চট্টগ্রাম

কুমিল্লা-৪ আসনে একই স্থানে ‘নৌকা-স্বতন্ত্রের অফিস নির্মাণ নিয়ে উত্তেজনা

  প্রতিনিধি ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৮:২৪:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ

কুমিল্লা-৪ আসনে একই স্থানে ‘নৌকা-স্বতন্ত্রের অফিস নির্মাণ নিয়ে উত্তেজনা

কুমিল্লা-৪ দেবীদ্বারে নির্বাচনী এলাকায় একই মালিকের একই ঘরে নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে ভাড়া নেয়াকে কেন্দ্র করে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। পুলিশ তাৎক্ষনিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনলেও, উভয় পক্ষের সংঘাত এড়াতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার কার্যালয়ে সমঝোতা বৈঠক ডেকে ওই জায়গায় নির্বাচনী অফিস নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়।

ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় উপজেলার ৯নং গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের বাঙ্গুরী বাজারে। ওই বাজারে বাঙ্গুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে একই মালিক থেকে একই জায়গায় একটি কার্যালয় আওয়ামী লীগ মনোনীত দু’বারে এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের ‘নৌকা’ প্রতীকের সমর্থক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগ কুমিল্লা (উঃ) জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদ্য উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগকারী আবুল কালাম আজাদের ‘ঈগল’ প্রতীকের সমর্থকগন নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে ভাড়া নেয়ার দাবীতে ওই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। 

স্বতন্ত্র প্রার্থী ‘ঈগল’ প্রতীকের আবুল কালাম আজাদের সমর্থক স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার মো. সহিদুল ইসলাম জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুকুল হোসেনের নির্দেশে বাঙ্গুরী বাজারে ভিটির মালিক মাওলানা আবু ইউছুফ খান থেকে অফিসটি ভাড়া নেই। অফিস ভাড়া বাবত ২ হাজার টাকা জামাল খানের মাধ্যমে পরিশোধ করি। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টায় ওই জায়গায় নৌকা প্রতীকের রাজী মোহাম্মদ এমপির সমর্থকরা পোষ্টার ব্যানার সাটিয়ে নৌকার অফিস তৈরী করে ফেলে। যা নিয়ে আজ (১৯ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার সকালে নৌকা সমর্থক এবং ঈগল’র সমর্থকদের মধ্যে মারমূখী অবস্থান দেখা দেয়।

‘নৌকা’ প্রতীকের সমর্থক ছাত্রলীগ নেতা আহাম্মেদ শুভ জানান, জমির মালিক পক্ষের সাথে কথা বলেই আমরা নৌকার অফিস তৈরী করি। এখন ঈগল’র সমর্থকরা দাবী করছে তারা ওই অফিস ভাড়া নিয়েছিল।

ওই ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে প্রশাসনের উদ্যোগে মঙ্গলবার বিকেলে উভয় পক্ষের নেতৃবৃন্দকে ডেকে এনে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়। বাঙ্গুরী বাজারের অফিসের জায়গার মালিক আবু ইউছুফ খানকে সভায় ডাকা হলেও তিনি সভায় উপস্থিত হননি।

বৈঠকে ওই বিরোধপূর্ণ কার্যালয়টি ভোট কেন্দ্র থেকে মাত্র ২০/২৫ গজ দূরে হওয়ায়, নিরাপত্তার স্বার্থে ‘নৌকা’ এবং ঈগল’র সমর্থকসহ কেহই তাদের নির্বাচনী প্রচারনার কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেনা বলে স্থানীয় প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেন। 

এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিগার সুলতানার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রায়হানুল অইসলাম, দেবীদ্বার সার্কেল এএসপি শাহ্ মোস্তফা তারিকুজ্জামান, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ ফারুক হোসেন, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নয়ন মিয়া, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাজী মোহাম্মদ ফখরুল (এমপির) সমর্থক উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান মোল্লা, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের ঈগল প্রতীকের সমর্থক গুনাইঘর (উঃ) ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ ইউপি সভাপতি মোকবল হোসেন মুকুলসহ গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।

এ ব্যাপারে জায়গার মালিক দেবীদ্বার হিলফুল স্কুলের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা আবু ইউছুফ খান সন্ধ্যায় জানান, প্রথমে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের লোকজন ভাড়া নেন। পরে নৌকার প্রার্থী রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের সমর্থক দেবীদ্বার পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম ওই অফিসটি ভাড়া নিতে কয়েকজন লোক পাঠান, আমি ভয়ে তাদেরকেও ভাড়া দেই। উভয় পক্ষই ভাড়ার টাকা অগ্রীম দিয়েছেন। বিষয়টি এতো জটিল হবে তা ভাবিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, আমরা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ ও গ্রহনযোগ্য করতে যা প্রয়োজন তাই করব। বিরোধপূর্ণ নির্বাচনী কার্যালয়টি ভোট কেন্দ্রের মাত্র ২০/২৫ গজ দূরে হওয়ায় নিরাপত্তার স্বার্থে ওই জায়গায় কোন প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় প্রতিষ্ঠায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by