি সরকারি রাস্তা। নেওয়া হয়নি রাস্তা সংস্কারের কোন উদ্যোগ।

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের মধ্যে ইকবাল হোসেন ও আলতাফ হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তারা জানান, চলনবিল অধ্যুষিত এলাকায় তাদের বাড়ি অবস্থিত হওয়ায় প্রতিবছর পানির ঢেউয়ের আঘাতে বাড়ির ভিটে অনেক ধুয়ে মুছে যায়। এজন্য প্রতিবছরই মাটি ফেলে বাড়ির সীমানা সংরক্ষণ করা হয়। তবে মাটি ফেলতে গিয়ে রাস্তার কিছু অংশ তাদের দখলে যেতে পারে বলে তারা স্বীকার করেন।

এ ব্যাপারে উধুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জানান, তিনি উপজেলা ভূমি অফিসের নির্দেশনায় স্থানীয় ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে উক্ত রাস্তার ভায়ড়া গ্রামের অংশে প্রভাবশালী রাস্তা দখলকারীদের উচ্ছেদের চেষ্টা করেও এখন পর্যন্ত সফল হননি। আর এজন্য রাস্তাটি উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এ বিষয়ে উল্লাপাড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান জানান, সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উধুনিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের মাধ্যমে তদন্ত করে অভিযোগের আংশিক সত্যতা মিলেছে। তবে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে তিনি ব্যক্তিগতভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন বলে উল্লেখ করেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by