ঢাকা

গোপালগঞ্জে নিজ হাতে বানানো চেয়ার প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে পারলেন না বিল্লাল হোসেন 

  প্রতিনিধি ১৮ জুন ২০২১ , ৭:৪০:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ 

পরম যত্নে নিজ হাতে বানানো আলোচিত সেই চেয়ারটি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে পারলেন না গোপালগঞ্জ পৌর কৃষকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন। শুক্রবার (১৮ জুন) সকালে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন…
যতদূর জানাগেছে, বিল্লাল হোসেন মনে অনেক কষ্ট ও ক্ষোভ নিয়ে ইহলোক ত্যাগ করেন। পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন তিনি। লেখাপড়া খুব একটা না জানলেও তার মনটা ছিলো বেশ উদার। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর সুযোগ্য কন্যা, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র প্রতি ছিলো পরম শ্রদ্ধা ও গভীর ভালোবাসা। সদ্য প্রয়াত বিল্লাল হোসেন গোপালগঞ্জ পৌর কৃষকলীগের একসময়কার ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা হিসেবে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। পেশায় কাঠমিস্ত্রি হওয়ার সুবাদে ২০০৭ সালে তিনি নিজ হাতে ৫টা চেয়ার ও ১টি টেবিল তৈরি করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে উপহার পাঠিয়েছিলেন।
পরে বাস্তবজীবনে নানা চড়াই- উৎরাই পেরিয়ে জীবন যুদ্ধে হার না মানা সংগ্রামী সৈনিক মনের ক্ষোভে প্রবাসী জীবন যাপন করেন। নাড়ির টানে ব্রুনাই থেকে  দেশে ফিরে দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় একটি রাজকীয় চেয়াার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিবেন বলে তৈরি করেছেন।
২০১৯ সালে টুঙ্গিপাড়ায় নিজ হাতে বানানো সেই চেয়ারটি দিতে ব্যর্থ হন তিনি। পরে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় চেয়ারটি আর প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া  হয়ে ওঠেনি। আলোচিত সেই চেয়ারটি প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সহকারী -২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু’র নিকট রয়েছে বলে মৃত্যুর আগে জানান। সে আক্ষেপ করে বলেন, যখন সে তাঁর পরিবার-পরিজন ও দলকে কিছু দিতে পেরেছিলো, তখন তার বেশ কদর ছিলো। পরবর্তীতে বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক সমস্যায় সব হারিয়ে তিনি মানবেতর জীবন-যাপন করছিলো, তখন কেউ তার পাশে দাঁড়ায়নি, শত ডেকেও বিপদে কাউকে পাশে পাননি তিনি।
জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পরিবারের আপনজন ও মানবিক কোন নেতার সাহায্য না পেয়ে মনে প্রচুর কষ্ট ও চাপা ক্ষোভ নিয়ে দীর্ঘদিন প্রতীক্ষায় ছিলেন তিনি। পরে গোপালগঞ্জের মানবিক ডিসি শাহিদা সুলতানা বিষয়টি অবহিত হয়ে নিজ উদ্যোগে তাকে সুচিকিৎসার জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসার সুব্যবস্থা করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সবকিছু ছেড়ে তিনি মহান আল্লাহ পাকের ডাকে সাড়া দিয়ে শুক্রবার সকালে ইন্তেকাল করেন।
পরে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুর রহমানের তত্ত্বাবধানে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের উপস্থিতিতে গোপালগঞ্জ মারকাজ জামে মসজিদে শুক্রবার বিকালে তার জানাযা নামাজ আদায় শেষে পৌর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। মরহুম বিল্লাল হোসেনের রুহের মাগফিরাত কামনায় তার পরিবারের সদস্যরা ও গণমাধ্যমকর্মী কে এম সাইফুর রহমান সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by