দেশজুড়ে

করোনায় কর্মহীন ১০ হাজার তাঁত শ্রমিক: থমকে গেছে সাটুরিয়ার তাঁতপল্লী

  প্রতিনিধি ২৪ এপ্রিল ২০২১ , ৪:০৯:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ

মোঃ আনোয়ার হোসেন (মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি):

করোনার প্রভাবে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার ব্র্যান্ড তাঁত শিল্প হুমকির মুখে পড়েছে। বন্ধ হয়ে থেকে শত শত তাঁত কারখানা। থমকে গেছে তাঁতপল্লীর খটখট শব্দ। বেকার হয়ে পড়েছে হাজার হাজার তাঁত শ্রমিক। টানা বিশ দিন কর্মহীন থাকায় মানবেতরজীবন যাপন করছে তাঁত শ্রমিকরা।

অন্যদিকে, ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা যে ব্যবসার আশা করেছিলেন, তা মুখ থুবড়ে পড়ে গেছে। লোকসানে দিশেহারা হয়ে পড়ছে কারখানা মালিকরা। করোনার কারণে টাঙ্গাইলের করটিয়ার পাইকারি হাটে পাইকার না আসায় বেচা বিক্রি একদম বন্ধ। ফলে মালিকরা বন্ধ করে দিয়েছেন বেশির ভাগ তাঁত কারখানা।

জানা যায়, উপজেলার সাভার, আগ সাভার, বরাইদ, হামজা, জালশুকা, চাচিতারা, নাশুরপুর ও নতুন ভোঁয়া গ্রামে দুই হাজার পাওয়ার লুম ও হ্যান্ডলুম তাঁত রয়েছে। এসব কারখানায় প্রায় দশ হাজারের বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। এখানকার উৎপাদত শাড়ি, ওড়না ও থ্রি পিচ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হয়।

সারা বছর কম উৎপাদন হলেও ঈদের প্রায় তিন-চার সপ্তাহ আগে মালিক-শ্রমিক বেশী কাপড় উৎপাদন করে থাকে। কিন্তু ঈদের আর প্রায় তিন সপ্তাহ বাকি রয়েছে। এই সময়ে করোনার প্রভাবে তাঁত কারখানাগুলো বন্ধ থাকায় মালিক-শ্রমিক চরম ক্ষতির মধ্যে পড়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে তাঁত সমৃদ্র এলাকা। স্তব্ধতা বিরাজ করছে তাঁতপল্লীতে।

সাভার গ্রামের তাঁত মালিক আজিজুর রহমান জানান, করোনা মহামারি আকার ধারণ করেছে। তাই নিজেকে বাঁচাতে কাজ বন্ধ রেখে দিয়ে বাড়িতে আছি। কাজ বন্ধ করায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

আরেক মালিক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, তাঁতের কাজ করেই সংসার ও ছেলে মেয়েকে লেখাপড়া করাতাম। কিন্তু এই ভাইরাসের কারণে আমরা তাঁত বন্ধ করে দিয়েছি। সংসার ও ছেলে মেয়ে নিয়ে এখন বিপদে আছি। এ অবস্থায় সরকারের সহায়তা কামনা করছি।

তাঁত শ্রমিক জুলহাস উদ্দিন বলেন, মালিকপক্ষের কাজ না থাকায় তারা তাঁত কারখানা বন্ধ রেখেছে। ফলে আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি। সুতাকাটা নারী শ্রমিক রোজিনা আক্তার বলেন, কাজ না থাকায় কোন মতে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি।

১নং বরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ হারুন-অর-রশিদ বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাতে ইউনিয়নের সব তাঁত কারখানা বন্ধ রয়েছে। বরাদ্দ চেয়ে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে তাঁতিদের সহায়তা করা হবে।

সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁতশ্রমিকরা কাজ করতে পারবেন। এছাড়া সরকারি সহায়তা পেলে তাঁতিদের সহযোগিতা করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by