দেশজুড়ে

জীবন ও জীবিকার জন্য কাজ করছে সরকার : তথ্যমন্ত্রী

  প্রতিনিধি ১৭ জুন ২০২০ , ১:৪০:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রাম ব্যুরো : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মানুষের জীবন রক্ষার পাশাপাশি সকারকে মানুষের জীবিকাকেও রক্ষা করতে হয়। সেই কারণে জীবন ও জীবিকা দুটোই রক্ষায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার নানাবিদ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকেই নানাবিদ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে প্রধানমন্ত্রী। সেই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করার কারণেই পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় আমাদের দেশের পরিস্থিতি এখনো অনেকটা ভালো। তিনি আজ বৃহস্পতিবার (৭ মে) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় সভায় এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন-‘ঢাকা অঞ্চলের তুলনায় চট্টগ্রাম অঞ্চলে এখনও করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অনেক ভালো। কিন্তু গত ২৩ এপ্রিলের পর থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যু বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রামে যাতে প্রতিদিন অন্তত ৫০০ নমুনা পরীক্ষা করা হয় সেজন্য কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তথ্যমন্ত্রী বলেন চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য মহানগরের হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল সরকারি ব্যবস্থাপনায় চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে ২০টি আইসিইউ ইউনিট, ৬০টি আইসোলেশন বেডসহ ১০০টি বেড স্থাপন করা হবে।

লকডাউন শিথিল করার বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে ইতালি, স্পেনসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই এখনও প্রতিদিন ২৫০-৩০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করছে সেখানেও লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। কারণ জীবন রক্ষার জন্য জীবিকাও রক্ষা করতে হবে। কিন্তু অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করেই এ কাজগুলো করতে হবে। সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে দোকানপাট সীমিত আকারে ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কেনা-বেচা করতে হবে। প্রতিটি শপিংমল, বিপণীবিতানের প্রবেশ পথে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার পাশাপাশি ডিজইনফেকশন চেম্বার বসানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

করোনা সঙ্কটে চট্টগ্রাম জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এতে বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত আসনের এমপি ওয়াসিকা আয়োশা খানম, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুখ, জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হাসান শাহরিয়ার কবির ও সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার দেশের একতৃতীয়াংশের বেশি মানুষকে নানাভাবে সহায়তার আওতায় এনেছে। এই বৈশিক দূর্যোগের সময় পৃথিবীর খুব বেশি দেশে এভাবে একতৃতীয়াংশ মানুষকে সরকারি সহায়তার আওতায় আনেনি। তিনি বলেন, স্পেন, ইতালি, সিঙ্গাপুরসহ পৃথিবীর অনেক দেশে যেখানে এখনো আড়াই থেকে তিন’শজন মানুষ মৃত্যুবরণ করছে সেখানে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। জীবন রক্ষা করার জন্য মানুষের জীবিকাকেও রক্ষা করতে হবে। কিন্তু সেজন্য আমাদেরকে অবশ্যই অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করেই এই কাজ গুলো করতে হবে। সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত সীমিত আকারে আগামী ১০ মে থেকে খোলার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। সেখানে কিছু নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী ড, হাছান মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রামের হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল আসলে কোন ব্যবস্থাপনায় পরিচালনা করা হবে সেটি নিয়ে একটা সিদ্ধান্তহীনতা ছিল। আজকে আমরা স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি সরকারি ব্যস্থাপনাতেই সেটি চালু করা হবে। সভার সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দেয়া হবে। সরকারী ব্যবস্থাপনায় চালু করতে হলেওতো কিছু আনুসাঙ্গিক কাজকর্ম আছে। সেগুলো করতে কিছুটা সময় লাগবে। চেষ্ঠা চলছে যতদ্রুত সম্ভব সেটা চালু করার।

করোনার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে দীর্ঘসময় ব্যয় হচ্ছে এতে আক্রান্তরা ঘুরে বেড়াচ্ছে ও ছড়াচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আজকের সভায় বলা হয়েছে আগে টেস্টের রিপোর্ট পেতে সাতদিন লাগতো। এখন সেটি কমিয়ে চারদিনে এনেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও আরেকটি করোনা পরীক্ষার ল্যাব চালুর বিষয়ে চেষ্ঠা চলছে বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক সভায় জানিয়েছেন।

চট্টগ্রামে অন্তত প্রতিদিন ৫’শ নমুনা পরীক্ষা যাতে করা যায় সেই চেষ্ঠা চলছে। ক্রমান্বয়ে এসমস্যা কমে যাবে। যেসমস্ত ব্যক্তি নমুনা পরীক্ষার জন্য দিয়েছে তারা যাতে আর কারো সাথে না মিশেন সেই অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনিতো নিজেকে সন্দেহ মনে করেই নমুনা পরীক্ষায় দিয়েছেন। পরীক্ষার জন্য পাঠানোর পর নিজের মধ্যে যেহেতু সন্দেহ হয় তখন থেকে যেন তিনি কারো সাথে মেলামেশা না করেন। মার্কেট ও মসজিদ খুলে দেয়ায় সংক্রমণ বাড়বে কিনা এক সাংবাদিকের প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সবাই যদি সম্মিলিতভাবে মানুষকে সচেতন করতে পারি তাহলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা অনেক সহজ হবে। এজন্য গণমাধ্যমকর্মীরা শুরু থেকেই প্রচারণা চালাচ্ছেন। কেউ যাতে অপ্রয়োজনে বাজারে না যান, মানুষ যাতে সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট ও মসজিদে যান।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মার্কেটগুলোর প্রবেশ পথে ডিজইনফেকশন চেম্বার স্থাপন করতে হবে। মাস্ক স্যানিটাইজারের পাশাপাশি যদি মার্কেটে ঢুকার সময় ডিজইনফেকশন চেম্বারের মাধ্যমে প্রবেশ করেন তাহলে ডিজইনফেক্টেড হয়ে যাবে। প্রতিটি শপিংমল ও বিপনী বিতানের সামনে স্বাস্থ্য বিষয়ক সতর্কবাণী না মানলে মৃত্যুর ঝুঁকি আছে এমন ব্যানার সাঁটাতে হবে। এবং প্রবেশ পথে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এবং ক্রেতা বিক্রেতা সবাইকে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সামাজিক ও শারিরীক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, করোনা রোগী সনাক্ত হবার কারণে বিভিন্ন জায়গায় লকডাউন করতে হচ্ছে। যেখানে লকডাউন হয় সেখানে দুইপাশে পুলিশ থাকতে হয়। কিন্তু আমাদের পুলিশ ফোর্স সীমিত। আক্রান্ত আরো যখন বাড়বে তখন আরো বেশি পুলিশের

আরও খবর

Sponsered content

Powered by