বাংলাদেশ

দেশে দুর্ভিক্ষের মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে: ফখরুল

  প্রতিনিধি ১৫ মার্চ ২০২২ , ৭:০৪:০১ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

দেশে এখন দুর্ভিক্ষের মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই এই অবস্থা তৈরি হয়।

আজ মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘মা তার সন্তানকে খেতে দিতে না পারার কারণে সন্তানের মুখে বিষ তুলে দিয়ে নিজে বিষ খেয়ে মরছেন। ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে মরছেন। গলায় দঁড়ি দিয়ে মরছেন। অহরহ ঘটছে এসব।

‘‌এই অবস্থায় জনগণের সঙ্গে রসিকতা করে, মশকরা করে বলা হয় জনগণের আয় বাড়ছে। জনগণ ভালো আছে।‌’

ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই তারা এ দেশকে দুর্ভিক্ষের মধ্যে ফেলেছে। ১৯৭৪ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল, তখন এ দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। তখন না খেয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গেছে। এক টুকরো রুটির জন্য মানুষ আর কুকুর টানাটানি করেছে। সেদিন বাসন্তী লজ্জা নিবারণের জন্য এক খণ্ড কাপড় পায় নাই, মাছ ধরার জাল দিয়ে লজ্জা নিবারণ করেছে। আজ একই অবস্থা শুরু হয়েছে।’

পণ্যমূল্য নিয়ে জনগণের কষ্ট ক্ষমতাসীনরা বুঝতে পারছেন না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘জনগণ কেমন আছে তা দেখতে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা রাস্তায় বেরিয়ে আসুন। এসি রুমে বসে মানুষের দুঃখ বুঝতে পারছে না ক্ষমতাসীনরা।

‘দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে বলছে ক্ষমতাসীনরা। সাধারণ মানুষের আয় কিন্তু ১৫ হাজার টাকার বেশি নয়। তার থেকে ক্ষমতাসীনদের আয় অনেক বেশি।’

‘মাসে এক হাজার কোটি টাকা যাদের আয়, তাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের গড় আয় মিলিয়ে জনগণকে বোকা বানাচ্ছে সরকার। মাথাপিছু আয়ের মিথ্যা বক্তব্য আর উন্নয়নের বুলি শুভংকরের ফাঁকি ছাড়া কিছু নয়, দেশের মানুষকে এর মাধ্যমে বোকা বানাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা।’

আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশে বিএনপি নেতা বলেন, ‘ওনারা (আওয়ামী লীগের নেতারা) বলেন আমরা নাকি বেশি বুঝি, সব জায়গায় মাতব্বরি করি। এটা একটা অরাজনৈতিক ভাষা, অশালীন ভাষা। এটা মাতব্বরি করার প্রশ্ন নয়, ওনাদের জানতে হবে।’

এই সরকার দেশের সব অর্জন নষ্ট করে, বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ফকরুল। বলেন, ‘‌ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে, পুরোপুরিভাবে ক্রীতদাস করার সব ব্যবস্থা তারা করেছে।’

সরকার নির্বাচন কমিশন নিয়ে ‘নতুন নাটক’ শুরু করেছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘‌সে নাটক হচ্ছে বিভিন্ন পেশার, বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলা।

‘গত পরশু দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করছে। ৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, এসেছেন মাত্র ১৩ জন। সেখানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেছেন, এই তামাশাগুলো কেন করছেন? নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার যদি না থাকে তাহলে নির্বাচন কখনই সুষ্ঠু করা যাবে না।’

দেশে জনগণের সরকার নেই বলেও মনে করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘জনগণের সরকার করতে হলে অবশ্যই একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে নির্বাচনকালীন একটা নিরপেক্ষ সরকার লাগবে। যা আওয়ামী লীগের অধীনে হবে না।’

আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, আব্দুস সালাম আজাদ, সাবেক কৃষকদল নেতা সাধন মিয়া সম্রাটসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by