প্রতিনিধি ২০ এপ্রিল ২০২১ , ৪:০৩:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) বেলা ১২টায় সহযোগী স্বপন মাহমুদের ফেসবুকে লাইভে এসে এসব অভিযোগ করেন বসুরহাট পৌর মেয়র।
কাদের মির্জা বলেন, আমি আওয়ামী লীগের মূল সংগঠনে না থাকলেও বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদে আছি। আমি একজন প্রথম শ্রেণির পৌরসভার মেয়র। আমাকে একরাম-নিজামের (নোয়াখালী ও ফেনীর এমপি) লেলিয়ে দেওয়া পুলিশ এভাবে অপমান করতে পারে না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার সকালে আটককৃত সাত অনুসারীকে থানা হাজতে দেখতে যাই। এ সময় দায়িত্বরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সামিম কবির আমার গায়ে হাত দিয়েছেন। আর ওসি জাহেদুল আমার সহকারী সাজুর গায়েও হাত দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাঙলা ভাইদের মতো অপশক্তিরা (প্রতিপক্ষ) অস্ত্র নিয়ে থানায় গেলেও তাদের কিছু বলা হয় না। গত তিনটা মাস আমি, আমার পরিবার ও অনুসারীদের ওপর এই তাণ্ডব চলছে। আমার ছেলেসহ শতাধিক আহত হয়েছে, বিচার পাইনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সিরাজপুরের নব্যা (উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী) মানুষের ভিটে-বাড়ি বিক্রি করে লুটপাট করে খাচ্ছে। আমার এখান থেকে ৬০টা অটোরিকশার লাইসেন্স নিয়ে ৫ হাজার টাকা করে বিক্রি করেছে। তাকে পাওনাদাররা আক্রমণ করেছে, সেই ঘটনায়ও আমার ছেলেদের ফাঁসিয়ে দিচ্ছে।
কাদের মির্জা আপসোস করে বলেন, ‘আমরা এতিম, আমাদেরতো দেখার কেউ নেই। আমার ছেলের মাথা ফাঁটাইছে, আমাকে ছয় বার হত্যা করতে চেয়েছে, পৌরসভায় দুই হাজার গুলি করেছে, আমার ভাইয়ের ওপর বোমা হামলা করেছে; একটা ঘটনায়ও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
তিনি বলেন, মন্ত্রীর স্ত্রীর (ওবায়দুল কাদেরের সহধর্মিণী ইসরাতুন্নেছা কাদের) টাকা খেয়ে একতরফাভাবে কাজ করছে প্রশাসন। সচিব বেলায়েতের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা কালেকশন করে মন্ত্রীর স্ত্রী নিজে রাখে আর লন্ডনে তারেক জিয়ার জন্যও পাঠায়।
কাদের মির্জা বলেন, আমার ওপর এ অত্যাচার হচ্ছে, আওয়ামী লীগের কেউ একবারের জন্য খোঁজ নিতে আসেনি। পথহারা আওয়ামী লীগ, অপশক্তির আওয়ামী লীগ, অস্ত্রবাজ-টেন্ডারবাজদের আওয়ামী লীগ। এখন দেশের কোথাও ত্যাগীরা আর আওয়ামী লীগ করে না। এখনকার আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকেও বিচ্যুত।
তিনি বলেন, সচিব বেলায়েত (সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব) মন্ত্রীর বউয়ের (ওবায়দুল কাদেরের সহধর্মিণী) আত্মীয়। তাকে কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাটের প্রশাসনকে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এখন তার নির্দেশেই আমার ওপর এ হামলা হয়েছে।
কাদের মির্জা বলেন, নোয়াখালীর ডিসি (জেলা প্রশাসক খোরশেদ আলম) বিএনপি করে। সে চাকরি বাণিজ্য করে, একজন সচিব (ইউনিয়ন পরিষদের) নিয়োগে ২০ লাখ টাকা করে আদায় করে। এবারও ১০ জন সচিব থেকে ২০ লাখ টাকা করে নিয়ে একরামসহ ভাগ করে নিয়েছে।
কাদের মির্জা ওবায়দুল কাদেরকে ইঙ্গিত করে বলেন, যারা ক্ষমতায় থেকে আমাদের ওপর অত্যাচার করছেন, বলে দিতে চাই ক্ষমতা চিরস্থায়ী থাকে না। একদিন গণআদালতে আপনাদেরও বিচার হবে, আল্লাহর আদালতেও আপনাদের বিচার হবে।
এদিকে কাদের মির্জার গায়ে হাত দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সামিম কবির বলেন, উনার গায়ে হাত দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তিনি অনেক দূরে দাঁড়িয়ে রুক্ষভাবে কথা বললেও পুলিশ কোনো উচ্চবাচ্য করেনি। এ ছাড়া সবকিছু সিসিটিভি ফুটেজে ধারণ করা আছে।
ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন