রংপুর

চারবার ভাঙনের শিকার এক বিদ্যালয়

  প্রতিনিধি ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৮:০৫:১৯ প্রিন্ট সংস্করণ

নীলফামারী প্রতিনিধি :

নীলফামারীর ডিমলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের পূর্ব ছাতুনামা আমিনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তিস্তা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। বিদ্যালয়টি এ নিয়ে চার বার ভাঙনের শিকার হলো। এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০৫। বারবার ভাঙনের ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষক-অভিভাবকরা। এবার বিদ্যালয়ের টিনের ঘরটি কোনোভাবে রক্ষা করা গেলেও আসবাবপত্র নদীগর্ভে চলে গেছে।

এদিকে, গত রবিবার থেকে বিদ্যালয় খোলার নির্দেশনা পাওয়ার পর তিন কিলোমিটার দূরে বাঁধের ওপর ঘর তুলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়টি ১৯৯১ সালে পূর্ব ছাতুনামা চরের ৪৬ শতক জমিতে স্থাপন করা হয়। এটা সরকারি হয় ২০১৩ সালে। সে সময় চরের ২৫০ জন শিক্ষার্থীর পদচারণায় বিদ্যালয়টি মুখর ছিল। এরপর থেকে বার বার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে।

টিনশেডের বিদ্যালয়টি পাকাকরণে ১০-১২ বার বরাদ্দ এলেও নদী ভাঙনের কারণে তা ফেরত চলে যায়। চার বার ভাঙনের শিকার নদীটি স্থান পরিবর্তন হওয়ায় এখন মূল জমি থেকে প্রায় তিন কিলেমিটার দূরে স্পার বাঁধের ওপর স্থান হয়েছে বিদ্যালয়টির। আমিনপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক চান মিয়া বলেন, ভাঙনের সময় সবাই নিজের ঘর-বাড়ি বাঁচাতে ব্যস্ত ছিল। সে সময় নৌকার মালিকের কাছ থেকে নৌকা ও লোকজন নিয়ে শুধু বিদ্যালয়ের টিনগুলো উদ্ধার করে নিয়ে আসেন প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান। আর আসবাবপত্র চোখের সামনে নদীতে বিলীন হয়ে যায়।

সহকারী শিক্ষক রকিবুল ইসলাম ও মোফাসেল হোসেন জানান, নদীতে ২২ জোড়া বেঞ্চ, আটটি চেয়ার, চারটি টেবিল ও দুইটি পুরাতন স্টিলের আলমারি বিলীন হয়ে গেছে। তবে করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় অফিসের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আগেই সরানো হয়েছে। তারা জানান, আকস্মিককভাবে বন্যার পানি কমে যাওয়ায় চরে ভাঙন শুরু হয়। চরের বাসিন্দারা নিজেদের সম্পদ রক্ষায় তখন ব্যস্ত। পরের দিন অন্যদের সহযোগিতা নিয়ে কোনোভাবে বিদ্যালয় ঘরটি রক্ষা করা গেছে।

প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান জানান, সরকারের নির্দেশনা মানতে বাঁধের ওপর বিদ্যালয় তুলে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করবো। শিশুদের মনোবল যাতে ভেঙে না যায়, সেজন্য পুরনো টিনগুলো দিয়ে তিন কক্ষের ঘর তৈরি করেছি। রবিবার বিদ্যালয় খোলার নির্দেশনা রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে আসবাবপত্র সংগ্রহ বা তৈরি করতে পাবো কি-না জানি না। তারপরও পাঠদানের চেষ্টা থাকবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাশ জানান, চরের এই প্রতিষ্ঠানটি আবারও চালু করতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। তিস্তায় স্কুলের মূল জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় পাকাকরণের অর্থ বারবার ফেরত চলে যায়। তবে নতুন করে বিদ্যালয়ের নামে জমি পেলে ভবনের অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন জানান, বিকল্পভাবে বিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। এ ছাড়া বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে দেওয়া হয়েছে। সরকারি অনুদান পেতে একটু সময় লাগবে। বরাদ্দ এলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by