চট্টগ্রাম

গ্যাস সংকটে চট্টগ্রামে বন্ধ হাঁড়ি ও গাড়ী

  প্রতিনিধি ১৪ মে ২০২৩ , ৬:৩২:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ

আবু তাহের, চট্টগ্রাম ব্যুরো :

ঘুণিঝড় মোখার প্রভাবে পূর্ব নোটিশ ছাড়াই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম নগরীর জনজীবনে নেমে এসেছে অবর্ণনীয় যন্ত্রণা। বাসা বাড়ীতে রান্নার চুলো না জ¦লায় হোটেল রেস্টুরেন্টে ভীড় করে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়েও হিমশিম খেতে হয়েছে নগরীর বাসিন্দাদের। সিলিন্ডার ব্যবহারকারীরা চিন্তামুক্ত থাকলেও বিপাকে পড়েছে লাইনের গ্যাস নির্ভর পরিবারের ৬লাখ পরিবারকে। অপরদিকে সিএনজি স্টেশনগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় গ্যাস না পেয়ে বন্ধ রয়েছে গাড়ীর চাকা। ফলে খাওয়া এবং যাতায়াত দুই ক্ষেত্রেই নেমে এসেছে স্থবিরতা। এর বাইরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন কমে যাওয়ায় শহর বন্দর এবং গ্রামজুড়ে ভয়াবহ লোডশেডিং শুরু হয়েছে

সূত্র জানিয়েছে, আমদানিকৃত এলএনজিবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগরের মহেশখালীর অদূরে দুটি ভাসমান টার্মিনালে খালাস করা হয়। ওখান থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে এলএনজি চট্টগ্রামের আনোয়ারা পর্যন্ত এনে জাতীয় গ্রীডের মূল সরবরাহ লাইনে প্রদান করা হয়। সুপার সাইক্লোন হয়ে উঠার শংকা দেখা দেয়ায় ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে এলএনজি খালাসের ভাসমান টার্মিনাল দুটিকে শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ নির্ধারিত স্থান থেকে সরিয়ে গভীর সমুদ্রে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে আমদানিকৃত এলএনজি খালাস পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। দেশে গত কিছুদিন ধরে প্রতিদিন গড়ে ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ দেয়া হচ্ছিল। মোখার কারণে এই ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ কমে গেছে। ফলে সারাদেশে গ্যাস সরবরাহে ভয়াবহ রকমের ধস নামে।

চট্টগ্রাম সারাদেশে গ্যাস সরবরাহ কমে যায়। এতে রান্নাবান্নার চুলা জ্বলা বন্ধ হয়ে যায় নগরীর বিভিন্ন এলাকায়। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে সিএনজি রি–ফুয়েলিং স্টেশনগুলোতে। এমনিতে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকলেও গতকাল সকাল থেকে সিএনজি স্টেশনগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত পুরোপুরি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পেট্রোবাংলার এই নির্দেশ অমান্য করে বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু সিএনজি স্টেশন গ্যাস বিক্রি করলেও অধিকাংশ স্টেশনই গ্যাস বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে সিএনজি নির্ভর যানবাহনগুলোকে ভয়াবহ রকমের সংকটে পড়তে হয়েছে। বিভিন্ন স্টেশনের সামনে অসংখ্য গাড়ি লাইন ধরে গ্যাসের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। ভয়াবহ অবস্থা দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও। এলএনজি সরবরাহ কমে যাওয়ায় দেশব্যাপী পিডিবির বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। ফলে চট্টগ্রামসহ পুরোদেশেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে রোববার (১৪ মে) নগরের বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টে দেখা গেছে খাবারের জন্য গ্রাহকদের লম্বা লাইন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও মিলছে না খাবার। অনেকে পাঠাও, সহজ ফুড, ফুড প্যাক ও ফুডপান্ডা অ্যাপস এর মাধ্যমে রেস্টুরেন্ট বা হোমমেড খাবার অর্ডার করছেন।

কেজিডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, মহেশখালীর দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ১৯ মে পর্যন্ত চট্টগ্রামজুড়ে গ্যাস সংকট থাকবে। বর্তমানে রিজার্ভ থেকে নিয়ে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। রিজার্ভে সাধারণত থাকে ৮০ থেকে ৮৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by