বরিশাল

পাথরঘাটায় ৬টি পাওয়ার টিলার ও ৮টি সিডার মেশিন পাচারের সময় স্থানীয়দের হাতে আটক 

  প্রতিনিধি ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ , ৬:৫১:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ

সাকিল আহমেদ পাথরঘাটা বরগুনা প্রতিনিধি :

বরগুনার পাথরঘাটায় একটি ট্রাকে ৬ টি পাওয়ার টিলার ও ৮ টি ধান চাষের সিডার মেশিন রাতের আধারে পাচারের সময় স্থানীয়রা আটকে দেয়। পরে পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবিরের মাধ্যমে পাথরঘাটা থানা পুলিশের হেফাজতে দেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাঁঠালতলী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম।

জব্দ করা কৃষি যান্তিক মেশিন গুলো কৃষি সম্প্রসারণের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দিয়ে বিতরণের বলে মনে করছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিশির কুমার বড়াল।

১৫ ডিসেম্বর রাত সাড়ে নয়টার দিকে পাথরঘাটা ঢাকা মহা-সড়কের কাঁঠালতলী ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা থেকে এগুলো জব্দ করে পুলিশ হেফাজতে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে একলাখ চল্লিশ হাজার টাকা ভর্তুকি দিয়ে কৃষকের কাছ থেকে একলাখ আট হাজার টাকার বিনিময়ে কৃষিযান্ত্রীক করনের লক্ষে পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিতরণ করা হয় ১১৪ টি পাওয়ার টিলার ও সিডার মেশিন।

কাঁঠালতলী ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা আবদুল জলিল ডিলার জানান, ১৫ ডিসেম্বর রাতে স্থানীয়রা সরকারের ভর্তুকি দেয়া কৃষি যান্তিক মেশিন ট্রাকে করে পাচার হচ্ছে দেখে স্থানীয়রা জব্দ করে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে থানা পুলিশের হেফাজতে দিয়ে দেয়া হয়। এর আগেও বেশ কয়েকবার এই এলাকা থেকে ট্রাক ভরে কৃষি পণ্য পাচার করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, কাঁঠালতলী এলাকার প্রিন্স, আব্বুস সোবহান ও তার ভাই সত্তার সহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী গ্রাম থেকে সরকারের পক্ষ ভর্তুকি দেয়া কৃষি যান্তিক মেশিন সংগ্রহ করে যশোর খুলনা এলাকায় বিক্রি করে।

স্থানীয় গ্রাম পুলিশ মনোরঞ্জন জানান সরকারের দেয়া কৃষি মালামাল গুলো এলাকার কৃষকরা পায় না। কৃষি অফিসের মাধ্যমে প্রভাশালী ব্যাক্তীরা এগুলো কম দামে কিনে বেশী দামে বিক্রি করে দেয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যাক্তি জানান, পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিশির কুমার বড়াল ও অফিসের লোকজন এর সাথে জড়িত রয়েছে। অফিসের লোকজন ম্যানেজ করেই প্রভাবশালী লোকজন সরকারের ভর্তুকি দেয়া মালামাল ক্রয়করে তা মোটা অংকে বিক্রি করে পাচার করে দিচ্ছে।

সরকারি মালামাল অবৈধভাবে ক্রয় করার বিষয়ে অভিযুক্ত সত্তারের সাথে যোগাযোগ করলে আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের প্রভাবশালী নেতারা প্রতিবেদকের সাথে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। আরেক অভিযুক্ত সোবহান জানান, তার ভাই সত্তার এই মেশিন গুলো এলাকা থেকে কিনে বিক্রি ও ভাড়া দেয়ার জন্য অন্য এলাকায় পাঠানো হচ্ছিল। তবে এর কোন বৈধতা আছে কিনা জানতে চাইলে সোবহানের ছেলে এসমাইল সাংবাদিকদের উপর তেরে আসেন।

এবিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিশির কুমার বড়াল ভোরের দর্পনকে জানান, ভর্তুকি দিয়ে বিতরণ করা কৃষি যান্ত্রিক মেশিন দুই বছরের আগে বিক্রি করার অনুমোদন নেই। এছাড়াও কেউ নিয়ে ভাড়ায় খাটালে তাতেও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অনুমোদন নিতে হবে। তবে জব্দ হওয়া মামলা গুলো কাদের এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। তদন্তের পরে বিষয়টি জানা যাবে। যাছাই বাছাই ও বিতরনের কোন অনিয়ম হয়নি বলেও জানান।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by