দেশজুড়ে

ত্রিমুখী লড়াইয়ে জমজমাট মৌলভীবাজার-২ আসনের ভোট

  প্রতিনিধি ৩ জানুয়ারি ২০২৪ , ৮:০৯:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ

ত্রিমুখী লড়াইয়ে জমজমাট মৌলভীবাজার-২ আসনের ভোট

ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা একটি উপজেলা কুলাউড়া। এর চেয়ে বড় পরিচয় চায়ের এলাকা হিসেবে পরিচিত এলাকাটি। ১টি পৌরসভা ও ১৩ ইউনিয়ন নিয়ে মৌলভীবাজার -২ আসনে জমে উঠেছে ভোটের লড়াই। এখানে মোট ভোটার২লাখ ৮৫হাজার ৪৭৬জন। এর মধ্যেই চা শ্রমিক ও সংখ্যালঘু লক্ষাধিক ভোটার রয়েছে। যারা বরাবরের মতো জয়ে ভূমিকা রাখে।

প্রধান রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি এ নির্বাচন বর্জন করলেও এখানে কোনকিছুরই কমতি নেই। জেলার অন্য আসনগুলোতে নির্বাচনী প্রচার না জমলেও এখানে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়াচ্ছে প্রথম থেকেই। নানা ধর্ম ও বর্নের মানুষের অবস্থান রয়েছে এই এলাকায়। প্রার্থী রয়েছে অনেক। পোস্টারে ছেয়ে গেছে শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম। প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। বাজারে বাজারে ঢাক ঢোল, তবলা বাজিয়ে গানের সুরে সুরে চলছে প্রচার।

এ আসনে নানা সমীকরণের উপর ভর করে এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছে আটজন। এর মধ্যে আওয়ামীলীগেরই তিনজন। প্রচারনার শেষ সময়ে এসে মূল লড়াইয়ে এসেছে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতিকের শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা একেএম শফি আহমদ সলমান(ট্রাক)ও আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মতিন (কাঁচি)। এছাড়াও তাদের সাথে সমানতালে প্রচারনায় মাঠে রয়েছেন প্রার্থী সাবেক এমপি এম এম শাহীন (সোনালী আঁশ)

ভোটাররা বলছেন এবারের নির্বাচনে মূল লড়াই হবে আওয়ামীলীগের প্রার্থী নাদেল ও সাবেক এমপি এমএম শাহিনের মধ্যে। এমএম শাহীন ১৯৯৬সালে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করলেও ২০০১সালে স্বতন্ত্র হয়ে জয়লাভ করেন। বিএনপি ঘেঁষা বিবেচনায় তার নিজস্ব একটি ভোটব্যাংক রয়েছে।

একাদশ সংসদে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ধানের শীষ প্রতিকে নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি এলাকায় তেমন আসেনি, এলাকাও ছিল উন্নয়ন বঞ্চিত। তবে এলাকাটিতে এবার যোগ্য নেতা নির্বাচনে ভুল করবেন না ভোটাররা। তারা বলছেন, বিগত কয়েকবছর তেমন উন্নয়ন হয়নি। বিশেষ করে ৩০হাজার চা শ্রমিকের জীবন মান উন্নয়ণ হয়নি। তাই এবার এমন প্রার্থীকেই বাছাই করবেন যিনি এলাকাবাসীর জন্য কাজ করবেন।

পৌর এলাকার বাসিন্দা এমারত হোসেন বলেন, এখানে বিগত কয়েক বছর ধরে তেমন উন্নয়ণ হয়নি। এলাকায় উন্নয়ণ এম এম শাহীন দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য থাকার সময় দৃশ্যমান হয়েছিল। তাই ভোটাররা এবার ভিন্ন চিন্তা করছেন। তবে সুষ্ঠ ভোট হওয়ার আশংকাও রয়েছে তাদের মধ্যে।

আওয়ামী লীগের তিন নেতাই মাঠে সমান ভাবে প্রচারনা চালাচ্ছেন। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এই সুযোগে নৌকার ভোট ভাগ হওয়ার আশা দেখছেন স্থানীয়রা, এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন সাবেক সংসদ সদস্য শাহিন। চা শ্রমিকদের মধ্যে জনপ্রিয় হিসেবে ব্যক্তিগত একটি ভোট ব্যাংকও রয়েছে তার।তবে নানা আশংকার কথাও জানালেন তিনি। তিনি বলেন,আমার ভোটার সাধারণ মানুষ। আমি সবদলের মানুষের প্রার্থী। নির্বাচনী পরিবেশ এতোদিন ভালো থাকলেও শেষ সময়ে এসে বহিরাগত লোকজনের আনাগোনা বেড়েছে। তারা নির্বাচনের দিন ঝামেলা করতে পারে। এতোদিন এ পরিস্থিতি ভালো থাকলেও এখন হতাশা তৈরী হয়েছে।

তবে নৌকার প্রার্থী, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলছেন, পিছিয়ে পড়া কুলাউড়ার উন্নয়নের জন্যই তিনি প্রার্থী হয়েছেন, ভোটাররা উন্নয়ণের জন্যই তাকে এবার নির্বাচিত করবেন।

এ আসনে অন্য প্রার্থীরা হলেও, জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতিকের আব্দুল মালিক, এনামুল হক মাহতাব মোমবাতি, বিকল্পধারার কামরুজ্জামান সিমু(কুলা), ইসলামী ঐক্যজোটের আসলাম হোসেন রহমানী (মিনার)।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by