বাংলাদেশ

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছি: মেয়র তাপস

  প্রতিনিধি ২৬ আগস্ট ২০২৩ , ৫:২০:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ‘দিনব্যাপী বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের মাধ্যমে আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছি। গত বৃহস্পতিবারও আমাদের রোগীর সংখ্যা ৭০-এর নিচে চলে এসেছে। কিন্তু সেখানে আমরা কোনো সন্তুষ্টির ঢেকুর নিতে চাই না।’

আজ শনিবার দুপুর ১২টায় বাসাবো কালিমন্দির সংলগ্ন এলাকায় ডেঙ্গু রোগ বিস্তাররোধে মশক নিধনে জনসম্পৃক্ততা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ পরবর্তী গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মেয়র এ মন্তব্য করেন।

তাপস বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপেরেশনের ৭৫টা ওয়ার্ডের মধ্যে যেসব ওয়ার্ডে ১০ জনের বেশি রোগী পেয়েছি, সেসব ওয়ার্ডকে আমরা “লাল চিহ্নিত” করেছি। লাল চিহ্নিত মানে “বিপজ্জনক”। সেখানে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এ আশঙ্কা থেকেই আমরা লাল চিহ্নিত করেছি এবং এলাকাবাসীকে সম্পৃক্ত করেছি। বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসা, বাড়ির মালিক, সকল স্থাপনার মালিক, সকল সামাজিক সংগঠন, রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউটস সবাইকে সম্পৃক্ত করে এই ওয়ার্ডগুলোতে আমরা দিনব্যাপী বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং সকালে লার্ভিসাইডিং ও বিকেলে এডাল্টিসাইডিংসহ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করব। যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের এই কার্যক্রমে এগিয়ে এসেছে এবং অংশগ্রহণ করেছে আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’

এ কার্যক্রমের লক্ষ্য উল্লেখ করে মেয়র তাপস বলেন, ‘এটা ভরা মৌসুম। এখানো বর্ষা শেষ হয়নি। গতকালও বৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং পানি কিন্তু কিছুক্ষণ পরপরই জমবে। যেহেতু ভাদ্র মাস ভরা মৌসুম সুতরাং মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম আমরা আরও বেগবান করেছি। যেহেতু আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি সেহেতু এই সুযোগে আমরা যদি একদম নির্মূলের পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে সামনের দিনে আর বাড়তে পারবে না। আমাদের লক্ষ্য হলো মশক প্রজননের আধার বিনষ্ট করা। আমরা যতই সোর্স রিডাকশন করতে পারব আমাদের কার্যক্রম ততই ফলপ্রসূ হবে। এজন্য জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করতে আমরা এই কার্যক্রম নিয়েছি।’

মার্শাল এগ্রোভেট নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাপস বলেন, ‘আমরা কারও মাধ্যমে (কীটনাশক) আমদানি করি না। ২০১৯ সালের পর থেকে আমরা সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী উৎপাদনকারীর কাছ হতে সরাসরি আমদানি করি। সে প্রতিষ্ঠানও কিন্তু সরকার কর্তৃক নির্ধারিত। সেখানে সকল অনুমতি যেমন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অনুমতি, কীটনাশক যারা নিয়ন্ত্রণ করেন তাদের অনুমতি নেওয়া রয়েছে এবং আমাদের কীটনাশক কমিটি আমাদের যে কীটনাশক নির্ধারণ করে দেয় এর বাইরে আমরা কোনো কীটনাশক ব্যবহার করি না। আমরা শুধু (আমদানিকৃত কীটনাশকের) মিশ্রণটা উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে করে থাকি। উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে যথাযথভাবে এবং আমাদের নির্ধারিত মূল্যের চাইতে কম মূল্যে তারা কাজ পেয়েছে। আমাদের সঙ্গে তাদের যে চুক্তি এখন পর্যন্ত আমরা সেটির কোনো ব্যত্যয় লক্ষ্য করিনি। সুতরাং অন্য কোথাও ঘটনা ঘটলেও আমাদের এখানে এ ধরনের (ঘটনা ঘটানোর) কোনো সুযোগ নেই।’

যথাসময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জরিপের ফলাফল জানানোর আহ্বান জানিয়ে তাপস আরও বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরিপের ওপরই নির্ভর করি। প্রাক-মৌসুম যে জরিপ হয়েছে, সে জরিপ অনুযায়ী আমরা ইতোমধ্যে কাজ সম্পন্ন করেছি। এখন মৌসুমের যে জরিপ সেটার জন্য আমরা অপেক্ষায় আছি। এখানে একটি বিষয়, প্রাক-মৌসুম জরিপটা অনেক বিলম্বিত হয়েছিল। আমরা আশা করব যে, ভরা মৌসুমের জরিপটা যেন আমরা যথাসময়ে পায়। তাহলে আমাদের কার্যক্রমটা আরও কার্যকরভাবে নিতে পারব।’

এ ছাড়া মেয়র তাপস হাজারীবাগের ৫ নম্বর ওয়ার্ড এবং কদমতলীর ৫৩ ও ৬০ নম্বর ওয়ার্ডেও ডেঙ্গু রোগ বিস্তাররোধে মশক নিধনে জনসম্পৃক্ততা কার্যক্রমে অংশ নেন।

এ সময় করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, ২ নম্বর অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সুয়ে মেন জো, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চিত্তরঞ্জন দাসসহ সংশ্লিষ্ট অঞ্চল ও ওয়ার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কাউন্সিলররা অংশ নেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by