ঢাকা

পেঁয়াজ চাষে কৃষকের হতাশা

  প্রতিনিধি ৫ এপ্রিল ২০২২ , ৭:১০:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ

রতন মাহমুদ (পাংশা, রাজবাড়ী প্রতিনিধি):

সারা দেশের মধ্যে পেঁয়াজ চাষে অন্যতম রাজবাড়ী জেলা। এবছর জেলার পাংশা উপজেলায় আশানুরূপ ফলন হয়নি পেঁয়াজের। অন্যদিকে বাজারে পেঁয়াজের দাম কম থাকায় হতাশায় পড়েছে কৃষকেরা।

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় গত কয়েকদিন ধরে মাঠ থেকে পেঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা।

মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) উপজেলার মৌরাট, পাট্টা, সরিষা, কসবামাজাই, কলিমহর ও মাছপাড়া ইউনিয়ন সহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঠ ঘুড়ে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানাযায়, গত বছরের তুলনায় একই জমিতে এ বছর পেঁয়াজের ফলন অনেক কম হয়েছে। পেঁয়াজের চাড়া রোপনের পর পরই বৃষ্টি হওয়ায় ফলন কম হয়েছে। বিঘা প্রতি জমিতে পেঁয়াজ চাষে যে পরিমান টাকা খরচ হয়েছে তার তুলনায় বর্তমান বাজারে পেঁয়াজের দাম কম হওয়ায় এবার উৎপাদন খরচ উঠছে না। গত দুই বছরের তুলনায় এবার প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কমায় হতাশা প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা। তাদের দাবি, সরকারি উদ্যোগে পেঁয়াজ সংরক্ষণের হিমাগার নির্মাণ করার।

মৌরাট ইউনিয়নের মালঞ্চি মিয়াপাড়া মাঠে পেঁয়াজ উত্তোলনের সময় কৃষক মোঃ সাইদুল ইসলাম জানান, এবার প্রতি বিঘা (৩৩শতাং) জমিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে ৩৫-৪০ মন পেঁয়াজ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় অনেক কম।

কৃষক মনছুর রহমান (মধু) বলেন, এ বছর পেঁয়াজের ফলন অনুযায়ী প্রতি মন পেঁয়াজে ১১-১২ শত টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমান বাজারে পেঁয়াজের দাম অনুযায়ী আমাদের যে পরিমান আর্থিক ক্ষতি হবে তা পুরোন করার মত নয়।

মাছপাড়া ইউনিয়নের কৃষক আবু বক্কর খান বলেন, দিন প্রতি প্রতিটি দিন মুজুরের দাম ৬-৭শত টাকা। পেঁয়াজ বিক্রয় করে দিন মুজুরদের টাকা দিতে হয়। আমরা পেঁয়াজ মজুদ রাখতে পারি না।

গত শনিবার (২এপ্রিল) উপজেলার মৌরাট ইউনিয়নের বাগদুলী পেঁয়াজ হাঠে গিয়ে বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানাযায়, প্রতিমন ভালো মানের পেঁয়াজের সর্বোচ্চ দাম হয়েছে ৭৫০ টাকা। লোকসান হলেও দিনমজুরদের টাকা দেওয়ার জন্য পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।

পেঁয়াজ হাটের আড়তদার মকছেদ আলী বলেন, আমরা এখান থেকে পেঁয়াজ ক্রয় করে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাই। পেঁয়াজের রপতানি না থাকায় এবং বাইরে থেকে পেঁয়াজ আসায় দেশের বাজার দর পড়ে গেছে। একসঙ্গে সারাদেশের পেঁয়াজ বাজারে আসায় চাহিদা কম।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার ঘোষ জানান, গত বছর উপজেলায় ৮ হাজার ৮৮৬ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছিল। তাতে ফলন হয়েছিল ১ লক্ষ ১৪ হাজার ৬৪৭ মেট্রিকটন। চলতি বছর ১০ হাজার ৩৮৮ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় পেঁয়াজ চাষে জমির পরিমাণ বেশি হলেও পেঁয়াজের ফলন সমপরিমান হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, এ বছর যে সকল কৃষকেরা পেঁয়াজের চারা অগ্রিম রোপন করেছেন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তাদের ফলন কম হয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by