ঢাকা

ক্লাসের ফার্স্ট বয় হয়েও সরকারি এস এম মডেল হাইস্কুলে ভর্তির সুযোগ পেলো না মেধাবী সিয়াম

  প্রতিনিধি ১৭ ডিসেম্বর ২০২১ , ৭:০৩:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ

 

কে এম সাইফুর রহমান, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

গোপালগঞ্জে কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না এস.এম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী ও ক্লাসের ফার্স্ট বয় সিয়াম মোল্লা’র কান্না।

গতকাল (১৫ ডিসেম্বর) বিকালে অনলাইন লটারিতে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর কাঙ্ক্ষিত গোপালগঞ্জ এস.এম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে সরাসরি তালিকায় তার নাম না এসে অপেক্ষামান তালিকায় আসার পর থেকেই অনবরতভাবে কেঁদেই চলেছে সে। কোন খাবারও মুখে নিচ্ছে না সে। সিয়ামের এহেন কর্মকান্ডে আক্ষেপ জানিয়েছেন তার পরিবার ও আত্মীয়—স্বজনসহ এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে খবর পেয়ে আমাদের প্রতিবেদক সরেজমিনে সিয়াম মোল্লাদের গোপালগঞ্জ শহরের ২৮৯, পাওয়ার হাউজ রোডের ভাড়ার বাসায় গিয়ে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পান। সিয়াম মোল্লার সাথে আলাপ হলে সে জানায়, মহান আল্লাহ পাকের রহমতে আমি ক্লাস ওয়ান থেকেই কৃতিত্বের সহিত পড়ালেখা করেছি, আমার মা—বাবা এবং স্কুলের শিক্ষক—শিক্ষিকা আমাকে সর্বদা সহযোগিতা করেছেন। ফলশ্রুতিতে আমি সবসময় ক্লাসের ফার্স্ট বয় হয়ে এসেছি। ভর্তি পরীক্ষা হলে এস.এম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া আমার জন্য কোনো ব্যাপার ছিলো না। আমি ইনশাল্লাহ মেধাতালিকায় অবস্থান করতাম। কিন্তু লটারিতে ভর্তির সুযোগ না পেয়ে আমার ওই স্কুলে পড়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। ওই স্কুলে যদি পড়ার সুযোগ পাই তাহলে আমি লেখাপড়া করবো। নতুবা লেখাপড়া করবো না। বিভিন্ন সময়ে আমার ফলাফলে তৎকালীন গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক স্যার সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আমাকে ক্রেস্ট সহ একাধিক পুরস্কারে ভূষিত করেছেন। কি হবে এইসব দিয়ে, আমি যদি ভালো স্কুলে লেখাপড়া করার সুযোগ না পাই। তাই আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ শিক্ষামন্ত্রী এবং আমাদের গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক স্যারের নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি আমাকে উক্ত স্কুলে ভর্তি করে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত সিয়াম মোল্লার বাবা মো. এনায়েত মোল্লার সাথে কথা হলে তিনিও ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর চরম বিপাকে পড়েছেন বলে জানান। ছেলে খাওয়া দাওয়া ছেড়ে প্রচুর কান্নাকাটি করছে। কিছুতেই থামছে না। খবর পেয়ে গ্রাম থেকে আমার অসুস্থ বাবা সহ আত্মীয়—স্বজনেরা এসে তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সে কিছুতেই তা মানছে না।

এ বিষয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী সিয়ামের দাদা শামসুল হক মোল্লা (৭২) কান্নাজড়িত কণ্ঠে আক্ষেপ করে বলেন, আমার পৌত্র সিয়াম আল্লাহর রহমতে খুবই মেধাবী ছাত্র। লটারি না করে, ভর্তি পরীক্ষা হলে, সে অবশ্যই এস.এম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পেত। আমি একজন বয়োঃবৃদ্ধ মানুষ হিসেবে আমার পৌত্রকে তার স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

 

 

Powered by